দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস।
সবে তখন ভোরের আলো ফুটেছে। ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন সকলেই। “তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় হঠাত্ই জোর একটা ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলাম বাসটা পাল্টি খেতে খেতে নীচে আছড়ে পড়ল। মুহূর্তেই চারপাশটা ভরে উঠল চিত্কার আর কান্নার আওয়াজে”— আগরার একটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে এমনটাই জানাচ্ছিলেন ঋষি যাদব। সোমবার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী। ঋষি উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকির বাসিন্দা। ঘটনার অভিঘাতটা যে কাটিয়ে উঠতে পারেননি সেটা তাঁর চোখে-মুখেই স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল।
লখনউ থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ১৬১ মাইলস্টোনের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতু থেকে পড়ে যায় যাত্রিবোঝাই ডবল-ডেকার বাস। ৫৩ জন যাত্রী ছিলেন তাতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৯ জনের। আহত হন অনেকে।
ঋষি জানিয়েছেন, বাসটা পড়ামাত্রই তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিল। যাত্রীরা বাসের ভিতরেই এ-ধার ও-ধার ছিটকে পড়ছিলেন। শিশু, মহিলা, পুরুষদের আর্ত চিত্কারে ভেসে যাচ্ছিল। তার পরই সব কেমন যেন শান্ত হয়ে গেল! চোখের সামনে তাঁরই সহযাত্রীদের কয়েক জনকে স্তব্ধ হয়ে যেতে দেখেন ঋষি। এত বড় একটা দুর্ঘটনার পর, তিনি যে বেঁচে আছেন সেটা বিশ্বাস করতেই একটু সময় কেটে গিয়েছিল। সম্বিত্ ফিরতেই দেখেন, তালগোল পাকানো বাসের খোলের ভিতর থেকে বেশ কয়েকজন যাত্রী বেরনোর চেষ্টা করছেন পড়ে থাকা দেহগুলোর উপরে পা দিয়ে। বাইরে কিছু লোকজনের আওয়াজ শুনতে পান। তার পর আর কিছু মনে নেই বলে জানান ঋষি।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে জট কাটেনি, পদত্যাগী ৮ বিধায়কের ইস্তফা বৈধ নয়, রাজ্যপালকে চিঠি স্পিকারের
আরও পড়ুন: কাটমানি কাণ্ডে অভিযুক্ত রেজ্জাকের ছেলে, ভাঙড়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
ঋষির মতো আরও বেশ কয়েক জন যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন এই দুর্ঘটনায়। তাঁরা এখন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। আহতদের মধ্যে দু’জন কোমায় চলে গিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। বাকিদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আগরার এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক বাবলু কুমার।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করেছিল ফ্লাইওভার থেকে পিছলে ৪০ ফুট নীচে নালার মধ্যে পড়ে গিয়েছে বাসটি। কিন্তু পরে দেখা যায়, পিছলে যাওয়ার কোনও চিহ্নই মেলেনি ফ্লাইওভারে। দুর্ঘটনায় যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন, প্রচণ্ড গতিতে ছুটছিল বাসটি, টায়ার ফেটে যেতেই এই দুর্ঘটনা। তবে সরকারি ভাবে এখনও দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট কারণ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy