বৃহস্পতিবার দিনভর গো-হাগের সোহাগে মজে রইল নেটপাড়া। ফাইল চিত্র।
‘গো হাগ ডে’, তথা গোমাতাকে আলিঙ্গনের দিন। প্রেমদিবস বলে পরিচিত ১৪ ফেব্রুয়ারিকেই জাতীয় পশুকল্যাণ বোর্ড সেই গো-প্রেমের জন্য নির্দিষ্ট করেছে। বুধবার সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই টুইটার-ট্রেন্ড, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট থেকে ইনস্টাগ্রাম স্টোরির হাজারো তামাশা— বৃহস্পতিবার দিনভর গো-হাগের সোহাগে মজে রইল নেটপাড়া।
এমনিতেই এখন ভ্যালেন্টাইনস সপ্তাহ চলছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে দিয়ে তার শেষ হওয়ার কথা। তার মাঝে চর্চার এই নতুন খোরাক পেয়ে মেতেছেন নেট-নাগরিকেরা। ‘ভারতীয় সংস্কৃতির মেরুদণ্ড’ গরুকে বলে বিজ্ঞপ্তিতে গরুকে আলিঙ্গনের যুক্তি দেওয়া হলেও তাকে কটাক্ষ করে মন্তব্য পাওয়া গিয়েছে, ‘‘কিন্তু গোমাতার এই আলিঙ্গনে সম্মতি রয়েছে কি না তা কী করে জানা যাবে?’’ আর এক জনের টিপ্পনী, ‘‘অর্থনীতির যা অবস্থা, গোলাপ কেনার থেকে অন্তত গরুকে জড়িয়ে ধরা পকেট বাঁচাতে সহায়ক হবে।’’ প্রবল ছড়িয়েছে প্রেমদিবসে ফের মুক্তি পেতে চলা ‘টাইটানিক’-এর ডেকে গোমাতাকে হাজির করে কোনও শিল্পীর আঁকা কার্টুনও। কারও চিন্তা, ‘‘যদি গুঁতিয়ে দেয়?’’
এমনিকে পশ্চিমি দুনিয়া থেকে অনুপ্রাণিত ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। উগ্র হিন্দুত্ববাদী বহু সংগঠনই বরাবর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের প্রকাশ্যে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা গেলে তা ‘ভারতীয় সংস্কৃতি’র বিরোধী বলে যুগলদের ‘সবক শেখানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ বার গরুকে ঘনিষ্ঠ আলিঙ্গনে আবদ্ধ বলা হলে তারা কী করবে সেই কটাক্ষও ছুড়ে দিয়েছেন অনেকে। একটি ভিডিয়ো ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, যাকে দেখা যাচ্ছে নেতাগোছের এ ব্যক্তি একটি গরুর কাছে গিয়ে প্রণাম করতে চাইছেন এবং গরুটি পিছনের পা দিয়ে লাথি ছুড়ে দিচ্ছে। নেটপাড়ায় তা নিয়ে কটাক্ষ ভাসছে, ‘‘ইচ্ছের বিরুদ্ধে ঘনিষ্ঠ হতে গেলে কিন্তু এমন শাস্তি অপেক্ষা করে আছে।’’
তবে রঙ্গ-তামাশার মধ্যেও প্রাসঙ্গিক উদ্বেগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকে। বিজেপি জমানায় ২০১৫-র মে মাস থেকে ২০১৮-র ডিসেম্বর অবধি গোরক্ষকদের তাণ্ডবের শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। গোরক্ষার নামে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন চল্লিশেরও বেশি ভারতীয়। গো-প্রেমের এই আহ্বান আবার সেই হিংসাকে উস্কে দেবে কি না সেই আশঙ্কাও সমাজমাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন অনেকে। অনেকের প্রশ্ন, একটি বিশেষ ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ কোনও প্রাণীকে কোনও জাতীয় বোর্ড ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এ ভাবে বাড়তি গুরুত্ব দিতে পারে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy