Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ধরা পড়ছে ভুয়ো, কিন্তু সংখ্যাটা কম

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের অভিযোগ এ বারের ভোটে উঠেছে বরাবরই। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছিল প্রচার বন্ধের নির্দেশ চালুর পরেও ইন্টারনেটে প্রচার চালানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে শালীনতার সীমা ছাড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পেয়েছিল কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০৩:৪৩
Share: Save:

ভোট প্রচারের সঙ্গে এ বার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে ছিল সোশ্যাল মিডিয়া। সেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ঘিরে নানা অভিযোগ উঠেছে বারবারই। তা নিয়ে পদক্ষেপও করেছে কমিশন। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় কতটা, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের অভিযোগ এ বারের ভোটে উঠেছে বরাবরই। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছিল প্রচার বন্ধের নির্দেশ চালুর পরেও ইন্টারনেটে প্রচার চালানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে শালীনতার সীমা ছাড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ পেয়েছিল কমিশন। এমন নানা অভিযোগেই এ বারের ভোটে কমিশনের নির্দেশে ৯০০-রও বেশি পোস্ট মুছে দিতে হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারের মতো একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকে।

এ বারে ভোটের আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানো নিয়ে একাধিক বার বিতর্ক বেধেছিল। ভুয়ো খবর ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিলই। গুজবের মাধ্যমে হিংসা ছড়ানোয় গত বছর গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। ভোটের আগে তাই এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাকে সতর্ক করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপ কর্তাদেরও একাধিক বার তলব করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের বাইরের কোনও পক্ষ যাতে টুইটারের মতামতকে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য সংসদীয় কমিটির তরফে টুইটারকে নির্দেশও দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখার জন্য টুইটার নোডাল অফিসার নিয়োগেও সম্মত হয়েছিল। ফেসবুক দাবি করেছিল, খবরের সত্যতা যাচাই করতে ইংরাজি, হিন্দি ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তারা গাঁটছড়া বেঁধেছে। যদি তথ্য যাচাইয়ের পরে যদি কোনও ভুয়ো খবর খুঁজে পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ওই সূত্র থেকে আসা খবরের প্রকাশ ৮০% কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছে তারা। তবে তার পরেও সাত দফার ভোট চলাকালীন বারবারই ভুয়ো ছবি ও তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে।

ভোটের শেষে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নানা অভিযোগে মোট ৯০৯টি পোস্ট মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক সংস্থাকে। নির্বাচন কমিশনের ডিরেক্টর জেনারেল (কমিউনিকেশনস) জানিয়েছেন, ফেসবুক একাই ৬৫০টি পোস্ট তুলে নিয়েছে। এই ৬৫০টি পোস্টের মধ্যে ৪৮২টি প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। টুইটার তুলেছে ২২০টি। শেয়ারচ্যাট, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপ যথাক্রমে ৩১, ৫ ও ৩টি করে পোস্ট তুলে নিয়েছে।

প্রচারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও প্রচার করার অভিযোগ যেমন ছিল, তেমনই ছিল ভোটের প্রচারে শালীনতার সীমা ছাড়ানোর অভিযোগ। তেমন অভিযোগে ২৮টি অভিযোগ তুলে নিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে ১১টি পোস্ট তুলে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৪৩টি পোস্ট।

ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, অভিযোগ পেয়ে যে সংখ্যক পোস্ট সরানো হয়েছে তা নেহাতই কম। বিশাল দেশে বিপুল সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে এমন পোস্ট চিহ্নিত করাই দুরূহ। ‘‘কোনও পোস্ট যে আপত্তিকর বা বিপজ্জনক, সেই খবর সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির কাছে বা সরকারের কাছে পৌঁছনোর আগেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। অনেক পোস্টের খবর হয়তো পৌঁছয়ই না,’’ মত ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞ প্রতীক সিন্‌হার।

যে সংখ্যায় অভিযোগ উঠেছে, তার তুলনায় মুছে ফেলা পোস্টের সংখ্যা যে অনেকটাই কম তা মানছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশনের শিক্ষিকা গাজালা ইয়াসমিন। ভুয়ো খবর নিয়ে সচেতনতায় দেশে একাধিক কর্মশালা করিয়েছেন গাজালা। তাঁর মতে, ‘‘কী ভাবে ভুয়ো খবরকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে কমিশনের বিধি এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। ইন্টারনেটে নজরদারির পরিকাঠামোও পুরোপুরি নেই। এ সব নিয়েই কাজ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

fake news
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy