বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ‘রেল পরিচালনার সাফল্য’কে প্রচারের অন্যতম অঙ্গ হিসাবে তুলে ধরতে চায় কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে নানা আঙ্গিকে বন্দে ভারত ট্রেন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। রাজধানী এবং দুরন্তের মতো প্রথম সারির ট্রেনের বিকল্প হিসেবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের স্লিপার সংস্করণ আগামী মার্চের মধ্যে আনতে মরিয়া রেল। কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেক যারা তৈরি করেছে, বেঙ্গালুরুর সেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল) সেটি বানাবে।
এর আগে বরাত প্রক্রিয়ায় রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) এবং রুশ সংস্থা ‘ট্রান্সমাস হোল্ডিং’-য়ের যৌথ সংস্থা সবচেয়ে কম দর দিয়ে বরাত প্রক্রিয়া জিতে নিলেও নতুন সংস্থায় ওই দুই সংস্থার অংশীদারি নিয়ে বিরোধ বাধে। ওই বিরোধের জেরে নতুন ট্রেনের নকশা এবং পরিকল্পনার কাজ অনেকটাই পিছিয়ে যায়। বাধ্য হয়েই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের স্লিপার সংস্করণ তৈরির কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে অন্য সংস্থার সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রেলবোর্ড।
সেই মতো বেঙ্গালুরুর বিইএমএল ও এ রাজ্যের বেসরকারি সংস্থা টিটাগড় ওয়াগনস-কে পৃথক ভাবে ওই ট্রেন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে আরভিএনএল এবং রুশ সংস্থার বিবাদও সরকারি হস্তক্ষেপে মিটে গিয়েছে। কাজে হাত দিয়েছে তারাও। তবে, তিন সংস্থার পৃথক প্রয়াসের মধ্যে দেশের প্রথম বাতানুকূল স্লিপার বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বেঙ্গালুরুর বিইএমএল-এই তৈরি হচ্ছে।
চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিইএমএল প্রথম পর্বে বন্দে ভারতের জন্য ১০টি বাতানুকূল স্লিপার তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার সিএমডি শান্তনু রায়। নতুন ট্রেনের মোটর এবং ট্রেন চালানোর গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে হায়দরাবাদের মেধা সংস্থা।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধুনিক রেক বিইএমএলের তৈরি। ২০১০ সাল থেকে তারা আন্তর্জাতিক মানের রেক তৈরির কাজে নিযুক্ত। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই নতুন ট্রেনের রেক তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার সিএমডি। অন্দরসজ্জা, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং ট্রেন চালানোর প্রযুক্তির দিক থেকে ১৬ কোচের ওই ট্রেন অভিনব হবে বলে জানিয়েছেন শান্তনু। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম স্লিপার তৈরি করার সুযোগ অর্জন করা আমাদের কাছে গর্বের এবং মর্যাদার।’’
নতুন ট্রেনে এসি টু-টিয়ার এবং থ্রি-টিয়ারে উপরের বার্থে ওঠার ক্ষেত্রে বয়স্ক যাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে দিকে বিশেষ লক্ষ রাখা হচ্ছে। কামরার ভিতরে বিভিন্ন উপকরণ থেকে যাত্রীদের যাতে আঘাত না লাগে, সে দিকেও বিশেষ ভাবে লক্ষ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়াও আধুনিক রিডিং লাইট, একাধিক চার্জিং পয়েন্ট, উন্নত শৌচাগার-সহ একাধিক সুবিধা ওই ট্রেনে থাকবে।
আগামী মার্চের মধ্যে প্রথম ট্রেনের নমুনা রেক (প্রোটোটাইপ) মহড়া এবং যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তৈরি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন শান্তনু। কেন্দ্র ২০৩০ সালের মধ্যে বন্দে ভারতের জন্য ৮০০ স্লিপার এক্সপ্রেস তৈরি করতে চায় বলে সূত্রের খবর। বেঙ্গালুরুর ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সূত্রে খবর, ভারতে আন্তর্জাতিক মানের ‘ট্রেনসেট’ (১৬ কামরার স্বয়ংসম্পূর্ণ ট্রেন) তৈরির ক্ষেত্রে পা রাখছে তারা। নতুন ট্রেনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের একাধিক বৈশিষ্ট্য ছাড়াও দ্রুত গতি-বাড়ানো এবং কমানোর প্রযুক্তি থাকবে। এর ফলে ট্রেনের গড় গতিবেগ অনেকটাই উন্নত হবে। গুরুত্বপূর্ণ পথে যাতায়াতের সময় অনেকটা কমে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy