উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের বার করে আনার মোট ছ’টি উপায় রয়েছে। ছ’রকম ভাবেই শ্রমিকদের সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনা যায়। সব রকম উপায় যাচাই করে দেখা হয়েছে। একটি ব্যর্থ হলে অন্যটি কাজে লাগাবেন উদ্ধারকারীরা।
গত ১২ নভেম্বর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে ধস নেমে ৬০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে এখনও সাফল্য মেলেনি। দু’সপ্তাহ ধরে বদ্ধ সুড়ঙ্গে আটকে আছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার, জল এবং অক্সিজেন।
সুড়ঙ্গ খুঁড়ে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করার কী কী উপায় রয়েছে?
সুড়ঙ্গে ঢোকার জন্য প্রথমে সামনে থেকে খোঁড়া শুরু হয়েছিল। আমেরিকান অগার যন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে এগোচ্ছিলেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু প্রায় ৪৭ মিটার খোঁড়া হয়ে যাওয়ার পর গত শুক্রবার সেই কাজ ব্যাহত হয়। আমেরিকান যন্ত্রটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে লোহার কাঠামোয় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায়। সেটিকে বার করে আনার চেষ্টা চলছে এখনও। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে আর খোঁড়াখুঁড়ি সম্ভব নয়। তাই বিকল্প পথ অবলম্বন করতে হয়েছে।
রবিবার উদ্ধারকারীরা উপর দিক থেকে উল্লম্ব ভাবে খোঁড়া শুরু করেছেন। পাহাড়ের উপর থেকে খুঁড়ে সুড়ঙ্গ পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উল্লম্ব ভাবে সুড়ঙ্গ পৌঁছতে ৮৭ মিটার খুঁড়তে হবে। প্রথম দিকে প্রায় ২০ মিটার খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে উল্লম্ব ভাবে খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
উল্লম্ব ভাবেও যদি সুড়ঙ্গে পৌঁছনো না যায়, তবে তৃতীয় বিকল্প ‘ড্রিফ্ট টেকনোলজি’। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে পাথর কেটে কেটে প্রয়োজন অনুযায়ী মাপে ছোট সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়। খনিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
অনুভূমিক এবং উল্লম্ব ভাবে খোঁড়ার পাশাপাশি পাশ থেকে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ১৭০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র রবিবার রাতের মধ্যেই উদ্ধারস্থলে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। যন্ত্রপাতি এলে ওই খোঁড়ার কাজ শুরু হবে।
সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের অপর প্রান্ত রয়েছে বারকোট এলাকায়। সেখান থেকেও সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বিস্ফোরণের কৌশল। অর্থাৎ, পাহাড়ের গায়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। দিনে তিন বার বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। ইতিমধ্যে পাঁচ বার বিস্ফোরণ করা হয়েও গিয়েছে। এগোনো গিয়েছে ১০-১২ মিটার। এ ক্ষেত্রে মোট ৪৮৩ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করা প্রয়োজন।
উদ্ধারের আরও একটি পরিকল্পনা ভেবে রেখেছেন উদ্ধারকারীরা। বারকোট প্রান্ত থেকে উল্লম্ব ভাবে মাটি খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হতে পারে। সেখান থেকে ২৪ মিটার খুঁড়তে হবে। তবে তার জন্য আগে প্রয়োজন পাঁচ কিলোমিটারের একটি রাস্তা। তা তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
এই ছ’টি উপায়ের মধ্যে প্রথমটিকেই সবচেয়ে সহজ এবং সেরা বলে মনে করছেন উদ্ধারকারীরা। কারণ, সামনে থেকে আনুভূমিক ভাবে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার কাজ ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়েছে। বাকি আছে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিটার। ওই পথটুকু শ্রমিকেরা যদি শাবল-গাঁইতি দিয়ে খুঁড়ে ফেলতে পারেন, তবে আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাই সে দিকেই এখন নজর রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy