সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র ।
সুপ্রিম কোর্ট আজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সি ভি আনন্দ বোসকে জানিয়ে দিল, রাজ্যের দেওয়া তালিকা থেকেই তাঁকে ছ’জন যোগ্য ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্যকে যুযুধান নবান্ন এবং রাজভবন দু’ভাবে ব্যাখ্যা করেছে।
আজ রাতেই শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বোস বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি। এই নির্দেশ আমি কার্যকর করব।’’
আজ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যপালের হয়ে কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণি জানান, রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই ছ’টি নামে অনুমোদন দিয়েছেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বলেছে, “এই ছ’জনকে অবিলম্বে নিয়োগ করা হোক।” এক
সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রাজ্য সরকারের অধীন ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে রাজ্যপালের কাছে বাছাই করা কিছু নামের তালিকা পাঠাতে বলেছে। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজভবন বনাম নবান্নের বিবাদ চলছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা আশাপ্রকাশ করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দেওয়া নতুন তালিকা থেকে রাজ্যপাল আরও কয়েকজনকে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন। যে সব বিশ্ববিদ্যালয় বাকি থাকবে, সেগুলির জন্য সুপ্রিম কোর্ট একটি সার্চ কমিটি গড়তে পারে। এই মামলার অন্যতম আইনজীবী জয়দীপ মজুমদার জানান, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ এপ্রিল।
সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের দেওয়া তালিকা থেকে ছ’জন উপাচার্য নিয়োগের কথা বললেও
রাজভবন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্ট ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে যে রাজ্য নয়, আচার্যই উপাচার্যদের নিয়োগ কর্তা। সুপ্রিম কোর্ট আজ অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছে, যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদ খালি রয়েছে, সেখানে আচার্য সি ভি আনন্দ বোস অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন’।
গত সপ্তাহেই আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আইনের বাইরে গিয়ে, একক ভাবে রাজ্যের চার বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ তুলেছিল রাজ্য সরকার। আজ রাজভবনের বিবৃতি, ‘রাজ্য সরকার ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের জন্য ৩১ জনের নাম দিয়েছিল। রাজ্যপাল তার মধ্যে থেকে উপাচার্যের পদ খালি থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য চার জনের নাম বেছে নেন। সুপ্রিম কোর্ট তাতে সিলমোহর দিয়েছে। ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্য সরকার নয়, আচার্যই নিয়োগকর্তা’।
রাজ্যের তরফে এক বিবৃতি উল্লেখ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আচার্যের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারে মামলা করার জন্যই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শীর্ষ আদালত তাতে গুরুত্ব না দিয়ে জানিয়েছে, আচার্য রাজ্যের বক্তব্যগুলির জবাব দিক। সুপ্রিম কোর্টের আজকের নির্দেশ নিয়ে আচার্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এক্স হ্যান্ডলে তাঁর পোস্ট, ‘ছয় দিয়ে শুরু! নিশ্চয়ই ৩১-এ শেষ হবে। আশা করি মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট রাজভবনের মনে সদিচ্ছা জাগাতে পারবে’।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন বনাম নবান্নের বিবাদ মেটাতে সুপ্রিম কোর্ট এর আগে ‘সার্চ ও সিলেকশন’ কমিটি গঠনের জন্য রাজ্য সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে নাম চেয়েছিল। আজ অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই রাজ্যের তালিকা থেকে ছ’জনের নামে অনুমোদন দিয়েছেন। রাজ্যের তরফে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অভিযোগ তোলেন, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রেখেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল তার প্রতিবাদ জানান। রাজ্য সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ করার জন্য বিল পাশ করেছিল। তাতে বিজেপির অভিযোগ ছিল, শাসক দল উপাচার্য নিয়োগে নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চাইছে। আজ অ্যাটর্নি জেনারেল বেঙ্কটরমণি বলেন, এই বিষয়টি স্পষ্ট। ফলে বেশি বলার প্রয়োজন নেই। বেঙ্কটরমণি এর আগে জটিলতা কাটাতে কলকাতায় গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রয়োজনে তিনি ফের কলকাতা যাবেন বলেও আজ বেঙ্কটরমণি জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy