রাস্তায় ফেলে এ ভাবেই মারা হয়েছিল পেহলু খানকে। —ফাইল চিত্র।
পেহলু খান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছ’জনকেই বেকসুর খালাস করল রাজস্থানের একটি জেলা আদালত। ২০১৭-র ১ এপ্রিল পশুমেলা থেকে গরু কিনে ফেরার পথে অলওয়ারে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের হাতে আক্রান্ত হন পঞ্চাশোর্ধ্ব পেহলু খানু। দু’দিন পর হাসপাতালে মারা যান তিনি। গত দু’বছর ধরে সেই মামলার শুনানি চলছিল অলওয়ার জেলা আদালতে। প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত ছ’জনকে বুধবার মুক্তি দেন অতিরিক্ত জেলা বিচারক সরিতা স্বামী।
আদালতের এই সিদ্ধান্তে নিরাশ পেহলু খানের পরিবার। ন্যায় বিচারের দাবিতে এত দিন লাগাতার আদালতে ধর্না দিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে এ বার উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী কাসিম খান।
তবে আদালতের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী হুকুমচাঁদ শর্মা। তাঁর মক্কেলরা নিরীহ এবং মিথ্যা অভিযোগে তাদের ফাঁসানো হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। হুকুমচাঁদের দাবি, পেহলু খানের প্রথম বয়ানে অভিযুক্তদের মধ্যে কারও নাম উল্লেখ ছিল না। পেহলু খানের মৃত্যুর আসল কারণ নিয়েও ধন্দ ছিল। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পেহলু খানের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শারীরিক নিগ্রহের কথা উঠে আসে। এই অসঙ্গতি চোখ এড়ায়নি আদালতের।
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে তুমুল নাটক, বেঁকে বসলেন শোভন, আটকে গেল দেবশ্রীর যোগদান
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূলকে আক্রমণ, পঞ্চায়েতের সময়েই ‘ভোট লুঠের’ প্রতিবাদ করেছিলাম, বললেন শোভন
কিন্তু দু’বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে, তাতে পেহলু খানকে বেধড়ক মারধর করতে দেখা যায় একদল দুষ্কৃতীকে। প্রথমে ঘাড় ধরে টেনে আনা হয় তাঁকে। তার পর মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি লাথি, ঘুষি মারতে শুরু করে তারা। এমনকি একটি সংবাদমাধ্যমের স্টিং অপারেশনে অপরাধ কবুল করতেও দেখা যায় অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে। সব কিছু খতিয়ে দেখে তিন নাবালক-সহ মোট ন’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন নাবালকও ছিল। জুভেনাইল আদালতে তাদের বিচার চলছে।
কিন্তু হুকুমচাঁদের দাবি, যে ব্যক্তি নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছিলেন, তিনি আদালতে হাজিরা দেননি। ঝাপসা ভিডিয়োয় অভিযুক্তদের ঠিক মতো শনাক্তও করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তাঁর এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। #নোওয়ানকিলডপেহলুখান লিখে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে সরব হয়েছেন নেটিজেনরাও।
দু’বছর আগে পেহলু খান হত্যার সময় রাজস্থানে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। কিন্তু গত বছর সেখানে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। গণপিটুনির ঘটনা রুখতে দিন দশেক আগেই রাজস্থান বিধানসভায় নয়া বিল পাশ করিয়েছে তারা। তাতে গণপিটুনির ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন সাজার কথা বলা হয়েছে। জরিমানা ধার্য হয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তাই পেহলু খান হত্যা মামলায় অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে কংগ্রেসকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy