Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Shri Krishna Janmabhoomi

এ বার আদালতে শ্রীকৃষ্ণও

শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের হয়ে মামলা করেছেন রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী ও ছ’জন ভক্ত।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৮
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে মহাসমারোহে রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার জন্মভূমির অধিকার চেয়ে আদালতে ‘শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান’।

আশির দশকের শেষে রামমন্দির আন্দোলনের সময় বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবার স্লোগান দিয়েছিল, ‘অযোধ্যা তো সির্ফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়।’। ১৯৯২-এ বাবরি মসজিদ ভাঙার পরেও সেই স্লোগান ওঠে। সেই সূত্র মেনেই আজ মথুরার আদালতে ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান’-এর নামে মামলা হয়েছে। দাবি, মথুরায় ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি’-র ১৩.৩৭ একরের অধিকার এবং শাহি ইদগাহ মসজিদ সরানো।

শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের হয়ে মামলা করেছেন রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী ও ছ’জন ভক্ত। তাঁদের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন ও বিষ্ণু জৈনদের বক্তব্য, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সম্মতিতে ইদগাহ-র পরিচালন কমিটি বেআইনি ভাবে মসজিদের কাঠামো খাড়া করেছে। মথুরার কাটরা কেশব দেবের ওই জমি আসলে শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের। এখন মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের পাশেই শাহি ইদগাহ মসজিদ অবস্থিত।

রাজনৈতিক ও আইনজীবী মহলে প্রশ্ন, বিজেপি, সঙ্ঘপরিবার, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কি এ বার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি আন্দোলনে নামবে? সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির নির্দেশ দেওয়ার পরে কি মথুরা থেকে ইদগাহ সরানোর দাবি জোরালো হল?

আইনজীবীরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনের বাধা রয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী, কোনও মন্দির-মসজিদ বা গির্জার চরিত্র বদলানো যাবে না। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার সময় যেখানে যা ছিল, তেমনটাই রেখে দিতে হবে। কোনও আদালত এই বিষয়ে আর্জি শুনতেও পারবে না। ওই আইন আসার আগেই অযোধ্যার মামলা দায়ের হয়ে যাওয়ায় সেখানে এই শর্ত খাটেনি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও তার রায়ে এই আইনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ হল, মথুরার আদালতের শনিবারের মামলা দায়ের হওয়ার অনেক আগেই সুপ্রিম কোর্টে ১৯৯১-এর ওই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলাটি মথুরা নিয়ে শনিবারের মামলার আইনজীবী বিষ্ণু জৈনের মাধ্যমেই দায়ের হয়েছে।

মথুরা আদালতে জমা হওয়া আর্জিতে ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ১৬৬৯-৭০-এ মথুরায় কাটরা কেশব দেবে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিতে তাঁর মন্দির ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন ঔরঙ্গজেব। একশো বছর পরে মরাঠারা যুদ্ধে জিতে আগরা-মথুরার দখল নিলে মন্দির ফের তৈরি হয়। ব্রিটিশ জমানায় ওই জমি বারাণসীর রাজা পাটনিমল নিলামে কিনে নেন। পরে তা পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য ও অন্যদের হাতে যায়। সেই জমি কেনার জন্য ১৩,৪০০ টাকা দিয়েছিলেন যুগলকিশোর বিড়লা। তাঁরা একটি ট্রাস্ট তৈরি করে মন্দির তৈরির ঘোষণা করেন। কিন্তু ১৯৬৮-তে শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান সেবা সঙ্ঘের সঙ্গে শাহি মসজিদ ইদগাহ পরিচালন কমিটির বোঝাপড়া হয়। সেবা সঙ্ঘ মসজিদ কমিটির কিছু দাবি মেনে নেয়। মামলাকারীদের দাবি, ওই বোঝাপড়া বেআইনি ছিল। শ্রীকৃষ্ণের জমিতে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বা মসজিদ কমিটির অধিকার থাকতে পারে না।

অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিবাদেও মূল মামলাকারী ছিলেন রামলালা বিরাজমান। হিন্দু দেবতাদের ‘জুরিস্টিক পার্সন’ বা আইনের চোখে ব্যক্তি হয়ে ওঠার সূত্রপাত ব্রিটিশ জমানায়, ‘ইংলিশ কমন ল’ থেকে। আইনের চোখে ব্যক্তি হিসেবে দেবতার সব আইনি অধিকার রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তিনিও মামলা করতে পারেন। তবে তাঁর সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার নেই। শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমানের আইনজীবীরাও সেই যুক্তি দিয়ে বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান বালক। তাঁর সেবায়েতদের মাধ্যমে বা সেবায়েতদের অনুপস্থিতিতে প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজের সম্পত্তি রক্ষা ও উদ্ধার করার অধিকার রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Shri Krishna Janmabhoomi Mathura Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy