ডেটিং অ্যাপে প্রেমিক আফতাবের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল মহারাষ্ট্রের তরুণী শ্রদ্ধা ওয়াকারের। গ্রাফিক- সনৎ সিংহ।
ভালবাসার মানুষকে খুঁজে পেতে ডেটিং অ্যাপের উপর আস্থা রাখা কি ঝুঁকিপূর্ণ? মহারাষ্ট্রের পালঘরের তরুণী শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর এই প্রশ্নই আবার উঠেছে। ইদানীং প্রযুক্তি নির্ভর দুনিয়ায় মুঠোফোনের কয়েকটি ক্লিকেই বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে পছন্দের মানুষের সঙ্গে মন দেওয়া-নেওয়ার রাস্তা অনেকটাই সহজ হয়েছে। তবে ডেটিং অ্যাপে অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কয়েক দিনের আলাপে বন্ধুত্ব পাতানো যে যথেষ্ট ঝুঁকির, তা শ্রদ্ধাকে খুনের ঘটনায় আরও এক বার প্রমাণিত হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের পালঘরের তরুণী শ্রদ্ধার সঙ্গে একটি ডেটিং অ্যাপে আলাপ হয়েছিল আফতাব পুনাওয়ালার। কিছু দিনের মধ্যেই সেই আলাপ প্রেমে গড়ায়। সেই প্রেমের পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর। শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছেন আফতাব। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শ্রদ্ধার মতো ডেটিং অ্যাপে প্রেমের সম্পর্কের এমন নৃশংস পরিণতি অতীতেও ঘটেছে।
ডেটিং অ্যাপে দীনেশ দীক্ষিত নামে এক যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন বায়ুসেনার প্রাক্তন এক উইং কমান্ডারের স্ত্রী মিনু জৈন। প্রায় ছয় মাস ধরে হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের প্রেমালাপ চলেছিল। তার পর যখন প্রথম দেখা করেন, তখন মিনুর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার গয়না হাতান ওই যুবক। ওই মহিলাকে খুন করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, আইপিএল ম্যাচ নিয়ে জুয়া খেলেছিলেন ওই যুবক। যার জেরে ওই যুবকের প্রচুর ঋণ হয়ে গিয়েছিল।
ডেটিং অ্যাপে প্রেমের জের মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছেছিল জয়পুরের এক যুবকের ক্ষেত্রে। দুষ্যন্ত শর্মা নামে ২৭ বছরে এক যুবকের সঙ্গে একটি ডেটিং অ্যাপে আলাপ হয়েছিল প্রিয়া শেঠ নামে এক তরুণীর। ওই যুবক নিজেকে একটি সংস্থার চেয়ারম্যান হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ২ মে ওই যুবককে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকেছিলেন তরুণী। সেখানে যুবককে মাদক খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ তরুণী ও তাঁর দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে। এর পরই তাঁর থেকে টাকা চান তরুণী। সে সময় ওই যুবক জানান যে, তিনি বিত্তবান নন। তরুণীকে এ-ও জানান যে, তাঁর দু’বছরের সন্তান রয়েছে। এ কথা জানার পর রাগে ওই যুবককে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন তরুণী ও তাঁর দুই বন্ধু। পরে যুবকের ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে স্যুটকেস কেনেন তাঁরা। সেই স্যুটকেসে যুবকের দেহাংশ ভরে দিল্লি-জয়পুর এক্সপ্রেসওয়েতে ফেলে দেন অভিযুক্তরা। অনলাইনে সুন্দরী মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটানোর ফাঁদে পা দিয়ে ১২.৫৫ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ৪১ বছর বয়সি এক ব্যাঙ্কের আধিকারিক। অনলাইনে একটি ওয়েবসাইটে লিঙ্কে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এর জেরেই টাকা খোয়ান তিনি।
বস্তুত, শ্রদ্ধা ও আফতাবের আলাপও হয়েছিল একটি ডেটিং সাইটের মাধ্যমে। পরে সেই আলাপ প্রেমে গড়ায়। শ্রদ্ধার পাশাপাশি ডেটিং অ্যাপে আরও অনেক মহিলার সঙ্গে আফতাব চ্যাট করতেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর ডেটিং অ্যাপে এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আফতাবের। সেই মহিলা আফতাবের বাড়িতেও গিয়েছিলেন। ওই সময় শ্রদ্ধার দেহাংশ ফ্রিজের মধ্যে লুকোনো ছিল। ডেটিং অ্যাপে যে সব মহিলার সঙ্গে আফতাব চ্যাট করতেন, তাঁদের নাগাল পেলে শ্রদ্ধাকে খুনের ব্যাপারে আরও তথ্য জানা যেতে পারে বলে মনে করছে দিল্লি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy