প্রতীকী ছবি।
ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক সংঘাতের জেরে কাঁপুনি ধরছে ভারতের অর্থনীতিতেও। গত ক’দিন ধরে উদ্বেগের আঁচে এক নাগাড়ে পড়ছে শেয়ার বাজার। আর তার পাশাপাশি বেড়ে চলেছে সোনার দাম। গত মঙ্গলবারই কলকাতায় পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) ১০ গ্রাম প্রতি দর পৌঁছে যায় ৫১ হাজার ১৫০ টাকায়। এর সঙ্গে জিএসটি যোগ করলে ধরে দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার টাকা। বুধবার সামান্য নেমেছিল দর। কিন্তু বৃহস্পতিবার ইউক্রেন জুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হতেই সোনার বাজারে যুদ্ধ-প্রভাব। সকালে বাজার খুলতেই দেখা যায়, এমসিএক্স (মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ)-এ ১০ গ্রাম প্রতি দাম প্রায় ১ হাজার ৪০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক বছরে এক দিনে এতটা দাম আগে বাড়েনি। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় ১০ গ্রাম পাকা সোনার দর দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ১১০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি যে দর ছিল ৪৯ হাজার ৯৭০ টাকা।
শুধু ভারতের বাজারেই নয়, হলুদ ধাতুর দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে। আর তার জেরে সোনা আরও দামী ভারতে। বাজার বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ইউক্রেনে সংঘাতের পরিবেশ যত দিন বজায় থাকবে, তত দিন সোনার দাম বাড়তেই থাকবে। অন্য দিকে, পড়বে শেয়ার বাজার।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের উত্তেজনা তৈরি হওয়ার প্রভাবে কয়েক দিন আগে থেকেই শেয়ার বাজারকে নড়বড়ে করেছে। লগ্নি নিয়ে সন্ত্রস্ত করেছে বিনিয়োগকারীদের। ফলে ফের চাহিদা বেড়েছে সুরক্ষিত লগ্নি সোনার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনও অশান্তির পরিবেশ তৈরি হলেই শেয়ারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ লগ্নি থেকে সরে আসেন বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ। ফলে বাজারে পতন হয়। আর সেই সময়ে তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষিত লগ্নি সোনায় বিনিয়োগ প্রবণতা বাড়তে থাকে। বিশ্বের সর্বত্রই পুঁজি ঢালার জন্য সোনাকে আঁকড়ে ধরেন বিনিয়োগকারীরা। এখন অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও সেই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনে যুদ্ধের আবহে ভারতে শেয়ার বাজারে ক্ষুদ্র এবং সাধারণ লগ্নিকারীদের বড় মাপের লোকসান গুনতে হচ্ছে। একই ভাবে সোনার দাম বাড়ায় ভুগতে শুরু করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে বিনিয়োগকারীরা তুলনায় লাভ বেশি পাচ্ছেন। অনেক বেশি বিনিয়োগকারী সোনায় ভরসা করায় চাহিদার তুলনায় জোগান কম। আর তার প্রভাবে বাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও সাধারণ ক্রেতাদের এখন বেশি টাকা গুনতে হবে সোনায়। ব্যবসা হারানোর আশঙ্কা তৈরি হতে পারে ছোট-মাঝারি গয়নার দোকানগুলির।
শুধু সোনা নয়, জ্বালানি তেলের বাজারেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে ইউক্রেন পরিস্থিতি। তেল উৎপাদনে রাশিয়া তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাই বহু দেশই জড়িয়ে যেতে পারে। কারণ, উৎপাদন ধাক্কা খেলে তেলের জোগান তলানি ছোঁবে। তখন দামও চড়তে থাকবে। ভারত-সহ আমদানি নির্ভর দেশ সমস্যায় পড়তে পারে। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও চাপে পড়তে পারে। এর ফলে সার্বিক ভাবে বিশ্বের অনেক দেশের মতো ভারতীয় অর্থনীতিতেও এই যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রভাব প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy