ফাইল চিত্র।
এককালে হাজার হাজার একর জমি ছিল। হাভেলি ছিল। এখন সেই জমি নেই, আয় কমে যাওয়ায় হাভেলি মেরামত করারও সঙ্গতি নেই। তবু জমিদার সকালে ঘুম থেকে উঠে বলেন, আশেপাশের সব জমির তিনিই মালিক! বাস্তব হল, ওই সব জমির মালিকানা এক কালে তাঁর হাতে থাকলেও এখন আর তা নেই। কংগ্রেসের অবস্থা এখন উত্তরপ্রদেশের এই সব জমিদারদের মতো।
এ ভাবেই আজ কংগ্রেসকে কটাক্ষ করলেন শরদ পওয়ার।
মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে এ বার শরদ পওয়ারের কংগ্রেসকে নিয়ে এ হেন তির্যক মন্তব্য ফের বিজেপি-বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। বিরোধী জোটের প্রস্তুতি নিতেই সনিয়া গাঁধী সম্প্রতি বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বৈঠক ডেকেছিলেন। তার আগে সংসদের অধিবেশনের সময় রাহুল গাঁধীও বিরোধী জোটের মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন।
তৃণমূল নেতৃত্ব এত দিন বিভিন্ন ভাবে কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁদের ‘অ্যালার্জি’ বুঝিয়ে দিয়েছেন। আজ বিরোধী জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে পওয়ার বলেছেন, এক সময় কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত কংগ্রেসের উপস্থিতি ছিল। কিন্তু এখন আর নেই। এই বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে। কংগ্রেস নিজের মনোভাব বদলাতে পারলেই অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মজবুত হবে। পওয়ার বলেন, ‘‘নেতৃত্বের প্রশ্নে আমার কংগ্রেসের বন্ধুরা অন্য রকম দৃষ্টিভঙ্গি নিতে পারছেন না।’’
সনিয়া গাঁধীর ডাকা বৈঠকে মমতা, পওয়াররা উপস্থিত ছিলেন ঠিকই, কিন্তু বিরোধী জোটের নেতৃত্বের প্রশ্নে কেউই কংগ্রেসকে এক চুল জমি ছাড়তে রাজি হননি। উল্টে দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি সিবিআই-ইডির ভয় দেখিয়ে কংগ্রেসকে জব্দ করে ফেলেছে। তদন্তের ভয়ে কংগ্রেস ঘরে ঢুকে পড়েছে। রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছিল, তৃণমূল কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে? আজ পওয়ার কংগ্রেসকে আক্রমণ করায় প্রশ্ন উঠেছে, তিনি নিজেই কি বিরোধী জোটের নেতা চাইছেন? পওয়ারের দাবি, তিনি শুধু বিজেপি বিরোধী জোটের মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করবেন।
তা হলে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে? কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, বিরোধী শিবিরে যে দল ১২০-১৩০টি আসন পাবে, তারাই নেতৃত্ব দেবে। এক মাত্র কংগ্রেসই এত আসন পেতে পারে। আজ পওয়ার পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, কংগ্রেসের গোটা দেশে উপস্থিতি রয়েছে ঠিকই। কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতাও রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস লোকসভায় ১৫০টি আসন পেত বলেই ইউপিএ তৈরি হয়েছিল। এখন কংগ্রেস ৪০-৫০টি আসনে এসে আটকে গিয়েছে।
সম্প্রতি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে পওয়ারের একাধিক বার বৈঠক হয়। প্রশ্ন উঠেছিল, পওয়ার কি আগামী বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেকে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার জন্য প্রশান্ত কিশোরের সাহায্য নিতে চলেছেন? পওয়ারের দাবি, তাঁর প্রশান্ত কিশোরকে প্রয়োজন নেই। সরকারি পদের কোনও উচ্চাকাঙ্খাও নেই। কিন্তু তিনি যে ভাবে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে, পওয়ার কি সমবায় ক্ষেত্রে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহকে হাতে রাখতে চাইছেন? না কি তাঁর ও তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি-র তদন্তের চাপে বিরোধী জোটে সমস্যা তৈরি করছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই ভবানীপুরে বলেছিলেন, বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থার ভয় দেখিয়ে কংগ্রেসের পাশাপাশি পওয়ার, মুলায়ম সিংহকেও জব্দ করে ফেলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy