সাক্ষাৎ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে শরদ পওয়ার। শনিবার। ছবি পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রের নতুন গড়া সমবায় মন্ত্রক নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে এলেন শরদ পওয়ার। দু’জনে বৈঠক হয় ৫০ মিনিট। সূত্রের খবর, মোদীকে তিনি জানিয়েছেন, সংবিধান অনুযায়ী সমবায় বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। কেন্দ্র একই বিষয়ে মন্ত্রক গড়ার ফলে আইনি সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি হল। কেন্দ্রের ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট সংশোধন নিয়েও পওয়ার তাঁর সংশয় ও আপত্তির কথা জানিয়েছেন মোদীকে। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের অতি-উৎসাহে আইন পাল্টাতে গিয়ে সংবিধানে বলা সমবায়-সমিতি সংক্রান্ত নীতিসমূহকে বলি না-দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পওয়ার। রাজ্য সমবায় সমিতি আইন ও সমবায় নীতি নিয়ে সংবিধানের ৯৭তম সংশোধনের সঙ্গে সংশোধিত ব্যাঙ্কিং আইনের আইনি অসঙ্গতির কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন তিনি।
মোদী নতুন গড়া মন্ত্রকটির দায়িত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে। মন্ত্রকের নামে একটু ফারাক অবশ্য রাখা হয়েছে। সমবায় নয়, বলা হচ্ছে এটি সমন্বয় মন্ত্রক, মিনিস্ট্রি অব কো-অপারেশন। যার স্লোগান হল ‘সমন্বয় থেকে সমৃদ্ধি’। কিন্তু বিরোধীরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন, মোদী সরকার আসলে এই মন্ত্রকের মাধ্যমে, রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত সমবায় সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলির উপরে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী তথা এনসিপি সভাপতি পওয়ার আজ এই মন্ত্রক নিয়ে তার আশঙ্কার দিকগুলি ও কৃষকদের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সেই বৈঠকের ছবি প্রকাশ করে বলা হয়, রাজ্যসভার সদস্য শরদ পওয়ার আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
সাক্ষাতে বলার পাশাপাশি, কেন্দ্রের সমবায় মন্ত্রক সম্পর্কে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আজ একটি চিঠিও লিখেছেন পওয়ার। তাতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, সমবায় রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। কেন্দ্র তাতে কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ করলে, সেটা হবে সংবিধান লঙ্ঘন।
মোদী মন্ত্রিসভার রদবদলের ঠিক আগে কেন্দ্র ওই নতুন মন্ত্রক গঠন করলে, তখনও আপত্তি জানিয়েছিলেন পওয়ার। বলেছিলেন, “মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সমবায় নিয়ে আইন পাশ করাতে বিল তৈরি হয়েছে। সেই বিলের খসড়ায় কোনও রকম হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই কেন্দ্রের।”
মোদীর সঙ্গে পওয়ারের বৈঠকের মুখেই সম্প্রতি রাজনীতির মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে, এ বার কি ৮০ বছর বয়সি এই নেতাকে রাষ্ট্রপতি করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে? গত বুধবার পওয়ার নিজে সে সম্ভাবনা খারিজ করে বলেছেন, “আমি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী, এটা বলা ভুল।” শুরু হয়েছে আর একটি জল্পনাও। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ও শিবসেনার সঙ্গে সরকারে থাকলেও, বেশ কিছু দিন ধরেই উদ্ধব ঠাকরের দলের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের সম্পর্ক মোটেই মসৃণ নয়। তবে কি মহারাষ্ট্র নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ উঠে আসতে চলেছে— এমন জল্পনাও উস্কে দেয় মোদী-পওয়ার বৈঠক।
সে সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক আজ বলেন, “অনেক দিন ধরেই দু’জনের বৈঠক হওয়ার কথা চলছিল। আজ তার সময় পাওয়া গিয়েছে। মহারাষ্ট্রর এক জন নেতার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার মধ্যে অন্য কিছু খোঁজার অর্থ হয় না।... আমরা আশা করব রাজ্যের সমবায় ও ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র নিয়ে এনসিপি সভাপতির সব অনুরোধ প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করবেন।” পীযূষ গয়ালকে রাজ্যসভার নেতা নির্বাচনের বৈঠকে মনমোহন সিংহ, আনন্দ শর্মাদের মতো অন্য প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পওয়ার। সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর আগে আগামিকাল সর্বদলীয় বৈঠকেও তাঁর থাকার কথা।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের মুখে তিনি বিজেপি-বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। ২০২৪-এর জন্য কী ভাবছেন? পওয়ারের জবাব, “রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টাতেই থাকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy