শরদ যাদবের কাছ থেকে নিজের হাতে দায়িত্ব তুলে নিলেন নীতীশ কুমার। আজ দিল্লিতে সংযুক্ত জনতা দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী সরকার ও বিজেপির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় এক কোণে ঠেলে দেওয়া হয়েছে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। আর বিহারে নীতীশ ক্ষমতায় আসার পরে, এনডিএ-তে আডবাণীর সতীর্থ শরদ যাদবেরও একই হাল হল। দু’ দলের দুই শীর্ষ নেতাই আপাতত কেবল উপদেষ্টার দায়িত্বে।
১৯৮০-র পরে এই প্রথম দলে সাংগঠনিক দায়িত্বে এলেন নীতীশ। দিল্লিতে জেডিইউ কর্মসমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হলেও শরদ-বিদায়ের চিত্রনাট্য লেখা শুরু হয়েছিল মাস কয়েক আগেই। বিহারের সাফল্যের পরে উত্তরপ্রদেশ ও লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে দল ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেয় নীতীশ শিবির। ঠিক হয়, তিন বারের সভাপতি শরদ যাদবের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। আগামী জুলাইয়ে বিহার থেকে শরদ-সহ পাঁচ জনের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু জেডিইউয়ের কোটা থেকে মাত্র দু’জনই সংসদে যেতে পারবেন। আরজেডির তরফেও যাবেন দু’জন। সেই তালিকায় শরদ যাদবকে রাখতে চান না কেউই। তা বুঝতে পেরেই সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হতে চাপ দিচ্ছিলেন শরদ। এমনকী তিনি যে ক্ষুব্ধ, সেই বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ সব চাপে মচকাননি নীতীশ। জেডিইউয়ের অনেকেই মনে করেন, শরদ যাদবের চাপের কোনও প্রভাব দলের উপর পড়বে না। আজ দায়িত্ব পেয়ে নীতীশ তাই বলেছেন, ‘‘দল যে আমার উপরে ভরসা রেখেছে তাতে আমি অভিভূত। শরদ যাদবের উত্তরসূরি হিসাবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণে আপ্রাণ চেষ্টা করব।’’
বিহারে সাফল্য পাওয়ার পরে নীতীশের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে প্রচার ও সংগঠনের দায়িত্ব নেন। তার পর নীতীশ কুমার দিল্লি গিয়ে অজিত সিংহের লোকদল, পিস পার্টি এবং আপনা দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী থাকলেও সভাপতি শরদ যাদব ছিলেন না। ঝাড়খণ্ডের বাবুলাল মরান্ডীর দলের সঙ্গে
জোট নিয়েও শরদের কোনও ভূমিকা ছিল না।
জেডিইউ নেতাদের মতে, লোকসভা ভোটের কথা ভেবেই এখন থেকে সক্রিয় হয়েছেন নীতীশ। সেই কারণেই এই অপসারণ। রাজনৈতিক সূত্র বলছে, লালু ও নীতীশ যে দিন হাত মিলিয়েছেন, সে দিন থেকেই দলে শরদের প্রয়োজনীয়তা আরও কমতে শুরু করে। এ যাবৎ নীতীশের কাছে যাদব ভোট টানতে
একমাত্র হাতিয়ার ছিলেন শরদ যাদব। কিন্তু লালু ও নীতীশ জোট হওয়ার পরে শরদের সেই প্রয়োজনীয়তা ফুরোতে থাকে।
আজ দায়িত্বহীন শরদ যাদবের মুখ ছিল থমথমে। যদিও পরিস্থিতির চাপে নীতীশের নাম প্রস্তাব করতে হয় তাঁকেই। কিন্তু তিনি যে ভিতরে ভিতরে ক্ষুব্ধ, বর্ষীয়ান নেতার শরীরের ভাষা তা বুঝিয়ে দিচ্ছিল। সভাপতি পদ ছাড়া নিয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি যেমন ছিলাম, তেমনই থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy