প্রতীকি ছবি
দক্ষিণ মুম্বইয়ে শক্তি সুগার মিলে আলোচিত গণধর্ষণ মামলার তিন আসামির ফাঁসির রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে হাই কোর্ট বৃহস্পতিবার বলল, “আজীবন তারা কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করুক, মৃত্যুদণ্ড যাকে সংক্ষিপ্ত করে দেয়।”
এক পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে ২০১৩-র ২২ অগস্ট দক্ষিণ মুম্বইয়ের পরিত্যক্ত শক্তি সুগার মিলের ভিতরের ছবি তুলতে গিয়ে ছিলেন পেশায় চিত্রসাংবাদিক বছর ২২-এর তরুণী। সেখানে পুরুষ সহকর্মীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পাঁচ দুষ্কৃতী তরুণীকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তরুণী পরে এজাহারে জানিয়েছেন, সেখানে তাঁকে অন্তত ৬ বার গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। নির্যাতনের ছবি তুলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, ঘটনা কাউকে জানালে এই ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে দেওয়া হবে। এর পরে অসুস্থ, রক্তাক্ত তরুণীকে তাঁর সহকর্মীর কাছে ফিরিয়ে দিয়ে হুমকি দিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। তরুণী এর পরে সহকর্মীকে জানান— তিনি নির্যাতিতা, এখনই চিকিৎসা প্রয়োজন। যে সংবাদ মাধ্যমে তাঁরা যুক্ত ছিলেন, সেখানে খবর পাঠানোর পরে তরুণীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি পুলিশকে ঘটনা জানান।
দিনের আলোয় এই গণধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পরে আলোড়ন পড়ে যায়। পুলিশ ২০ জন অফিসারের একটি দল তৈরি করে ৬৫ ঘণ্টার মধ্যেই একে একে পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে। ইতিমধ্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ১৯ বছরের তরুণী টেলিফোন অপারেটর পুলিশের কাছে গিয়ে জানান, ওই ঘটনার সপ্তাহ তিনেক আগে ৩১ জুলাই একই ভাবে তাঁর পুরুষ সঙ্গীকে মারধর করে বেঁধে রেখে পাঁচ জন তাঁকে গণধর্ষণ করেছিল। কিন্তু ভয় পেয়ে তাঁরা বিষয়টি চেপে গিয়ে ছত্তীসগঢ়ে চলে যান। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, দুই ঘটনায় তিন দুষ্কৃতী অভিন্ন। সহায়ক দু’জন কেবল আলাদা। এই ঘটনার দুই সহায়ককেও গ্রেফতার করে আলাদা মামলা করে পুলিশ। দু’টি মামলাতেই দেখা যায় এক জন করে সহায়ক নাবালক। তাদের বিচার করা হয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে।
টানা শুনানির পরে ২০১৪-র ২১ মার্চ মুম্বই নগর দায়রা আদালত মূল তিন আসামি বিজয় যাদব (১৯), কাশিম শেখ ওরফে বাঙালি কাশিম (২১) এবং মহম্মদ সলিম আনসারি (২৬)-কে প্রাণদণ্ড দেয়। দুই মামলার দুই সাবালক সহায়কের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই নাবালক সহায়কের তিন বছর করে সংশোধনাগারে কাটানোর শাস্তি দেয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড।
এর পরে প্রাণদণ্ড পাওয়া তিন আসামি দায়রা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বম্বে হাই কোর্টে আপিল করে। বিচারপতি সাধনা যাদব ও বিচারপতি পৃথ্বীরাজ চহ্বাণের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রায়ে বলেন, “সন্দেহ নেই অপরাধ ভয়ঙ্কর। সমাজে আলোড়ন ফেলেছিল এই ভয়ানক গণধর্ষণের ঘটনা। কিন্তু তাতে বিচার প্রক্রিয়ার প্রভাবিত হওয়া উচিত নয়।” রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডই এই অপরাধের একমাত্র সাজা বলে হাই কোর্ট মনে করে না। আসামিরা সারা জীবন তাদের দুষ্কর্মের জন্য যে আফসোস করবে, মৃত্যুদণ্ড তা কমিয়ে দেবে। এর চেয়ে যাবজ্জীবন কারাবাস করে তারা কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy