Serial Killer Sisters Seema Gavit and Renuka Shinde Are On Death Row Now dgtl
serial killer
প্রথম শিকার সৎ বোন, মায়ের কাছে ‘শিখে’ অপহরণ-খুন শিশুদের, এই দুই সিরিয়াল-কিলার বোন ফাঁসির আসামি
যখন তারা আর কাজ করতে পারত না, মা এবং দুই বোন তাদের ফেলে চলে যেত। নয়তো এত অত্যাচার করত, অসহায় শিশুরা মারাত্মক আহত হত। কেউ কেউ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যেত।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
দুই মেয়েকে মা নির্দেশ দিয়েছিল। অপহরণ করতে হবে সৎ বোনকে। সেখানেই হাতেখড়ি অপরাধে। তারপর মা আর তার দুই মেয়ে মিলে তৈরি করল শিশু অপহরণ ও খুন করার কুখ্যাত চক্র। সেই দুই বোন সীমা মোহন গাভিট এবং রেণুকা কিরণ শিন্ডে এখন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
০২১৫
১৯৯০ সালে পকেটমারি করতে গিয়ে একটি মন্দিরের সামনে প্রথম বার জনতার হাতে ধরা পড়ে অঞ্জনা। সে সময় তার সঙ্গে ছিল তার ‘ছেলে’।
০৩১৫
সে কোনওরকমে উত্তেজিত জনতাকে বোঝায়, ‘ছেলের’ সামনে কোনও মা এই রকম অপরাধ করতে পারে না। কোনওমতে জনতার প্রহার থেকে রক্ষা পায় সে।
০৪১৫
কিন্তু অঞ্জনার সঙ্গে যে শিশুটি ছিল, তা তার নিজের সন্তান নয়। তাদের সব অপরাধেই সঙ্গে থাকত কোনও না কোনও অপহৃত শিশু।
০৫১৫
তারা ভিক্ষা করানোর জন্য মূলত অপহরণ করত শিশুদের। যখন তারা আর কাজ করতে পারত না, মা এবং দুই বোন তাদের ফেলে চলে যেত। নয়তো এত অত্যাচার করত, অসহায় শিশুরা মারাত্মক আহত হত। কেউ কেউ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যেত। ১৯৯৬ সাল অবধি মোট ৪০ জন শিশুকে অপহরণ করেছিল তারা।
০৬১৫
আদালতে তাদের বিরুদ্ধে ১৩টি অপহরণ ও ১০টি খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৩টি অপহরণ ও ছ’টি খুনের ঘটনায় তাদের দোষী প্রমাণিত করা গিয়েছিল।
০৭১৫
মহারাষ্ট্রে রেণুকার জন্ম ১৯৭৩ সালে। সীমা তার থেকে দু’ বছরের ছোট। তাদের মা অঞ্জনার প্রথম স্বামী ছিলেন ট্রাকচালক। বড় মেয়ের জন্মের পর তিনি স্ত্রী আর সদ্যোজাতকে ফেলে চলে যান।
০৮১৫
নিজের আর মেয়ের অন্নসংস্থান করতে অঞ্জনা ছোটখাটো চুরি শুরু করে। নতুন করে সংসার শুরু করবে বলে ফের বিয়ে করে। জন্ম হয় ছোট মেয়ে সীমার। এরপর তাদের ফেলে চলে যায় অঞ্জনার দ্বিতীয় স্বামী মোহন গাভিটও।
০৯১৫
দুই মেয়ে-সহ অঞ্জনাকে ফেলে মোহন বিয়ে করে প্রতিমা বলে এক তরুণীকে। এরপরই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে ওঠে অঞ্জনা। কয়েক বছর পরে, ১৯৯০ সালে দুই মেয়ের সাহায্যে সে অপহরণের পরে খুন করে মোহন-প্রতিমার শিশুকন্যাকে। তাদের সাহায্য করেছিল রেণুকার স্বামী কিরণও।
১০১৫
এরপর অঞ্জনা ঠিক করল, দুই মেয়েকে নিয়ে অন্ধকার দুনিয়াই হবে তাদের ঠিকানা। পকেটমারি শুরু করে তিনজন। সেইসঙ্গে চলতে থাকে সুযোগ বুঝে শিশু অপহরণ। পকেটমারির সময় শিকারকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখতে বা পালানোর সময় সাহায্য করত অপহৃত শিশুরা।
১১১৫
অবস্থা বেগতিক বুঝলে তারা সঙ্গে থাকা শিশুকে গোপনে আঘাত করত। সে তখন তারস্বরে কাঁদতে শুরু করত। ফলে ঘটনাস্থল ছেড়ে তিনজনের পালাতে সুবিধে হত। দুই মেয়েকে নিয়ে বয়সে একটু বড় অপহৃত শিশুদের প্রশিক্ষণ দিত অঞ্জনা। নাসিক, কোলাপুর, পুণে জুড়ে বিস্তৃত ছিল তাদের অপরাধ চক্র।
১২১৫
১৯৯৬ সালে মোহন-প্রতিমার ছোট মেয়েকে অপহরণের জন্য ছক কষে অঞ্জনা ও তার দুই মেয়ে। কিন্তু এ বার সতর্ক থেকে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয় মোহনের দ্বিতীয় স্ত্রী প্রতিমা। পুলিশি জেরায় প্রকাশিত হয় মা ও তার দুই মেয়ের জঘন্য অপরাধ।
১৩১৫
গ্রেফতারের পরে মামলা চলাকালীন ১৯৯৭ সালে মারা যায় অঞ্জনা। দীর্ঘ শুনানির পরে ২০০৬ সু্প্রিম কোর্টেও বহাল থাকে সীমা আর রেণুকার প্রাণদণ্ড। ২০১৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় দুই হত্যাকারী বোনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেন।
১৪১৫
পুণের ইয়েরওয়াড়া কারাগারে বর্তমানে বন্দি সীমা এবং রেণুকা। তাদের প্রাণদণ্ড কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায়।
১৫১৫
স্বাধীন ভারতে প্রথম ফাঁসি হয় যে মহিলা অপরাধীর, তার নাম রত্তনবাঈ জৈন। তিনজন শিশুকে খুনের অপরাধে ১৯৫৫ সালের ৩ জানুয়ারি দিল্লিতে তার ফাঁসি হয়েছিল। (ছবি: শাটারস্টক ও সোশ্যাল মিডিয়া)