Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কাশ্মীরিদের সঙ্গে বৈঠক অমিত শাহের, বাহিনী কমবে পনেরো দিনে

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিলেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই গোটা উপত্যকা থেকে বাড়তি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৭
Share: Save:

ঠিক এক মাস আগে বাড়তি আধা সেনা এনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জালে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা কাশ্মীর উপত্যকা। আর তার পরেই সংসদে বাতিল হয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। কেন্দ্রের দাবি অনুযায়ী উপত্যকার পরিস্থিতি এখন মোটের উপর শান্ত হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর কড়াকড়ি কিন্তু কমেনি।

এই অবস্থায় আজ দিল্লিতে জম্মু-কাশ্মীরের পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য, স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিলেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই গোটা উপত্যকা থেকে বাড়তি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। কেন্দ্রের আশা, বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী সরিয়ে নেওয়া শুরু করলেই জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসবে কাশ্মীরে। এরই মধ্যে আজ সেনা ভর্তির পরীক্ষায় গোটা উপত্যকা থেকে প্রায় ২৯ হাজার যুবক অংশ নেওয়ায় উৎসাহী কেন্দ্র। শাসক শিবির মনে করছে, কাশ্মীরি যুবকদের চাকরির সুযোগ দিতে পারলে আপনিই কমে আসবে বিচ্ছিন্নতাবোধ, সন্ত্রাসবাদ।

কিন্তু এরই পাশাপাশি, আজ দিল্লি থেকে শ্রীনগরে ফিরেই ফের গৃহবন্দি হয়েছেন শহরের মেয়র জুনেইদ মাট্টু। ৫ অগস্ট তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল। এর পর চিকিৎসার জন্য দিল্লি যেতে দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে গত কাল এক সাক্ষাৎকারে কাশ্মীরে ধরপাকড় এবং রাজনীতিকদের আটক করার নিন্দা করেন তিনি। বলেন, উপত্যকা স্বাভাবিক হওয়ার আশা অবাস্তব।

কেন্দ্র বাড়তি বাহিনী সরিয়ে উপত্যকায় ছন্দ ফেরানোর আশা করলেও সেখানকার পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। আজ বৈঠকে তাঁদের বড় অংশই নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি জানান। শ্রীনগরের জুবের বলেন, ‘‘প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আমার ও পরিবারের নিরাপত্তার দিকটিও সরকার দেখুক।’’ পঞ্চায়েত সদস্যদের উপরে হামলার যে আশঙ্কা রয়েছে, তা মেনে নেন শাহ। সূত্রের খবর, তাই আগামী দিনে তাঁদের নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার পাশাপাশি দু’লক্ষ টাকার জীবনবিমা করানোর ব্যাপারেও প্রাথমিক ভাবে রাজি হয়েছেন শাহ।

আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। কিন্তু দ্রুত সেটি ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে, সেই আশ্বাসও আজ দিয়েছেন শাহ। গান্ডেরবাল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য নাজির আহমেদ-সহ অনেক নেতাই বলেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের ফলে জমি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন উপত্যকার মানুষ।’’ তাঁদের আশ্বস্ত করে শাহ বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের অধিকার কোনও ভাবেই ক্ষুণ্ণ হবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রায় বিচ্ছিন্ন জম্মু-কাশ্মীরের দু’ডজন মানুষ কী ভাবে একসঙ্গে দিল্লি পৌঁছে গেলেন?

এই বৈঠকের সঙ্গে সরাসরি কোনও যোগ নেই বলে কেন্দ্র দাবি করলেও, অনেকে বলেছেন সবটাই পরিকল্পিত। বেছে বেছে সরকারপন্থী পঞ্চায়েত সদস্যদের এনে পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক হচ্ছে, সেই বার্তা দিতে চেয়েছে কেন্দ্র।

বৈঠকে শাহ ইঙ্গিত দেন, এ মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই উপত্যকা থেকে বাড়তি বাহিনী সরিয়ে ফেলতে চায় দিল্লি। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, সেনা সরানো শুরু হলেই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে উপত্যকা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় সে ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ফলে এখনই বাড়তি বাহিনী সরানোর সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে মন্ত্রকে। আপাতত কয়েক মাস সেখানে বাহিনী রাখার পক্ষপাতী অনেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Amit Shah Jammu And Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE