Advertisement
E-Paper

জঙ্গিদের নিরাপদে ফেরাতেই কি গুলি পাকিস্তানের

নিরাপত্তা কর্তাদের মতে, জঙ্গিরা যাতে নির্বিঘ্নে অনুপ্রবেশ করতে পারে, সে জন্য অন্য দিকে নজর ঘোরাতে নিয়ন্ত্রণরেখার অন্যত্র গুলি ছোড়ে পাক সেনা।

চলছে গুলির লড়াই।

চলছে গুলির লড়াই। —ফাইল চিত্র।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩৯
Share
Save

পহেলগাম হত্যালীলার পরেই নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি-বিনিময়।

গত রাত থেকেই নীপা উপত্যকা-সহ নিয়ন্ত্রণরেখার একাধিক স্থানে গুলি চালায় পাকিস্তানি সেনা। অন্য দিকে, নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার গুলির পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করেছে ভারত। বারামুলার রাতের আকাশ চিরে উড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে রাফাল-সুখোই বিমানকে। এই আবহে আজ দু’দেশকেই সংযম দেখানোর আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

নিরাপত্তা কর্তাদের মতে, জঙ্গিরা যাতে নির্বিঘ্নে অনুপ্রবেশ করতে পারে, সে জন্য অন্য দিকে নজর ঘোরাতে নিয়ন্ত্রণরেখার অন্যত্র গুলি ছোড়ে পাক সেনা। যাতে গুলির জবাব দিতে ব্যস্ত ভারতীয় সেনার অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখার অন্য অংশ পেরিয়ে ঢুকতে পারে জঙ্গিরা। কিন্তু পহেলগাম হামলার পরে সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় নজরদারি আরও কড়া করেছে ভারত। সার্জিকাল স্ট্রাইকের আশঙ্কায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লঞ্চপ্যাড থেকে জঙ্গিদের ভিতরে সরিয়ে নিয়ে এসেছে পাক সেনা। কার্যত বন্ধ অনুপ্রবেশ। এই পরিস্থিতিতে গুলির কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এমন হতে পারে যে পহেলগামে হামলাকারী জঙ্গিদের দলটি সীমান্তের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে। তারা যাতে ভারতীয় সেনার নজর এড়িয়ে পাকিস্তানে ঢুকতে পারে, সেই কারণে নজর ঘোরাতে নিয়ন্ত্ররেখার বিভিন্ন স্থানে এ ভাবে গুলি ছুড়ছে পাক সেনা। এক সেনা অফিসার বলেন, ‘‘ওই জঙ্গিদের খোঁজে যে তল্লাশি শুরু হয়েছে তা ওদের নিকেশ করেই শেষ হবে। তাই পাকিস্তান চাইবে না, ফের কোনও আজমল কসাব ভারতের হাতে ধরা পড়ুক বা নিহত হোক। তেমন কিছু হলেই ভারত সেই প্রমাণ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কোণঠাসা করবে ইসলামাবাদকে। প্রমাণ লোপাটের জন্যই জঙ্গিদের ফিরিয়ে আনতে চাইছে তাদের মাথারা। তাই এ ভাবে গুলি ছুড়ছে পাকিস্তান। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, গত রাত থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন অংশে ভারতীয় চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায়
পাক সেনা।

পহেলগাম হামলার পর থেকে ভারতীয় বায়ুসেনা ‘আক্রমণ’ নামে যে বিশেষ মহড়া শুরু করেছিল, তা-ও অব্যাহত রয়েছে। দিনের আলোর পাশাপাশি রাতের অন্ধকারে নির্ভুল লক্ষ্যে হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ চলেছে বলে জানা গিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে কিছুটা দূরে হলেও, বারামুলার রাতের আকাশ চিরে একাধিক যুদ্ধবিমানকে দেখা গিয়েছে। সূত্রের মতে, পহেলগাম কাণ্ডের পরে ‘হাই অ্যালার্টে’ রাখা হয়েছে বায়ুসেনাকে। একটি সূত্রের মতে, পহেলগাম পরবর্তী প্রত্যাঘাতের কথা মাথায় রেখে অম্বালা এবং হাসিমারা থেকে দুই স্কোয়াড্রন রাফাল বিমান ওই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। সূত্রের মতে, নিয়মিত ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় উড়ানে অংশ নেওয়া ছাড়াও, দূরবর্তী নিশানায় নিখুঁত লক্ষ্যে হামলা চালানো, যুদ্ধবিমানের হামলা রোখার অনুশীলন শুরু করেছে সেনা। হয়েছে ‘ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার’ মহড়াও। যাতে রাফাল ছাড়াও ছিল সুখোই-৩০ বিমান। এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ। উভয় দেশের সরকারের কাছে সংযম দেখানোর আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘‘দুই দেশের উচিত সর্বোচ্চ সংযম দেখানো। যাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি না হয় তা নিশ্চিত করা। আমরা বিশ্বাস করি, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে কোনও সমস্যার অর্থবহ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া সম্ভব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Kashmir

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}