কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ীর বিরুদ্ধে গুজরাত পুলিশের দায়ের করা এফআইআর খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ বাক্স্বাধীনতার প্রশ্ন তুলে ভর্ৎসনা করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের বিজেপি সরকারের পুলিশকে।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ শুক্রবার বলেছে, ‘‘বাক্স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, স্বাধীন চিন্তাভাবনা একটি সুস্থ, সভ্য সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটি ছাড়া সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিশ্চিন্ত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করা অসম্ভব। কবিতা, নাটক, শিল্প, ব্যঙ্গচিত্র, সাহিত্য জীবনকে সমৃদ্ধ করে।’’
ইনস্টাগ্রামে ইমরানের পোস্ট করা একটি ভিডিয়োর জেরে ইমরানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল গুজরাতে। ওই ভিডিয়োয় প্রচারিত কবিতা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সামাজিক শান্তি বিঘ্নিত করছে বলে পুলিশ অভিযোগ এনেছিল। সেই এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে গুজরাত হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। সেই আবেদন খারিজ হওয়ার পরে তিনি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার এফআই খারিজের নির্দেশ দিয়ে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে— ‘‘কবিতাটি দেখুন। এটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একটি কবিতা। এটি কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। এটি কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। দয়া করে কবিতাটির প্রতি মনোনিবেশ করুন।’’ চলতি মাসের গোড়াতেই এই মামলার শুনানিতে মোদীর রাজ্যের পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছিল বিচারপতি ওকা এবং বিচারপতি ভূঞার বেঞ্চ। পর্যবেক্ষণে বলেছিল— ‘‘দেশে সংবিধান গৃহীত হওয়ার পরে ৭৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বাক্স্বাধীনতার মানে কী, তা এ বার অন্তত পুলিশের বোঝা উচিত।’’
গুজরাত সরকারের মতে ‘বিতর্কিত’ কবিতার লাইনগুলি যে আদতে বিখ্যাত উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ ওরফে হাবিব জালিবের লেখা, সে কথাও উঠে আসে শুনানিতে। ইমরানের আইনজীবীর যুক্তি মেনে নেয় শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, জনপ্রিয় উর্দু কবি ইমরান ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। সে বছর লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান তিনি। পরে মহারাষ্ট্র থেকে তাঁকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করে জিতিয়ে এনেছিল কংগ্রেস। বিজেপির অভিযোগ, ইমরান আদতে রাষ্ট্রবিরোধী। তাঁর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের নিহত প্রাক্তন সাংসদ আতিক আহমেদের ঘনিষ্ঠতারও অভিযোগ তোলা হয়েছিল পদ্মশিবিরের তরফে।