জামিন পেলেন তিস্তা শেতলবাদ। ফাইল চিত্র।
গ্রেফতার হওয়ার প্রায় আড়াই মাস পরে জামিন পেলেন সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট গুজরাতের জঙ্গি দমন শাখার (এটিএস) হাতে ধৃত তিস্তার আবেদনে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ গুজরাত পুলিশের তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিস্তাকে। ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে।
সমাজকর্মী তিস্তাকে যে ভাবে জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে তা নিয়ে বৃহস্পতিবারই প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত স্বয়ং তিস্তার জামিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে গুজরাত হাই কোর্টের ছ’সপ্তাহ সময় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘‘৩ অগস্ট নোটিস জারি করে ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির দিন স্থির করা হয়েছে। জামিনের আবেদনের ক্ষেত্রে কি ছ’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়?’’
এর পরেই আইনজীবীদের একাংশ মনে করেছিলেন, তিস্তার জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। শুক্রবার সেই অনুমান মিলে গিয়েছে। অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গুজরাত হাই কোর্টে স্থায়ী জামিনের আবেদনের বিষয়ে নির্দেশ ঘোষিত না হওয়া পর্যস্ত পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে তিস্তাকে।
২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গাপর্বের গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ড মামলায় ‘সিট’ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদী-সহ বেশ কয়েক জনকে ক্লিনচিট দিয়েছিল। তার বিরোধিতায় মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত ২৪ জুন সেই আবেদন খারিজ করে দেশের শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, গুজরাত দাঙ্গা সংক্রান্ত কোনও মিথ্যা তথ্যপ্রমাণ তিস্তা পেশ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার কথা বলে। এর পরেই ২৫ জুন মুম্বইয়ে গিয়ে গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস) তিস্তাকে গ্রেফতার করেছিল। সে সময় তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
ঘটনাচক্রে, ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দীর্ঘ দিন রয়েছেন তিস্তা। ধারাবাহিক ভাবে ওই পরিবারগুলিকে আইনি সহায়তাও দিয়েছেন তিনি। গুজরাত পুলিশের জঙ্গিদমন শাখার (এটিএস) হাতে তিস্তার গ্রেফতারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপুঞ্জও। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারকে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।
যদিও তার পরেও তিস্তাকে জেলবন্দি রাখার জন্য গুজরাত সরকারের তৎপরতা চলছিল সমানতালে। জুলাইয়ে গুজরাত ‘সিট’ আমদাবাদের দায়েরা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানায়, গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার পর গুজরাতের বিজেপি সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলের থেকে নাকি ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন ধৃত সমাজকর্মী তিস্তা। এর পর বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র অভিযোগ করেন, সেই ষড়যন্ত্র হয়েছিল সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy