ফাইল চিত্র।
নির্বাচনী প্রচারে জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি ‘গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা’ বলে আজ মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের মনভোলানো প্রতিশ্রুতিগুলি পরীক্ষা করে দেখা উচিত বলেই মনে করছে শীর্ষ আদালত। তাদের মতে, এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা দরকার।
সপ্তাহ খানেক আগে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ এই ধরনের প্রতিশ্রুতি নিয়ন্ত্রণের রাস্তা খোঁজার কথা বলেছিল। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরালি এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ আজ বলেছে, নীতি আয়োগ, অর্থ কমিশন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, শাসক ও বিরোধী দল এবং এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত পক্ষগুলিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা দরকার। যাতে খয়রাতি প্রকল্প ও ভোটদাতাদের মন ভোলানো প্রতিশ্রুতি দেওয়া বন্ধ করা যায়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যাঁরা খয়রাতি প্রকল্প চান এবং ওই ধরনের প্রকল্পের বিরোধিতা করেন, সেই সঙ্গে নীতি আয়োগ, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা দরকার। যা থেকে একটি গঠনমূলক সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়।’’ কমিটি গঠনের ব্যাপারে মতামত জানাতে কেন্দ্র, নির্বাচন কমিশন, প্রবীণ আইনজীবী তথা সাংসদ কপিল সিব্বল এবং মামলার আবেদনকারীকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায় শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়ে বলেছিলেন, মন ভোলানো প্রতিশ্রুতি এবং খয়রাতি প্রকল্পগুলি ভোটাদাতাদের ‘ঘুষ’ দেওয়া ছাড়া কিছু নয়। এটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করছে। আজ কেন্দ্রের তরফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আবেদনকারীর বক্তব্য সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি ভোটদাতাদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের দিকে নিযে যায়।’’
এর পরেই প্রধান বিচারপতি রমণা বলেন, ‘‘সকলেই মনে করেছেন, তাঁরা কর দিচ্ছেন। কেউ ভাবছেন না উন্নয়নের জন্য টাকা দিচ্ছেন। জনমোহিনী প্রতিশ্রুতির ফায়দা সব দলই পেয়েছে। কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না।’’
খয়রাতি প্রকল্প বন্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নোটিস দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদী। তা নিয়ে আজ টুইট করেছেন পিলিভিটের সাংসদ বরুণ গান্ধী। তিনি লিখেছেন, ‘জনগণকে স্বস্তি দিতেই ওই ধরনের প্রকল্পগুলি চালু হয়। আমজনতার দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের দিকে তাকানো উচিত। সংসদ সদস্যেরা পেনশন-সহ যে সব সুযোগসুবিধা ভোগ করেন, আমরা সেগুলির দিকে তাকাবো না কেন’?
কিছু দিন আগেই জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই ধরনের প্রতিশ্রুতিকে ‘মিষ্টান্ন সংস্কৃতি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ওই প্রবণতা দেশের উন্নয়নের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। আজ এ নিয়ে টুইটারে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান লিখেছেন, ‘ক্ষমতায়ন এবং জনমোহিনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে সূক্ষ্ম ফারাক আছে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায়নের পক্ষে’। এই নিয়ে একটি সংবাদপত্রে তাঁর সাক্ষাৎকারের অংশও টুইট করেছেন তিনি। যদিও বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যখনই মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি ওঠে তখনই বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা বলতে থাকেন মোদী সরকার গরিবদের জন্য কী কী প্রকল্প চালু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy