মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে কৃষক সংগঠনগুলির জমায়েত নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার যখন নতুন করে চাপের মুখে, সেই সময়েই শিল্পপতি গৌতম আদানিকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। তাঁর অভিযোগ, আদানির কথা ভেবেই মোদী সরকার ফসলের ন্যূনতম সাধারণ মূল্য বা এমএসপি-র আইনি নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা ভাবছে না। রাজ্যপালের ক্ষোভ, এক দিকে আদানি সব চেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠছেন আর কৃষকদের লড়তে হচ্ছে এমএসপি-র জন্য।
সমস্ত ধরনের ফসলে এমএসপি-র নিশ্চয়তা এবং ঋণমুক্তির দাবি নিয়ে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন আজ দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসেছে। এর আগে দিল্লির সীমানায় প্রায় এক বছর ধরে চলা ধর্নার পর মোদী সরকার তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। তবে আট মাস পর ফের সেই কৃষক সংগঠনগুলি সরকারের কাছে এমএসপি-র পুরনো দাবি নিয়ে ফিরে এল। তবে যন্তরমন্তরে আজ বেশ কয়েক হাজার কৃষক জমায়েত করলেও ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের (বিকেইউ) নেতা জগজিৎ সিংহ ধালিওয়াল দাবি করেছেন, দিল্লির সীমানায় বহু কৃষককে আটকে দিয়েছে পুলিশ। করনাল বাইপাসে তাঁদের গাড়ি আটকানো হয়েছে। বিকেইউ নেতা রাকেশ টিকায়েত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘‘দিল্লি পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করছে। তবে তারা কৃষকদের আওয়াজ থামিয়ে দিতে পারবে না। গ্রেফতারি হলে নতুন উদ্যমে কাজ এগোবে।’’
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল কমিশনার দীপেন্দ্র পাঠক দাবি করেছেন, যন্তরমন্তরে যাওয়ার সময় টিকায়েতকে আজ আটকে দেওয়া হয়। তাঁকে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছে পুলিশ, তিনি তা মেনেও নিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকেরা যন্তর মন্তরের মহাপঞ্চায়েতে যোগ দিতে এসেছেন। কৃষকদের জমায়েতের দিকে তাকিয়ে দিল্লির সীমানায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি গাড়ি তল্লাশি করে তবেই দিল্লিতে ঢুকতে দেওয়া হয়। এর ফলে গাজ়িপুর ও সিংঘু সীমানায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
দিল্লিতে কৃষকেরা যখন নতুন করে আন্দোলন শুরু করছেন, ঠিক তার আগমুহূর্তে সত্যপাল মালিকের মন্তব্য মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। হরিয়ানা নুঁহ-র কিরা গ্রামের একটি অনুষ্ঠানে গতকাল মালিক বলেছেন, ‘‘এমএসপি-র আইনি নিশ্চয়তা দেওয়া না হলে এবার মারাত্মক লড়াই হবে। দেশের কৃষকদের হারানো সম্ভব নয়। আয়কর, ইডি-র আধিকারিকদের দিয়েও তাঁদের ভয় দেখানো যাবে না।’’ সত্যপালের কথায়, ‘‘আদানিকে বিমানবন্দর, বন্দর, বড়সড় প্রকল্প দিয়ে দেশ বিক্রির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এটা হতে দেবো না।’’ তাঁর অভিযোগ, কৃষক আন্দোলনের সময়ে সাতশো কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সমবেদনা পর্যন্ত জানায়নি। অথচ দিল্লিতে কোনও পশুর মৃত্যু হলেও শোক জানানো হয়ে থাকে। সত্যপাল মালিকের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ টুইট করে বলেছেন, ‘‘মেঘালয়ের রাজ্যপাল আর প্রধানমন্ত্রীর মিত্র সত্যপাল মালিক প্রধানমন্ত্রীর আর এক মিত্র-র ব্যাপারে সত্য বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy