গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বদলাপুরের যৌন নিগ্রহের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল মহারাষ্ট্র। পুলিশের দাবি, বন্দুক হাতিয়ে পালানোর চেষ্টা করায় গুলি চালানো হয় অভিযুক্তকে লক্ষ্য করে। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যদিও পুলিশের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। এ হেন চাপানউতরের মাঝেই আলোচনায় উঠে এসেছেন মহারাষ্ট্র পুলিশের সিনিয়র ইনস্পেক্টর সঞ্জয় শিন্ডে। তাঁর ছোড়া গুলিতেই মৃত্যু হয় বদলাপুর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের।
কে এই সঞ্জয়? মহারাষ্ট্র পুলিশ মহলে সঞ্জয় খুবই পরিচিত নাম। পুলিশের ‘এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট’ দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। প্রদীপ শর্মার নেতৃত্বে এই দল এক সময় মহারাষ্ট্রের অন্ধকার দুনিয়ার ত্রাস হয়ে উঠেছিল। প্রদীপের কর্মজীবনের উপর নির্ভর করে একাধিক সিনেমা, তথ্যচিত্র হয়েছে। লেখা হয়েছে বইও। এই দলই ২০১৭ সালে তোলাবাজি মামলায় ঠাণে থেকে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই ইকবাল কাসকরকে গ্রেফতার করেছিল।
তবে প্রদীপ বর্তমানে যাবজ্জীবন কারাবাসে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ উঠেছিল। ২০০৬ সালে গ্যাংস্টার ছোট রাজনের ঘনিষ্ঠ রামনারায়ণ গুপ্তকে এনকাউন্টার করেছিলেন প্রদীপ। তবে সেই এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। চলতি বছরের শুরুর দিকে বম্বে হাই কোর্ট এই মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা শোনায়। সঞ্জয় তাঁর অধীনেই কাজ করেছেন কয়েক বছর।
সঞ্জয় এক সময় মহারাষ্ট্র পুলিশের সদস্য ছিলেন। বদলাপুর-কাণ্ডের পর সরকার গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সদস্য করা হয় তাঁকে। বিশেষ দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। তবে এই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ২০১২ সালে তিনি নাকি এক খুনের মামলার অভিযুক্ত বিজয় পালান্দেকে জেল থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। যে গাড়িতে করে বিজয় পালান, সেই গাড়ি থেকে সঞ্জয়ের উর্দি পাওয়া গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর তাঁকে তদন্তের মুখোমুখিও হতে হয়েছিল। এ ছাড়াও মুম্বইয়ে এক বার তাঁরই এক সহকর্মীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। সে সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখেছিল তদন্ত কমিটি। ২০০০ সালে একটি অপহরণ মামলাতেও নাম জড়িয়েছিল সঞ্জয়ের।
বদলাপুরের নার্সারির দুই পড়ুয়াকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে ধৃত অক্ষয় শিন্ডেকে সোমবার সন্ধ্যায় তালোজা জেল থেকে নিজের হেফাজতে নিতে গিয়েছিল পুলিশ। অক্ষয়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর করা একটি মামলায় তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সে দলেই ছিলেন সঞ্জয়। পুলিশ যখন বদলাপুর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে নিয়ে থানায় ফিরছিল, অভিযোগ, সে সময়ই এক কনস্টেবলের বন্দুক কেড়ে নেন তিনি। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান এবং পালানোর চেষ্টা করেন। অভিযোগ তাঁর ছোড়া গুলিতে এক পুলিশকর্মী আহত হন। তাঁকে আটকাতে সঞ্জয় গুলি ছোড়েন। তা লাগে অক্ষয়ের গায়ে। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে অক্ষয়ের। যদিও পুলিশের এই তত্ত্ব মানছে না অক্ষয়ের পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy