অমর সিহং। —ফাইল চিত্র
আজ সকালেও বাল গঙ্গাধর তিলকের শততম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টুইট করেছিলেন। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ইদেরও। কিন্তু দুপুর গড়াতেই সিঙ্গাপুর থেকে খবর এল, সেখানকার হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ অমর সিংহ (৬৪)। গত কয়েক বছর ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন তিনি।
ভারতীয় রাজনীতির অন্যতম বর্ণময় চরিত্র অমর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন কলকাতায়। তৎকালীন কংগ্রেস নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অধীনে কংগ্রেসে ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন তিনি। পরে দিল্লি এসে যোগ দেন সমাজবাদী পার্টিতে। সেই সুবাদে অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর পরিবারের খুবই কাছের লোক হয়ে উঠেছিলেন। ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল অনিল অম্বানীর সঙ্গেও। যদিও পরে দলের মধ্যে জয়া বচ্চনের সঙ্গে ঝামেলার কারণে বচ্চন পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় অমরের। ভেঙে যায় অনিলের সঙ্গে বন্ধুত্বও।
অমরের সক্রিয়তা শিখরে পৌঁছয় প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে। পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করে সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যান বামেরা। তখন অমরেরই মধ্যস্থতায় সরকারকে সমর্থন জানায় সমাজবাদী পার্টি। যদিও অভিযোগ ওঠে, ভোটাভুটিতে তিন বিজেপি সাংসদকে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। তার পিছনে প্রধান মস্তিষ্ক ছিলেন অমর। দুর্নীতিদমন আইনে এই রাজপুত নেতাকে চার্জশিট দেয় দিল্লি পুলিশ। তাঁকে বেশ কিছু দিন তিহাড়ে কাটাতে হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় অমরের সিংহের সরাসরি যোগ না পেয়ে তাঁকে মুক্তি দেয়।
২০১০ সালের পর থেকে দলে অখিলেশ শিবির শক্তিশালী হতে থাকায় গুরুত্ব হারাতে থাকেন মুলায়ম-ঘনিষ্ঠ অমর। প্রথমে অমর-ঘনিষ্ঠ জয়াপ্রদাকে বহিষ্কার করে দল। তার পর অমরকেও। পরে ২০১৬ সালে উত্তরপ্রদেশ থেকে সমাজবাদী পার্টির সমর্থনেই নির্দল রাজ্যসভা প্রার্থী হিসেবে জিতে আসেন।
তবে দিল্লির আঙিনায় সব দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল অমরের। তাঁর মৃত্যুতে তাই নরেন্দ্র মোদী থেকে অখিলেশ যাদব, প্রিয়ঙ্কা বঢরা থেকে যোগী আদিত্যনাথ, শোক জানিয়েছেন সকলেই। রাতে অমরের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি এবং সঙ্গে নিজের নতমস্তক ছবি দিয়ে অমিতাভ বচ্চন লিখলেন, ‘‘শোকাহত। মস্তক নত। শুধু প্রার্থনাই রয়ে গেল। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, আত্মাই আর নেই!’’
২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় অমরের। শারীরিক সমস্যা লেগেই ছিল তার পর থেকে। ফেব্রুয়ারি মাসে সিঙ্গাপুরেই ফের চিকিৎসা করাতে যান। মার্চ মাসে একবার গুজব ছড়াল যে, অমর সিংহ মারা গিয়েছেন। নিজেই তখন টুইট করে বলেন, ‘টাইগার আভি জিন্দা হ্যায়!’ এ বার আর তা হল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy