বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
পালাবদলের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে ওয়াশিংটনে। আগামী মাসের ২০ তারিখ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদায়ী ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের কাছ থেকে বিভিন্ন ফাইল বুঝে নিচ্ছেন নতুন প্রশাসকরা। এই রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে আমেরিকায় গিয়ে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই সঙ্গে কথা চলছে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক আপৎকালীন বিষয়গুলি নিয়েও। ভারতের বর্তমান মাথাব্যথা শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে ওঠা প্রতারণার অভিযোগ। দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বিষয়টি উঠবে বলে সূত্রের খবর।
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান এবং বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে জয়শঙ্করের। পাশাপাশি জয়শঙ্কর নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, সানফ্রান্সিসকো, সিয়াটল, হিউস্টন, আটলান্টার ভারতীয় কনসাল জেনারেলদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, জেক সালিভানের সঙ্গে সকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে দেখা হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক তথা বিশ্বের উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের। পাশাপাশি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, গত চার বছরের ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন করেছেন তাঁরা। পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা নিয়ে প্রতিশ্রুতি ঝালিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কল্যাণকর পদক্ষেপ নিয়ে কথা হয়েছে দুই নেতার।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বড়দিনের ছুটির মধ্যেই বিদেশমন্ত্রীকে আমেরিকা পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য প্রধানত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ-বিতর্কের আঁচ ভারত এবং আমেরিকার সামগ্রিক কৌশলগত সম্পর্কে যাতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এসে মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানির বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি দর কষাকষি করতেই পারেন। মোদী সরকারের এ হেন ‘দুর্বল জায়গা’ যদি ট্রাম্পের হাতে থাকে, তা হলে ‘ডিল মেকার’ হিসেবে পরিচিত এবং দেনাপাওনার কূটনীতিতে বিশ্বাসী ট্রাম্পের পক্ষে সুবিধা হবে, ভারতের সঙ্গে দর কষাকষি করার। আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে আমেরিকার সংস্থাগুলির জন্য আরও বেশি করে ভারতের বাজার খুলে দেওয়ার ব্যাপারে চাপ তৈরি করতে পারবে ট্রাম্প প্রশাসন। এই প্রেক্ষিতে জয়শঙ্করের দৌত্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আদানির বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রচার চালাচ্ছে কংগ্রেস। কিন্তু দেশের বাইরে তাকে সামলানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ আপাতত মোদী সরকারের সামনে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশনীতির সবচেয়ে বড় উপাদান অর্থনীতি। দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ প্রযুক্তির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হল, বিনিয়োগ যে দেশে হচ্ছে, সেখানে হঠাৎ কর নীতির বদল যেন না ঘটে। দুর্নীতির অভিযোগে অস্থিরতা যেন না আসে। এ ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তার বৃহত্তর প্রভাব শুধু আমেরিকা নয়, সার্বিক বিদেশ নীতির উপরেই পড়তে পারে। উদাহরণ দিয়ে বলা হচ্ছে, টু জি কেলেঙ্কারির সময় আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যে বিদেশি সংস্থাগুলি ভারতে বিনিয়োগ করতে চাইছে, আদালতের নির্দেশে স্পেকট্রাম বাতিল হয়ে যাওয়ার পর তাদের সমস্যা হবে। হয়েওছিল তাই। আপাতত তাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটাই মোদী সরকারের অগ্রাধিকার ট্রাম্প মসনদে
বসার প্রাক্কালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy