Advertisement
E-Paper

জনসংখ্যা আইন এবং ধর্মান্তরণ নিয়ে চাপবৃদ্ধি সঙ্ঘের, যোগীর সঙ্গে আলোচনায় ভগবত

সঙ্ঘ পরিবার জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের প্রশ্নে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে, তাতে আগামী দিনে মোদী সরকারের উপর ওই আইন বাস্তবায়িত করার প্রশ্নে ঘরোয়া ভাবে সঙ্ঘ পরিবারের চাপ বাড়তে চলেছে। 

সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত।

সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৮
Share
Save

সঙ্ঘ পরিবার অনেক দিন ধরেই দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন আনার দাবি তুললেও দেশে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারের সূচক নিম্নমুখী হওয়ায় ওই আইন প্রণয়নের পক্ষপাতী নয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে আজ প্রয়াগরাজে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সূত্রের মতে, তাঁদের মধ্যে মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ আইনের বাস্তবায়ন নিয়েই আলোচনা হয়। একই সঙ্গে আগামী ২৩ অক্টোবর উত্তর ভারতে ‘ছোটি দিওয়ালি’র দিন ভাগবতকে অযোধ্যায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান যোগী। ঘটনাচক্রে ওই দিন অযোধ্যায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও।

এই মুহূর্তে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে কোনও আইন আনার ইচ্ছা বা পরিকল্পনা যে কেন্দ্রের নেই, তা একাধিক বার সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বারের বিজয়া দশমীর মঞ্চ থেকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন আনার পক্ষে সওয়াল করেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর মতে, ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার ভারসাম্যের অসাম্য ভৌগোলিক সীমানা পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায়। সাধারণত বিজয়া দশমীতে আরএসএস প্রধান যে বার্তা দিয়ে থাকেন, তাকে অভিমুখ করেই আন্দোলনে নামে সঙ্ঘ পরিবার। চলতি সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে হওয়া সঙ্ঘ পরিবারের কার্যসমিতির সভাতেও সেই পথে হেঁটে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জোর করে ধর্মান্তরণের বিষয়গুলি নিয়ে মূলত আলোচনা হয়। সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে কর্মসূচি শেষে বলেন, ‘‘গোটা দেশে ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার যে অসাম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার প্রধান কারণ হল, বাংলাদেশ থেকে লাগাতার অনুপ্রবেশ ও ধর্মান্তরণ। সেই কারণে একটি সুসংহত জননিয়ন্ত্রণ নীতি চাই, যা প্রত্যেক দেশবাসীর উপর সমভাবে প্রযোজ্য হবে। হোসাবলের দাবি, ‘‘বাংলাদেশ থেকে মুসলিমদের অনুপ্রবেশের ফলে উত্তর বিহারের কাটিহার, পূর্ণিয়ার মতো জেলাগুলিতে জনসংখ্যার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

যদিও মোদী সরকারের বক্তব্য, ২০২৫ সালে দেশে জাতীয় গর্ভধারণের যে হার সরকার স্থির করেছিল, তা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব হবে। তাই আইন করে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার কোনও লক্ষ্য তাদের নেই। সঙ্ঘের পাল্টা দাবি, জন্মহার যা কমেছে, তা মূলত কমেছে হিন্দু সমাজেই। মুসলিম সমাজে জন্মহার কমার হার হিন্দুদের তুলনায় নগণ্য। বহু বছর ধরে সঙ্ঘ নেতৃত্বের তত্ত্ব মেনেই সঙ্ঘ নেতাদের একাংশ এখনও বলছেন, এই গতিতে চললে জনসংখ্যার বিস্ফোরণের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশে সংখ্যাগুরু হয়ে দাঁড়াবে মুসলিমেরা। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল আনা জরুরি। সূত্রের মতে, আজ ভাগবতের সঙ্গে বৈঠকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে দীর্ঘ আলোচনা হয় যোগীর। রাজনীতির অনেকের মতে, যে ভাবে সঙ্ঘ পরিবার জন্মনিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের প্রশ্নে ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে, তাতে আগামী দিনে মোদী সরকারের উপর ওই আইন বাস্তবায়িত করার প্রশ্নে ঘরোয়া ভাবে সঙ্ঘ পরিবারের চাপ বাড়তে চলেছে।

একই সঙ্গে যারা ধর্মান্তরিত হয়েছেন, তাঁরা যাতে সংরক্ষণের সুবিধা না পান, সে জন্যও সরব হয়েছে সঙ্ঘ। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কে জি বালকৃষ্ণণের নেতৃত্বাধীন কমিটির উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, হিন্দু ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্ম নেওয়া লোকেদের তফশিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য থাকা সুবিধে পাওয়া উচিত কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক। সেই প্রসঙ্গ টেনে হোসাবলের দাবি, অন্য ধর্ম নেওয়া লোকেদের সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া উচিত না। পরিবর্তে যাঁরা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের ওই তালিকায় আনা হোক। আজ ওই দাবি নিয়ে সরব হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। এ নিয়ে গোটা বৃহত্তর আন্দোলনে নামার পরিকল্পনাও নিয়েছে সঙ্ঘ পরিবার।

RSS Mohan Bhagwat Population Control Anti Conversion Law Narendra Modi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}