রয় ম্যাথু
কিছু দিন আগেই সোশ্যাল সাইটে সেনাবাহিনীতে ‘সহায়ক’ প্রথার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। গত শনিবার থেকে তাঁর খোঁজও মিলছিল না। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের দেওলালি ক্যান্টনমেন্টের একটি পরিত্যক্ত সেনা ব্যারাকে উদ্ধার হল ৩৩ বছরের সেই জওয়ান রয় ম্যাথুর ঝুলন্ত দেহ। দেহটিতে ইতিমধ্যে পচন ধরতে শুরু করেছে। যা দেখে মনে হচ্ছে কয়েক দিন আগেই ম্যাথুর মৃত্যু হয়েছে। ‘কোর্ট অব এনকোয়ারি’র নির্দেশ দিলেও সেনা মনে করছে এটি আত্মহত্যা। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের পরেই জানা যাবে, ম্যাথু খুন হয়েছেন না আত্মহত্যা করেছেন।
কেরলের বাসিন্দা ম্যাথু ১৩ বছর ধরে সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ ছিলেন। গত মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত একটি ‘স্টিং অপারেশন’-এর ভিডিও-তে দেখা যায়, উচ্চপদস্থ সেনাকর্তাদের ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসা বা কুকুরকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার মতো ব্যক্তিগত কাজেও ম্যাথুর মতো নিম্ন পদমর্যাদার সেনাকর্মীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। ভিডিও-তে অবশ্য ম্যাথুর মুখ ঝাপসা করে দেওয়ায় প্রথমে তাঁকে চিহ্নিত করা যায়নি। কিন্তু গত শনিবার ম্যাথু এক ঊর্ধ্বতন কর্তাকে ‘সরি’ লিখে মেসেজ পাঠান।
অভিযোগ ওঠে এর পরেই সেনাকর্তারা ম্যাথুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁর উপর মানসিক চাপও সৃষ্টি করা হচ্ছিল। সেই কারণেই গত শনিবার তিনি ব্যারাক ছেড়ে পালান। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনা।
ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশ আমলের এই ‘সহায়ক’ প্রথা নিয়ে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেনাবাহিনীতে ‘সহায়ক’ প্রথার আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি না, ওঠে সেই প্রশ্নও। যেমন প্রশ্ন উঠেছিল বিএসএফ জওয়ান তেজবাহাদুর যাদবের ভিডিও পোস্ট ঘিরে। যেখানে খাবারের মান নিয়ে নালিশ জানিয়েছিলেন তিনি। সেই তেজবাহাদুরই ফের একটি নালিশ-ভিডিও পোস্ট করে জানিয়েছেন, তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন করছে বাহিনী। যদিও এমন নালিশ-ভিডিও পোস্ট করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সেনাপ্রাধান বিপিন রাওয়াত। সম্প্রতি তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অভিযোগ জানানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। সেনাবাহিনীতে অভিযোগ জানানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। প্রত্যেককেই তা মেনে চলতে হবে। আর ‘সহায়ক’ রাখার প্রথাও স্বাভাবিক বলে জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান।
‘সহায়ক’ ম্যাথুর মৃত্যুর খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। ম্যাথুর ভাই জিজো জোসে বলেন, ‘‘খবরটা পেয়ে আমরা হতভম্ব। পরিবারের সঙ্গে ম্যাথুর কোনও সমস্যা ছিল না। গত শুক্রবারও ম্যাথু বাড়িতে ফোন করেছিলেন। কোনও সমস্যার কথা তখন বলেননি। তার পর থেকেই অবশ্য ম্যাথুর ফোন বন্ধ ছিল।’’ ম্যাথুর একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‘‘দেখা যাক ওই ডায়েরিতে ম্যাথু কিছু লিখে রেখে গিয়েছেন কি না’’, বলেছেন জিজো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy