সুকন্যা মণ্ডল (বাম দিকে) এবং অনুব্রত মণ্ডল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল দিল্লির রউস অ্যাভিনিউ আদালত। অনুব্রতের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানিও স্থগিত হয়ে যায় বৃহস্পতিবার। সোমবার থেকে আদালতে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় আগামী এক মাসে আর এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই মনে করা হচ্ছে, গোটা জুন মাসে তিহাড় জেলেই কাটাতে হবে অনুব্রত এবং সুকন্যাকে।
বৃহস্পতিবার সুকন্যার জামিনের বিরোধিতা করে ইডির তরফে দাবি করা হয় যে, অনুব্রতের ব্যবসায় ‘সক্রিয় ভাবে’ জড়িত ছিলেন তাঁর মেয়ে। ভোলে বোম রাইস মিলে মায়ের সঙ্গে অংশীদার ছিলেন সুকন্যাও। আগের দিন শুনানিতে দু’পক্ষের সওয়াল শুনে রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারক। অবশেষে বৃহস্পতিবার অনুব্রত-কন্যার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লির আদালত। মেয়ের মতো শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। বৃহস্পতিবার যার শুনানি শুরু হয় আদালতে কিন্তু মাঝপথেই শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান বিচারক।
গত ২৬ এপ্রিল দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে সুকন্যাকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়। ৩১ বছরের সুকন্যাকে তিন দিন নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তার পর থেকে সুকন্যা তিহাড় জেলে। ইতিমধ্যে ইডি অনুব্রতের পাশাপাশি সুকন্যার বিরুদ্ধেও চার্জশিট দায়ের করেছে। সুকন্যার তরফে জামিনের আর্জিতে বলা হয়, ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করে ফেলেছে, তা হলে আর কেন সুকন্যাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হবে? সুকন্যার বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে বলেও জামিনের আর্জিতে জানানো হয়েছিল।
সূত্রের খবর, ইডি দাবি করে অনুব্রতের যাবতীয় ব্যবসা, গরু পাচার থেকে আয়ের কালো টাকা দেখাশোনা করতেন সুকন্যা। কেষ্ট-কন্যা নিজে দাবি করেছিলেন, তাঁর নামে ভোলে বোম চালকল, এএনএম অ্যাগ্রোটেক, নীড় ডেভেলপারের মতো সংস্থা থাকলেও এ সবের বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। সবটাই তাঁর বাবা জানেন। তিনি শুধু ব্যাঙ্কের নথি, চেকবুকে সই করে দিতেন। তাঁর অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা জমা হওয়ার বিষয়েও তাঁর কিছু জানা ছিল না। কিন্তু অনুব্রত, মণীশ কোঠারি দু’জনেই জানিয়েছেন, সুকন্যা ব্যবসায়িক লেনদেন, ব্যাঙ্কের লেনদেন দেখাশোনা করতেন। অনুব্রতের বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎবরণ গায়েনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনি হিসাবে সুকন্যার নাম ছিল। সুকন্যার ইমেল আইডি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎবরণ গায়েনের আয়কর রিটার্ন জমা করা হত। সুকন্যার ডাকনাম ‘রুবাই’ ব্যবহার করে সেই ইমেল আইডি তৈরি হয়েছিল। অনুব্রত-সুকন্যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, অনুব্রতের বেআইনি আয়ের মধ্যে গরু পাচারের ঘুষের টাকার সঙ্গে জেলা পরিষদ থেকে তোলাবাজি, সরকারি প্রকল্পের বিনিময়ে ঘুষের টাকাও থাকত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy