Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Manipur Violence

সবচেয়ে পছন্দ রাইফেল, লিখছে মণিপুরের শিশুরা 

খেলনা চাই না কারও। বড় হয়ে ডাক্তার, শিক্ষক বা পুলিশ হতে চাওয়ার চেনা জবাবগুলোও লিখছে না কেউ। লড়াইয়ের আবহে শৈশব খুইয়ে ফেলা বাচ্চাদের মনে হিংসার বীজই বপন হয়েছে।

Manipur

ত্রাণ শিবিরে গান। মণিপুরে শিশুদের শান্তির বার্তা দিতে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

তোমার সবচেয়ে পছন্দের জিনিস কী?

জবাবে ষষ্ঠ শ্রেণির ছেলেটা খাতায় লেখে—রাইফেল।

তুমি বড় হয়ে কী শিখতে চাও?

৮-৯ বছরের ছেলেমেয়েদের খাতায় মোটামুটি একই উত্তর—শিখতে চাই গুলি চালানো, যুদ্ধ করা।

মণিপুরে স্কুলে ক্লাস চালু হলেও বহু ছাত্রছাত্রী এখনও ত্রাণ শিবিরেই আছে। অনেকের ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছে। পরিবার নিঃস্ব। বইখাতাও নেই। পাশাপাশি চোখের সামনে গুলিচালনা, খুন, বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা দেখে অনেকের মন এখনও ত্রস্ত। তেমন সব শিশুর মনে ভরসা ফেরাতে ও লেখাপড়ার ক্ষতি পূরণ করতে ত্রাণ শিবিরগুলিতে বিশেষ শিক্ষা অভিযান শুরু হয়েছে। শিশুদের ফের লেখাপড়ায় ফেরাতে গিয়ে চমকে উঠেছেন অভিযানের ৪৩ জন সদস্য। কারণ, খেলনা চাই না কারও। বড় হয়ে ডাক্তার, শিক্ষক বা পুলিশ হতে চাওয়ার চেনা জবাবগুলোও লিখছে না কেউ। লড়াইয়ের আবহে শৈশব খুইয়ে ফেলা বাচ্চাদের মনে হিংসার বীজই বপন হয়েছে। যা দূর করতে কাজে নেমেছেন ‘সিস্টেম ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড রিজুভেনেশন অব এডুকেশন’ বা স্টার প্রকল্পের কর্মীরা। প্রকল্পের অধিকর্তা অমৃতা থিংগুজাম জানান, “আপাতত বাচ্চাদের অশান্ত মনকে শান্ত করতেই মন দিয়েছি আমরা। শিশু মনোবিজ্ঞানে আমরা দক্ষ নই ঠিকই তবে শিবিরে খেলাধুলোর আয়োজন করে, অস্থায়ী ক্লাসরুম বানিয়ে আমরা তাদের মূল স্রোতে ফেরাতে চাইছি। বিভিন্ন শিবিরে ঘুরে বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি, তাদের মনে প্রতিশোধস্পৃহা কাজ করছে। সকলেরই চাই আগ্নেয়াস্ত্র। ছেলেমেয়েদের অনেকেরই বাড়ি পুড়ে গিয়েছে।”

এ দিকে আজ মণিপুরে দুষ্কতীদের গুলিতে জখম হয়েছে ১১ বছরের এক কিশোরী। তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ইম্ফলের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মণিপুরের খোংসাং স্টেশনে ট্রেনের মাধ্যমে অস্ত্র আনা হয়েছে এমন অভিযোগ তোলায় কুকি যৌথ মঞ্চের মুখপাত্র গিনঝা ভুয়ালজংয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। মণিপুরি বণিক সংস্থাগুলিও গিনঝার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বলে, নিত্য ও খাদ্যপণ্যের সমস্যায় জর্জরিত রাজ্যে ট্রেনের মাধ্যমে প্রথম বার পণ্য আনা হয়েছে। তা নিয়েও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে পরিস্থিতি জটিল করছে কুকিরা। সোমবার কাংপোকপিতে কুকি-জো মহিলারা বিরাট প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে দাবি করেন, মণিপুর সরকার টেংনাওপল জেলায় মেইতেই পুলিশবাহিনী পাঠানোর যে চেষ্টা করছে তা সহ্য করা হবে না। কুকিদের দাবি আজকের মধ্যে টেংনাওপল থেকে সব মেইতেই পুলিশ ও কমান্ডো প্রত্যাহার না করা হলে গণ-আন্দোলন শুরু হবে। তারা এ নিয়ে অমিত শাহকেও স্মারকলিপি দেয়। পাশাপাশি আজ সেনাবাহিনীর কনভয়কে
স্বাগত জানান কুকি মহিলারা। বিশ্ব মেইতেই কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্মারকপত্র পাঠিয়ে দাবি করে অবিলম্বে সব কুকি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি শেষ করে দিয়ে তাদের দমন করতে হবে।

এ দিকে, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে মিজ়োরাম সরকারও সে রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া
মায়ানমার ও বাংলাদেশের শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ করার কাজ শুরু
করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Manipur Violence Manipur Relief Camp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy