হরিশ্চন্দ্র বিশ্বকর্মা (বাঁ দিক)। মুখতার আনসারি (ডান দিক)। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ি তৈরি করার জন্য ইট এনে রেখেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী হরিশ্চন্দ্র বিশ্বকর্মা। সেই ইট জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে পাশের জমিতে স্কুল তৈরির কাজে লাগানো হয়েছিল। সেই স্কুল আবার ঘটা করে উদ্বোধনও করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মাউয়ের বিধায়ক মুখতার আনসারি। হরিশ্চন্দ্রের অভিযোগ ছিল, মুখতারের লোকেরাই তাঁর বাড়ি থেকে ২০০০ ইট তুলে নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন, যে জমিতে স্কুল তৈরি করা হয়েছে, সেটি আসলে সরকারি জমি। সেই জমি দখল করেই স্কুল বানানো হয়েছিল।
সাল ২০০৩। আর সেই প্রথম মুখতারের বিরুদ্ধে জোর করে জমি দখলের মামলা করার সাহস দেখিয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্র। ২০০৫ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশ আর পঞ্জাবের বিভিন্ন জেলে বন্দি ছিলেন মুখতার। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের বান্দায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মুখতারের মৃত্যুর খবর তিনিও পেয়েছিলেন। এক সংবাদমাধ্যমে হরিশ্চন্দ্র বলেন, “এক দিন সকলেই মরতে হবে। এটা আমার, আপনার সকলেরই কাহিনি।”
মাউয়ের পাঁচ বারের বিধায়ক ছিলেন মুখতার। হরিশ্চন্দ্র বলেন, “মুখতারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করেছিলাম। তার জন্য মুখতারের লোকেরা হুমকি দিতেন। কিন্তু তাঁদের সেই হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম।” হরিশ্চন্দ্র মামলাটি জিতেছিলেন। সেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাউ প্রশাসন সেই সম্পত্তি নিজেদের হেফাজতে নেয়। কিন্তু মুখতারের বিরুদ্ধে মামলা লড়ার টাকা কোথা থেকে পেলেন? এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রকে জিজ্ঞসা করা হলে তিনি বলেন, “নিজের পেনশনের টাকা দিয়ে মামলা চালিয়েছি।” অনেক লড়াই, হুমকি এবং চোখরাঙানি সহ্য করেও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মামলা জিতেছিলেন। কিন্তু যে ২০০০ ইট তাঁর বাড়ি থেকে চুরি করা হয়েছিল, সেই ইট আর ফেরত পাননি। সেটাই আক্ষেপ হরিশ্চন্দ্রের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy