মতাদর্শগত ভাবে বিপরীত মেরুতে অবস্থান শিবসেনা ও এনসিপি-কংগ্রেস শিবিরের। কিন্তু দুই শিবিরকে এক বিন্দুতে নিয়ে এল ভূমিপুত্রদের নিয়ে সংরক্ষণের রাজনীতি। শপথ নিয়েই সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত হিসাবে রাজ্যের সরকারি চাকরিতে ভূমিপুত্রদের ৮০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবছে তিন দলের জোট। সম্মতি এসেছে কৃষকদের ঋণ মকুব করার প্রশ্নেও।
আজ দুপুরে বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পরেই নতুন করে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করে কংগ্রেস-এনসিপি ও শিবসেনা। সূত্রের খবর, এনসিপি ও কংগ্রেস আজ ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচির তালিকা চূড়ান্ত করে তা ছাড়পত্রের জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে পাঠায়। তিনি খসড়া তালিকায় সম্মতি দিতেই তা নিয়ে সন্ধ্যায় শিবসেনার সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিন দলের নেতারা। সূত্রের খবর, ওই কর্মসূচিতে কংগ্রেস ও এনসিপির পক্ষ থেকে রাজ্যের ভূমিপুত্রদের চাকরিতে আশি শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। শিবসেনাও নীতিগত ভাবে শিক্ষা ও চাকরিতে ভূমিপুত্রদের সংরক্ষণের পক্ষে। বস্তুত উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মানুষেরা এসে ভূমিপুত্রদের চাকরি ‘দখল’ করে নিচ্ছেন, এই নিয়ে আন্দোলন থেকেই শিবসেনার জন্ম। একই সঙ্গে অকাল বর্ষণে কৃষকদের যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ ও ঋণ মাফ করার বিষয়টিও অভিন্ন কর্মসূচিতে জায়গা পেয়েছে। শিবসেনা নেতা আব্দুল সাত্তার জানান, ‘‘কৃষকদের ঋণ মকুব করা নতুন সরকারের অন্যতম প্রাথমিক কাজ হবে।’’
আজ তিন দলের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছে, জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। উপমুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় সম্ভাব্য নাম দু’দলের পরিষদীয় দলনেতার— এনসিপির জয়ন্ত পাটিল ও কংগ্রেসের বালাসাহেব থোরাট। মন্ত্রক বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে যে সূত্র মেনে এগোচ্ছে তিন দল, তা হল, শিবসেনার জন্য ১৫টি মন্ত্রক এবং এনসিপি ও কংগ্রেসের জন্য যথাক্রমে ১৪টি ও ১২টি মন্ত্রক। রাতে তিন দলের প্রতিনিধিরা সরকার গড়ার দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারীর সঙ্গে দেখা করেন। এ দিকে রাজ্যের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আজ রাতে দেবেন্দ্র ফডণবীসের নেতৃত্বে দলীয় দফতরে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্বও। দেবেন্দ্রের কথায়, ‘‘এই সরকার ক’দিন চলবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তিন চাকার সরকার বেশি দিন চলতে পারে না।’’
এ দিকে আজ উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শরদ শিবিরে ফিরে আসার জন্য বার্তা পাঠিয়েছেন অজিত। এমনকি তিন দলের বৈঠকে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অন্য দলেরা তাতে আপত্তি তোলে। তবে সূত্রের খবর, রাতেই কাকা শরদের সঙ্গে দেখা করেন অজিত। দলের নেতা ছগন ভুজবলও বলেন, ‘‘অজিত পওয়ার এলে দল আরও শক্তিশালী হবে।’’