কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।—ছবি পিটিআই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নথি তো খণ্ডন করেইছিল, এ বার অমিত শাহের বক্তব্যকে খণ্ডন করলেন খোদ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও। দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ দাবি করেছিলেন, জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার তথা এনপিআরের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু রবিশঙ্কর আজ জানালেন, এনআরসি তৈরির কাজে এনপিআরের তথ্য ব্যবহার হতেও পারে, আবার না-ও হতে পারে। সব মিলিয়ে ফের এনপিআর ঘিরে এক প্রস্ত ধোঁয়াশা তৈরি করল সরকার নিজেই। কংগ্রেসের মতে যা কি না ভারতবাসীকে ‘বোকা বানানো’ ছাড়া কিছু নয়। এই নিয়ে একটি বিদ্রুপভরা টুইটও করেছেন কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।
বিরোধীদের প্রশ্ন, জনগণনা যেখানে হচ্ছেই, সেখানে এনপিআর তৈরি করার দরকারটা কী? রবিশঙ্কর আজ বলেন, ‘‘আদমশুমারির তথ্য প্রকাশ্যে আনা যায় না। সেখানে এনপিআরের তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সরকার।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘দরকার পড়লে এনপিআরের কিছু তথ্য এনআরসিতে ব্যবহার করা হতে পারে। আবার না-ও হতে পারে।’’ অথচ, গত সপ্তাহে দেশ জুড়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে যখন আন্দোলন-বিক্ষোভ তুঙ্গে, তারই মধ্যে এনপিআর পরিমার্জন খাতে অর্থ বরাদ্দ করেছে মোদী মন্ত্রিসভা। বিরোধীদের মতে, সরকার কার্যত এ ভাবে এনআরসি করার রাস্তাই খুলে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যাতে জলঘোলা না-হয় তার জন্য তড়িঘড়ি শাহ একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে জানান, এনপিআর এবং এনআরসির মধ্যে ‘কোনও সম্পর্ক নেই’। দু’টি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু আজকের পর মোদী মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রীর মধ্যে এনপিআর নিয়ে কে সত্য বলছেন তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তৈরি হল। প্রকাশ্যে এল মন্ত্রিসভার মতপার্থক্য।
শাহ দু’টি বিষয়ের মধ্যে ‘সম্পর্ক নেই’ বললেও ২০০৩ সালে বাজপেয়ী সরকারের আমলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনেই বলা হয়েছিল, এনপিআর হচ্ছে এনআরসির প্রথম ধাপ। পরবর্তী সময়ে মোদীর প্রথম দফার সরকারের আমলে এই কথাটিই একাধিক বার বলেছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিরোধীরা এনআরসি নিয়ে আপত্তি তুললেও মোদী বলেছেন, এ নিয়ে সরকার এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু রবিশঙ্কর এ দিন স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, গোটা দেশের এনআরসি তৈরি করতে সরকার বদ্ধপরিকর। তাঁর কথায়, ‘‘এনআরসি-র সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া।’’ এনআরসি এবং এনপিআর নিয়ে মোদী সরকার কী ভাবে ভারতবাসীকে ‘বোকা’ বানাচ্ছে তা আজ একটি টুইটে তুলে ধরেছেন কংগ্রেসের সুরজেওয়ালা। রবিশঙ্করের এ দিনের বক্তব্য নিয়ে একটি খবরের উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন:
ভারতকে বোকা বানানোর ক্রম—
১) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘‘সারা ভারতে এনআরসি।’’
২) বিজেপি সরকার ৯ বার বলল, ‘‘সারা ভারতে এনআরসি।’’
৩) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা খণ্ডন করে প্রধানমন্ত্রী বয়ান, ‘‘এনআরসি নয়।’’
৪) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘‘এনপিআর এবং এনআরসির মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই।’’
৫) প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে আইনমন্ত্রী বললেন, ‘‘এনআরসির কাজে এনপিআরের তথ্য।’’
আরও পড়ুন: মোদীর ‘মন কি’- উদ্বেগ ছাত্রযুবরাই!
আরও পড়ুন: জমল ডাল লেক, সতর্কতা দিল্লিতে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy