Advertisement
E-Paper

রামলালার স্নান ১০১ কিলো মধুতে! পাঠিয়েছেন দিলীপ, জমছে উপহারের পাহাড়, মোদীরাজ্যের ‘লম্বা’ চমক

অযোধ্যা শহরে সব আড্ডাতেই আলোচনায় রামমন্দির। সেটা স্বাভাবিক। তবে সেই আলোচনার মধ্যে বেশি করে জায়গা করে নিচ্ছে রামলালার পাওয়া উপহার-চরিত। চোখে না দেখলেও সবার সব জানা।

Ramlala will bath with honey of Sunderban in Ayodhya

—প্রতীকী চিত্র।

পিনাকপাণি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩৯
Share
Save

অযোধ্যা শহর ছেয়ে রয়েছে অশোক সিঙ্ঘলের কাটআউটে। তাঁর নেতৃত্বেই চলেছিল রামজন্মভূমি আন্দোলনের মূল পর্ব। সবচেয়ে বেশি কাটআউটের ভিড় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মূল দফতরের সামনে। করসেবকদের স্মৃতিতে ওই কার্যালয়ের নামই করসেবকপুরম। মূল প্রবেশপথের নাম ‘অশোক সিঙ্ঘল দ্বার’। তারই ভিতরে জমা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রামলালার জন্য উপহার। দুটো বড় ঘর পুরো বোঝাই হয়ে গিয়েছে। সেখানে রয়েছে বাংলার উপহারও। পরিষদের বাঙালি নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ জানালেন, বাংলার মধু এসেছে অযোধ্যায়।

সোমবার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’। ওই দিল রামলালাকে বিভিন্ন নদী, সাগর, হ্রদের জলে স্নান করানো হবে। ঘি, মধু, ডাবের জল সব চাই। কোন রাজ্য থেকে কী আসবে আগে থেকে পরিষদই ঠিক করে নিয়েছিল। বাংলার ভাগে পড়ে মধু। আসলে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে যে মধু পাওয়া যায়, তা-ই দেশের শ্রেষ্ঠ। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। শচীন্দ্রনাথ বললেন, ‘‘কোন রাজ্য থেকে কী আসবে সেটা ঠিক করার পরে কে সেটা ভাল পারবেন বুঝে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রামজন্মভূমি আন্দোলনেও দিলীপ ঘোষ যুক্ত ছিলেন। তাঁকেই বাংলার মধুর দায়িত্ব দেওয়া হয়।’’ বিহারের ঘি, কর্নাটকের চন্দন, কেরলের ডাব— সব এসে গিয়েছে অযোধ্যায়।

সবই এসেছে বড় পরিমাণে। যেমন সুন্দরবনের মধু রয়েছে ১০১ কেজি। অযোধ্যা থেকে দিলীপকে ফোন করতেই তিনি বললেন, ‘‘রামলালার অভিষেক মানে একটা আন্তর্জাতিক ব্যাপার। শ্রেষ্ঠ উপকরণ যেমন চাই, তেমনই পরিমাণেও তো বিরাট হতে হবে। সেই হিসাবেই পাঠানো হয়েছে।’’ একটা সময়ে দিলীপ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রচারক হিসাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে ছিলেন। সেই হিসাবে বিজেপির আদি নেতাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ এখনও খুব বেশি। দিলীপ বলেন, ‘‘ওখানকার কার্যকর্তাদের ছ’মাস সময় লেগেছে এই মধু সংগ্রহ করতে। তার পরে সব একত্র করে পাঠানো হয়েছে অযোধ্যায়। আমরা এখন অযোধ্যায় যাচ্ছি না বটে, তবে আমাদের নৈবেদ্য পৌঁছে গিয়েছে।’’

তবে রামলালার অভিষেকের আয়োজনের থেকেও অযোধ্যায় এখন বেশি আলোচনা ধূপকাঠি নিয়ে। যে ধূপকাঠি আসছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাত থেকে। স্থানীয় বিজেপি কর্মী ধর্মেন্দ্র সিংহ বললেন, ‘‘এক একটা ১০৮ ফুট লম্বা ধূপকাঠি। সেগুলো রাখা থাকবে রামজন্মভূমি ট্রাস্টের কাছে। ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও তার গন্ধ পাওয়া যাবে।’’ শুধু চমকে দেওয়া দৈর্ঘ্যই নয়, ধূপকাঠিগুলো চওড়ায় তিন ফুটের বেশি। তৈরি হয়েছে গুজরাতের বরোদায়। পরিষদের কর্মীরাই নাকি তৈরি করেছেন। তার সবটাই প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। গোবর, ঘি, ফুলের রস এই সব দিয়ে। এক-একটি ধূপ মাসখানেক ধরে জ্বলবে।

সেই ধূপকাঠির ধোঁয়া কতটা হবে তা অবশ্য ধর্মেন্দ্রের জানা নেই। তবে জানালেন, অযোধ্যা শহরে ধুম লেগেছে উপহার আসার। দেশের সব রাজ্য থেকে তো আসছেই, আসছে বিদেশ থেকেও। বিদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপহার এসেছে নেপাল থেকে। ধর্মেন্দ্রর কথায়, ‘‘আসলে সীতা মায়ের বাপের বাড়ি তো জনকপুর ধামে। সে তো এখন বিদেশ হয়ে গিয়েছে। তিন হাজারের বেশি রকমের উপহার এসেছে সেখান থেকে।’’ জামাই রামের জন্য গয়নাগাটিও এসেছে বিস্তর। সে সব দামি রত্নখচিত ‘তত্ত্ব’ দেখা না গেলেও, ছবি ঘুরছে মোবাইলে মোবাইলে। মেয়ে সীতার জন্যও এসেছে। সে সব এখন রয়েছে অযোধ্যার জানকীমহলে।

মুখে মুখে ঘুরছে আরও অনেক উপহারের কথা। ২১০০ কিলো ওজনের ঘণ্টা, সাত হাজার কেজির হালুয়া থেকে পাঁচ হাজার হিরে বসানো হার! পাঠিয়েছেন সুরাতের হিরে ব্যবসায়ীরা। রাজস্থান থেকে এসেছে একটি সিংহাসন। সোনায় মোড়া আট ফুট লম্বা মার্বেল পাথরের সিংহাসনে বসবেন না রামলালা, তবে পর্যটকদের জন্য অন্য আকর্ষণ তৈরি করবে অযোধ্যায়। তালা বানানোর জন্য বিখ্যাত আলিগড়। সেখান থেকে বিশাল একটা তালাও এসেছে। ১০ ফুট লম্বা আর সাড়ে চার ফুট চওড়া সেই তালার ওজন নাকি ৪০০ কেজি। কোথায় লাগানো হবে কেউ জানেন না। আসলে যা যা এসেছে সবটাই বিশালত্ব প্রমাণের লক্ষ্যে।

এই সব উপহারের কথা মাথায় রাখলেও বিজেপির প্রচারে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর ২২ হাজার কোটি। সেটাই তো লোকসভা ভোটে বলতে হবে। ধূপ, ঘণ্টা, মধু তো আর ভোট আনবে না। ধর্মেন্দ্রর কথায়, ‘‘মোদীজি অযোধ্যার জন্য অনেক করেছেন। নতুন স্টেশন, বিমানবন্দর, নিউ অযোধ্যা টাউনশিপ সব মিলিয়ে ২২ হাজার কোটি টাকা।’’ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও পিছিয়ে নেই। আর এক বিজেপি নেতা রাকেশ পণ্ডিত বললেন, ‘‘প্রতি মাসে যোগীজি অযোধ্যায় আসেন। শহরের চেহারাই বদলে দিয়েছেন। এখন তো ভিড়। উদ্বোধনের পরে এলে বুঝতে পারবেন গোটা শহরে কত কাজ হয়েছে।’’ ধর্মেন্দ্র কিংবা রাকেশদের এমনটাও দাবি, মোদী আর যোগী না-থাকলে এমন মন্দির হত না! কথা শুনে মনে হল, এখন থেকেই ভোটের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। রামলালা যেন ভোটের ‘স্টার ক্যাম্পেনার’। মন্দির পদ্মমঞ্চ।

Ayodhya Ram Mandir Ayodhya Ram Temple Ram Mandir Inauguration Dilip Ghosh BJP Leader Ram Lalla

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।