লোকসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।—ছবি পিটিআই।
কেরল এবং বাংলা জয় করতে পারলে তবেই ‘শিখরে’ পৌঁছনো যাবে। লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই বলেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতায় উঠে এল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কেরলের জনপ্রিয় সমাজ সংস্কারক শ্রী নারায়ণ গুরুর উদ্ধৃতি। ‘নতুন ভারতের’ স্বপ্ন নির্মাণের ব্যাখ্যায় এই দু’জনের উদ্ধৃতি মূল ভাষায় পড়েছেন রাষ্ট্রপতি।
গোটা বিষয়টিতে দুই আর দুইয়ে চার করছে রাজনৈতিক শিবির। সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরে সংসদীয় দলের কার্যালয়ে এসে বসেন সনিয়া এবং রাহুল গাঁধী। ছিলেন দলের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী। অধীরই প্রথম উল্লেখ করেন যে, রাষ্ট্রপতির আজকের বক্তৃতায় বাংলা এবং কেরলকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে। একমত হন সনিয়া-রাহুল।
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে অধীর বলেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই মোদী সরকার বাংলা এবং কেরলকে নিশানা করতে চাইছে।’’ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এই দু’টি রাজ্যই আগে সিপিএমের গড় ছিল। আজ তারা নেই। কিন্তু রাষ্ট্রপতির এই বক্তৃতার মাধ্যমে বিজেপি এই রাজ্য দু’টির প্রসঙ্গ এনে তাদের পাল্টা উপহার দিতে চেয়েছে! কারণ সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটে সিপিএম বিজেপি-কে যারপরনাই সাহায্য করেছে!’’
কোবিন্দের বক্তৃতায় বলা হয়েছে যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন ভেবেছিলেন, নতুন ভারত সেই আদর্শের দিকেই এগোবে। সেই আদর্শের বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বাংলা উচ্চারণে বলেন ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির।’ ২০১৪ সালে তাঁর সরকার রাষ্ট্রগঠনের ভাবনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বলে জানিয়ে কোবিন্দ বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানোর পরে এ বার শক্তিশালী, নিরাপদ, সমৃদ্ধ এবং ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর মন্ত্র নিয়ে সরকার এগোবে। এই প্রসঙ্গে কেরলের কবি, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক শ্রী নারায়ণ গুরু-র মালয়ালি ভাষার লাইন উদ্ধৃত করেছেন রাষ্ট্রপতি। যার অর্থ, সেটাই আদর্শ জায়গা যেখানে অর্থ, জাত এবং ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের ভাইয়ের মতো থাকতে পারে। প্রসঙ্গত, নারায়ণ গুরু ছিলেন এজওয়া জাতের। তথাকথিত উচ্চবর্ণের লোকেদের হাতে সে সময়ে নির্যাতন সহ্য করতে হত এদের।
জাতপাতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই সমাজ সংস্কারকের দর্শনকে সিপিএম দীর্ঘদিন ধরে কেরলে দলের প্রচারে কাজে লাগিয়েছে। সূত্রের দাবি, কেরলে গেরুয়া পতাকা ওড়াতে মরিয়া বিজেপি এ বার সেই নারায়ণ গুরুকে নিজেদের অস্ত্র করতে চাইছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy