নলিনী শ্রীহরণ। —ফাইল চিত্র।
জেলে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা রাজীব গাঁধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত নলিনী শ্রীহরণের। গত ২৯ বছর ধরে জেল খাটছেন তিনি। সেই অবস্থাতেই সোমবার আত্মহত্যা করতে যান বলে জানা গিয়েছে।
এই মুহূর্তে ভেলোর মহিলা সংশোধনাগারে রয়েছেন নলিনী। সেখানেই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী পুগালেন্থি। প্রায় তিন দশক ধরে জেলে বন্দি থাকলেও এই প্রথম নলিনী এমন চরম পদক্ষেপ করতে যান বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুগালেন্থি বলেন, ‘‘নলিনী আত্মঘাতী হতে গিয়েছিলেন বলে গতকাল রাতে খবর পাই আমরা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অফিসার এবং জেল আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি আমরা। তাঁরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ‘পঞ্জাবি এবং জাঠদের বুদ্ধি কম’, ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিপ্লব দেবের
পুগালেন্থি আরও বলেন, ‘‘সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নলিনীর নামে জেল আধিকারিকদের কাছে নালিশ করেছিলেন এক বন্দি। তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গত কাল রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তা নিয়ে নলিনীর সেলে পৌঁছন কারাধ্যক্ষ। সেইসময় নলিনীর সঙ্গে কথ কাটাকাটি হয় তাঁর। তাতেই মুষড়ে পড়েন নলিনী এবং আত্মহত্যা করতে যান।’’
তবে শুধুমাত্র কথা কাটাকাটির জেরে নলিনী এমন পদক্ষেপ করতে যাবেন, তা মানতে নারাজ পুগালেন্থি। তিনি বলেন, সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কথা বিশ্বাস হচ্ছে না আমাদের। প্রায় তিন দশক ধরে জেলে রয়েছেন উনি। আগে কখনও এমন কিছু করতে যাননি। আমার মনে হয়, জেলে ওঁর উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। আমরা আসল কারণ জানতে চাই।’’
রাজীব গাঁধী হত্যা মামলায় সাজা খাটছেন নলিনীর স্বামী মুরুগানও। স্ত্রী আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন জানতে পেরে, ফোনে পুগারেন্থির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। নলিনীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। আইনি পথে সেই মতো এগনো হবে বলে জানিয়েছেন পুগালেন্থি। তিনি বলেন, ‘‘ভেলোর জেল থেকে নলিনীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানাব আমরা। ওখানে উনি নিরাপদ নন। জেল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, নলিনীকে চেন্নাইয়ের পুঝল সংশোধনাগারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক।’’
আরও পড়ুন: গহলৌতের সহকারীকে সিবিআইয়ের জেরা, বৈঠকে কংগ্রেস
১৯৯১ সালের ২১ মে শ্রীপেরুম্বুদুরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এলটিটিই জঙ্গিদের ঘটানো আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর। এলটিটিই-র সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় নলিনী ও তাঁর স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে বিশেষ টাডা আদালত। প্রথমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁদের, পরে তা কমিয়ে যাবজ্জীবনের সাজা দেওয়া হয়। সেই থেকে নলিনী এবং তাঁর স্বামী মুরুগানের সঙ্গে যাবজ্জীবনের সাজা খাটছেন এজি পেরারিবালন, সান্থান, জয়কুমার, রবিচন্দ্রণ এবং রবার্ট পায়াসও।
নিজেদের রাজনৈতিক বন্দি দাবি করে ২০১০ সালে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। নলিনীর যুক্তি ছিল, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরাও ১৪ বছরে ছাড়া পেয়ে যান। সেখানে তিনি ২০ বছর জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু তামিলনাড়ুর তৎকালীন সরকার সেই আবেদন খারিজ করে। মুক্তির দাবি জানিয়ে গতবছর জেলে অনশনও করেন নলিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy