রাহুল গাঁধী।
মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফল করেছে কংগ্রেস। ফলপ্রকাশের দু’দিন পরও দলের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানাননি রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বাসভবনে আজ সকালের বৈঠকে এ নিয়ে অবশ্য উচ্চবাচ্য হয়নি। কংগ্রেসের অন্দরে চাপা সুরে প্রশ্ন উঠছে, দুই রাজ্যের ভোটে প্রবীণেরা বাজিমাত করায় এখন কি দলে রাহুল ‘পরাজিত নায়ক’?
দুই রাজ্যের ফলাফল শতাব্দী প্রাচীন দলে বহু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চর্চা শুরু হয়েছে, কংগ্রেসের রাশ কি পুরোপুরি প্রবীণদের হাতে চলে গেল? রাহুলের ফেরার পথ কি আপাতত বন্ধ? অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া যখন অসুস্থ, তখন তিনি ইস্তফা দিয়ে পাকাপাকি একজন সভাপতির জন্য ভোট করাচ্ছেন না কেন? সাংবাদিকদের থেকে এই প্রশ্নগুলিই আজ শুনতে হল এ কে অ্যান্টনি, কে সি বেণুগোপাল, জয়রাম রমেশ, হরিয়ানায় সদ্য হেরে যাওয়া রাহুল-ঘনিষ্ঠ নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাকে। কিন্তু কোনও নবীন নেতা এই প্রশ্নগুলি নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখাননি। জবাব দিয়েছেন অ্যান্টনি। ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাহুল নন, তাঁরা সনিয়ার প্রতিই আস্থাশীল। অ্যান্টনির কথায়, ‘‘সনিয়া গাঁধী সর্বোচ্চ নেত্রী। যত দিন দল চাইবে, তত দিন সনিয়া গাঁধী নেতৃত্ব দেবেন। কারণ, দল যখন একসুরে তাঁকে অনুরোধ করেছে, তখনই তিনি দলের দায়িত্ব নিতে (অবসর ভেঙে) রাজি হয়েছেন।’’
মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার ভোটের ফলাফলে কংগ্রেসের অন্দরে প্রবীণদের দাপট বেড়েছে। এই প্রবীণ নেতাদের সরিয়েই সভাপতি থাকাকালীন রাহুল নবীনদের সামনে আনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। সনিয়া-পুত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অ্যান্টনি শুধু বলেছেন, ‘‘রাহুলকে নিয়ে ভাববেন না। তিনি আরও শক্তি নিয়ে ফিরে আসবেন।’’ ওয়েনাডের সাংসদ সম্পর্কে আর কোনও শব্দ ও সময় ব্যয় না করেই মঞ্চ ছেড়েছেন অ্যান্টনিরা। সাংবাদিক বৈঠকের প্রথম দিকে অ্যান্টনি অবশ্য বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসকে নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন হবেন না। দেওয়াল লিখন পড়ুন। বলা হচ্ছিল, মহারাষ্ট্র-হরিয়ানায় কংগ্রেস উড়ে যাবে। কিন্তু কংগ্রেসের উদয় হচ্ছে। হেরে গেলে সংবাদমাধ্যম দায় চাপায় ‘পরিবারের’ উপর। যেন সনিয়া-রাহুলের জন্য হেরেছে। জিতলে এমনিই জিতে গেল।’’
হরিয়ানার ভোটে কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা প্রমাণ করেছেন, তাঁকে আরও আগে দায়িত্ব দিলে তিনি বিজেপি-কে কুপোকাত করে দিতে পারতেন। মহারাষ্ট্র থেকেও প্রবীণ নেতারা হুডার মতোই ‘ফিডব্যাক’ পাঠাচ্ছেন। আর সেই বার্তাগুলি নিয়ম করে সনিয়ার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন আহমেদ পটেলরা। দলের নবীন নেতারা বলছেন, সনিয়া দুই প্রজন্মের ব্যবধান ঘোচানোর চেষ্টা করলেও তাঁর ঝোঁক প্রবীণদের দিকেই। ভোটের আগে হরিয়ানাতে রাহুল কিছু নেতাকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সনিয়া নিযুক্ত প্রদেশ সভানেত্রী শৈলজা হতে দেননি। হরিয়ানায় হেরেছেন সুরজেওয়ালাও। যদিও তাঁর পরাজয়ে দলের একাংশের হাত রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy