Advertisement
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

Rahul-Modi: চিনা দখলদারি নিয়ে সত্য বলুন, চাপ রাহুলের

রাহুল গাঁধী এ বার দাবি তুললেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে ‘চিনের দখলদারি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সত্যটিও স্বীকার করে নিন।

চিনা দখলদারি নিয়ে সত্য বলুন, চাপ রাহুলের

চিনা দখলদারি নিয়ে সত্য বলুন, চাপ রাহুলের

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪০
Share: Save:

রাহুল গাঁধী এ বার দাবি তুললেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে ‘চিনের দখলদারি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সত্যটিও স্বীকার করে নিন। বছরভর কৃষক আন্দোলনের চাপেই হোক বা উত্তরপ্রদেশ-পঞ্জাবে ভেটে জেতার রাজনৈতিক দায়ে— প্রধানমন্ত্রী কালই কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন। তবে মোদীকে চাপে রাখার প্রশ্নে কোনও বিরতি দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। বিশেষ করে রাহুল। আজ হিন্দিতে একটি টুইট করে চিনের দখলদারির প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। লেখেন, “এ বার চিনের দখলদারির সত্যও মেনে নেওয়া দরকার।”

সীমান্তের পরিস্থিতি সামলানোর প্রশ্নে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কংগ্রেস সমানেই মোদীকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। অভিযোগ তুলছে, চিনের হাতে ভারতের জমি ছেড়ে দিয়েছে তাঁর সরকার। পূর্ব-লাদাখের প্যাংগং লেক এলাকায় দ’দেশের সেনা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছিল গত বছর ৫ মে। তার পর থেকে দফায় দফায় সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চালিয়েছে দু’দেশ। বৃহস্পতিবার ফের আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে দু’দেশ। লাদাখ-সংঘর্ষের পরে এটি হতে চলেছে সামরিক পর্যায়ে ১৪তম আলোচনা। যথা সম্ভব শীঘ্র এর দিন স্থির করা হবে বলে জানিয়েছে দু’পক্ষ।

মাঝের এই দেড় বছরে প্যাংগং এলাকায় আগের অবস্থা ফেরানো গিয়েছে বলে দিল্লি দাবি করলেও, রাহুল ও কংগ্রেসের মতে, এটা সত্য নয়। তাঁদের অভিযোগ, ভারতের সেনা সেখানে আগে যতটা এলাকায় টহলদারি চালাত, এখন তার অনেকটা চিনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের ৫০-৬০ হাজার করে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করে রেখেছে ওই এলাকায়। ফলে উত্তেজনা কমার নাম নেই দেড় বছর পরেও। পূর্ব লাদাখের ওই অংশটুকু ছাড়াও আরও বেশ কিছু সংঘাতবিন্দু রয়ে গিয়েছে দু’দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায়। দু’দেশের মধ্যে ১৪তম সামরিক বৈঠকের লক্ষ্য, ওই বাকি সংঘাতবিন্দুগুলি নিয়ে বিরোধ মেটানোর রাস্তা খোঁজা।

সমস্যা শুধু যে পূর্ব লাদাখেই সীমাবদ্ধ, তা নয়। উত্তরাখণ্ড থেকে পূর্ব প্রান্তের অরুণাচল পর্যন্ত, জায়গায় জায়গায় চিনা ফৌজের ঢুকে পড়া, সেতু ভেঙে দিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার খবর সামনে এসেছে বারবার। প্রতিটি ঘটনাকে দিল্লি ‌লঘু করে দেখিয়েছে। এমনকি, অরুণাচলের ভিতরে ঢুকে চিন অন্তত দু’-দু’টি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে বলে উপগ্রহ চিত্রেই ধরা পড়েছে— এমনটা দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তার পরেও সেনার তরফে বলা হয়েছে, ওই গ্রাম দু’টি তৈরি হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ও পারে। ভারতের উপরে চিনের আগ্রাসনের কথা উঠে এসেছে আমেরিকান কংগ্রেসে পেশ করা সে দেশের প্রতিরক্ষা দফতরের বার্ষিক রিপোর্টেও।

চিন সম্পর্কে ভারতের নরম অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকেই। কৃষি আইনের ক্ষেত্রে মোদী সরকারের পশ্চাদপসরণের পরই তাই চিন প্রসঙ্গকে সামনে নিয়ে আসতে চাইছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল। কংগ্রেসের বক্তব্য, চিনের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে চলার সাহসই নেই মোদী সরকারের। চিনের সাইবার হানাদারির মোকাবিলায় তাদের কিছু অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ করা হলেও, বাস্তবে লাদাখ সংঘর্ষের পরেও দেখা গিয়েছে, চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের অঙ্ক বেড়েছে। উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের ভোটে ভাল ফল করতে মোদী, অমিত শাহ, জে পি নড্ডাদের বিজেপি এখন কৃষক আন্দোলনে বিজেপির সমর্থনের ভিতে নামা ধস সামলানোর দিকে নজর দিতে চাইছে। ঠিক এই সময়েই রাহুল যে এ বার চিন নিয়ে সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে চলেছেন, আজকের সংক্ষিপ্ত টুইটই তার ইঙ্গিত। বার্তা স্পষ্ট, জাতীয়তাবাদ বরাবরই বিজেপির বড় হাতিয়ার। সেটাই তাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে চিনকে অস্ত্র করতে চান কংগ্রেস নেতা রাহুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE