Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Rahul gandhi

কৃষক আন্দোলনের মধ্যেই রাহুলের ফের বিদেশ-যাত্রা, প্রশ্ন দলেই

দু’দিন আগেই রাহুল কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করেছিলেন।

নিজস্ব স‌ংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

আজ কংগ্রেসের ১৩৬-তম প্রতিষ্ঠা দিবস। তার আগে রাহুল গাঁধী ফের বিদেশে রওনা হলেন।

দিল্লির সীমানায় যখন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন চলছে, কংগ্রেসের অন্দরমহলে যখন নতুন সভাপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, রাহুলের অনুগামীরা আশা করছেন, তিনি দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন, তখন আচমকাই রাহুলের ফের বিদেশ সফর নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

দু’দিন আগেই রাহুল কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করেছিলেন। সে দিন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও দিল্লির রাস্তায় নেমে পুলিশের হাতে আটক হন। গতকাল কৃষকদের আন্দোলন ৩০ দিনে পড়েছে। ঠিক এই সময় রাহুলের বিদেশ সফরে কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে কংগ্রেস সত্যিই কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন।

রাহুল কোথায় গিয়েছেন, তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা শুধু বলেছেন, ‘‘অল্প কয়েক দিনের ব্যক্তিগত সফরে রাহুল গাঁধী বিদেশে গিয়েছেন। তিনি কয়েক দিন বাইরে থাকবেন।’’ কিন্তু রাহুল কোথায় গিয়েছেন, রণদীপ তার জবাব দেননি।

আরও খবর: ভিন ধর্মে বিয়েতে বাধা, পুলিশের ভয়ে উত্তরপ্রদেশ ছাড়ল যুগলরা

আরও খবর: সোমবার ক্রিকেট মাঠে একই মঞ্চে থাকতে পারেন দাদা আর অমিত শাহ

আজ সকাল থেকেই জল্পনা চলছিল, রাহুল কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে ইতালির মিলানে গিয়েছেন। কিন্তু ইতালিতে এখনও ভারতীয়দের যাতায়াতের উপরে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাহুল কী ভাবে গেলেন, সে প্রশ্ন ওঠে। কংগ্রেস নেতারা এ নিয়ে কোনও জবাব দেননি।

রাহুলের ‘এই আছি, এই নেই’ মনোভাব নিয়ে বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠছিলই। অভিযোগ ছিল, রাহুল তথা কংগ্রেসের দুর্বলতার জন্য বিরোধী জোটও দানা বাঁধতে পারছে না।

আজ কৃষক নেতারাও সেই অভিযোগ তুলেছেন। ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (টিকায়েত)-এর নেতা রাকেশ টিকায়েত রাহুলের বিদেশ-যাত্রার কথা শুনে বলেন, ‘‘উনি তো কোথাও কৃষকদের ধর্নায় যাননি। কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। আমাদের বিরোধীরা খুবই দুর্বল। তারা হাঙ্গামা করে না, লাঠি খায় না, জেলে যায় না।’’ কংগ্রেসে রাহুল-বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদরা যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসেছেন। রাহুল তাঁদের পাশেও দাঁড়াননি।

কালই শিবসেনার মুখপত্রে ইউপিএ জোটে নেতৃত্বের সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সেই সঙ্গে বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে শরদ পওয়ারের প্রশংসা করা হয়। প্রশ্ন ওঠে, শিবসেনা কি সনিয়ার পরে পওয়ারকে ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন হিসেবে দেখতে চাইছে?

কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, কিছু দিন আগে মহারাষ্ট্রে জোট সরকারের কাজ নিয়ে সনিয়া গাঁধী মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখেছিলেন। শিবসেনা তারই জবাবে রাহুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, পওয়ার নিজেও ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন হতে চান। ইউপিএ-র দলগুলির বৈঠক হলে, বৃহত্তম দলের নেতাই সভাপতিত্ব করবেন।’’ এর পরে পওয়ার নিজেই জানিয়ে দেন, তিনি ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন হতে চান না।

শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউতের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা তো বলিনি, পওয়ারকে ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন করতে হবে। আমরা বলেছি, পওয়ার একমাত্র ব্যক্তি, যাঁকে বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধী দলও গুরুত্ব দেয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁকে গুরুত্ব দেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ের পরামর্শ করবেন।’’

কংগ্রেস নিয়ে রাউতের যুক্তি, কংগ্রেসের লোকসভায় বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পাওয়ার মতোই শক্তি নেই। রাহুল গাঁধী ভাল লড়াই করছেন। তাঁর চেষ্টা প্রশংসনীয়। কিন্তু কোথাও একটা অভাব থেকে যাচ্ছে।

কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাও রাহুলের মধ্যে এই ‘অভাব’ দেখতে পারছেন।

এমনিতেই মনে করা হচ্ছিল, রাহুল ২০২২-এ সভাপতির দায়িত্ব নেবেন। কারণ, এখন যিনি সভাপতি হবেন, তাঁর মেয়াদ হবে ২০২২-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০১৭-য় সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর রাহুল গত তিন বছরই কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে দিল্লিতে থেকেছেন। এ বছর ফের বিদেশে চলে গিয়ে কি রাহুল বোঝালেন, তিনি এখনই সভাপতি হতে চান না? কংগ্রেসের অন্দরে জল্পনা চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Rahul Gandhi Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy