রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
চিন এবং পাকিস্তানকে এক বন্ধনীর মধ্যে এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দাবি, এর পরে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও যুদ্ধ হলে একযোগে লড়বে ওই দু’টি দেশ। ভারতের পক্ষে যা বেশি বিপজ্জনক। একই সঙ্গে ভারতীয় সেনার প্রতিতাঁর অগাধ আস্থা ও শ্রদ্ধাও তুলে ধরলেন তিনি।
সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশে তাওয়াং সেক্টরে চিনা সেনার হামলার পরে রাহুলের করা মন্তব্যের জেরে মাঠে নেমেছিল বিজেপি তথা মোদী সরকার। সংসদে দাঁড়িয়ে রাহুলের ওই মন্তব্যের (‘ভারতীয় সেনা মারধর খেয়েছে’) বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারত জোড়ো যাত্রায় কিছু প্রাক্তন সেনা কর্তার সঙ্গে আলাপচারিতার ভিডিয়ো আজ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাহুল গান্ধীর সেনাকে নিয়ে আবেগে বিজেপি যাতে আর জল না ঢালতে না পারে, তার চেষ্টা করছেন তিনি।
রাহুল গান্ধীর কথায়, “চিন এবং পাকিস্তান একসঙ্গে জুড়েছে। যদি কোনও যুদ্ধ বাধে তা হলে ভারতকে এই দুই দেশের সঙ্গেই লড়তে হবে। সে ক্ষেত্রে ভারতকে এক বিরাট বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। ভারত এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক জায়গায়।” এর পরে প্রাক্তন সেনা কর্তাদের উদ্দেশে তাঁর বক্তব্য, “আমার সেনার প্রতি শুধু সম্মানই নেই, ভালবাসা এবং শ্রদ্ধাও রয়েছে। আপনারা দেশকে রক্ষা করেন। আপনাদের ছাড়া এই দেশ থাকবেই না।”
চিন এবং পাকিস্তানের যুগ্ম তত্ত্ব পরে ব্যাখ্যা করতে দেখা যায় কংগ্রেস নেতাকে। তাঁর কথায়, “আগে আমাদের এই দুই শত্রু রাষ্ট্র চিন এবং পাকিস্তানকে পৃথক করে রাখা হত। প্রথম এটাই ধারণা ছিল যে কখনও যুদ্ধের দু’টি ফ্রন্ট একসঙ্গে খোলা উচিত নয়। তার পরে লোকে বলত, আড়াইটে ফ্রন্টের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে, চিন, পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদ। আর আজ চিন ও পাকিস্তান এক হয়ে গিয়ে একটাই ফ্রন্ট। যদি যুদ্ধ বাধে দু’দেশের সঙ্গেই বাধবে। তারা শুধুমাত্র সামরিক ভাবে নয়, অর্থনৈতিক ভাবেও সমন্বয় করে চলেছে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, মোদী সরকার আসার পর থেকেই ভারতের অর্থনীতি বেহাল হতে শুরু করে। দেশে অরাজকতা, যুদ্ধ, বিভ্রান্তি এবং ঘৃণার বাষ্প ছড়িয়ে পড়ে ২০১৪ সালের পর থেকে। তাঁর কথায়, “আমাদের মনে এখনও সেই আড়াই ফ্রন্টের যুদ্ধের ধারণাই রয়ে গিয়েছে। এখনও যৌথ ভাবে যুদ্ধ পরিচালনা বা সাইবার-অস্ত্র পরিচালনার কথা মাথায় নেই। চিন এবং পাকিস্তান কিন্তু একসঙ্গে আমাদের একটা বড় চমক দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আর সে কারণেই আমি বারবার বলছি সরকারের হাত গুটিয়ে বসে থাকার সময় নয় এটা। সীমান্তে কী ঘটছে তা দেশবাসীকে খোলসা করে বলা প্রয়োজন সরকারের। যা ব্যবস্থা নেওয়ার আজ থেকেই নিতে শুরু করে দিতে হবে। আসলে পাঁচ বছর আগেই তা শুরু করা উচিত ছিল, কিন্তু করা হয়নি। যদি আজও না নেওয়া হয় আমাদের বড় বিপর্যয়ের সামনে পড়তে হবে। অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখে যা ঘটছে তাতে আমি খুবই উদ্বিগ্ন।”
তাওয়াংয়ের ঘটনা নিয়ে আগেই সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তার পরে রাহুল গান্ধী এবং অন্য বিরোধীদের তোলা প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাহুলের মন্তব্যকে নিশানা করে তিনি বলেছিলেন “আমাদের পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে জওয়ানদের অপমান করার কোনও অধিকার নেই। তেরো হাজার ফুট উঁচুতে তাঁরা আমাদের সীমান্ত রক্ষা করছেন। যথেষ্ট সম্মান দিয়ে তাঁদের সম্পর্কে কথাবলা প্রয়োজন।”
বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘‘রাজনৈতিক সমালোচনা নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই, কিন্তু জওয়ানদের অসম্মান করা উচিত নয়। আমি এমনও শুনেছি যে আমার অনেক বিষয় আরও গভীরে গিয়ে বোঝা উচিত। যখন কেউ উপদেশ দেয় আমি শুধু মাথা নত করতে পারি। তবে, আমাদের জওয়ানদের জন্য পিটাই শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়।’’ তাওয়াং প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বিদেশমন্ত্রীকেও এর আগে নিশানা করেছিলেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘‘বিদেশমন্ত্রী শুধু বিবৃতি দেন, তাঁর গভীরে গিয়ে বোঝা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy