কংগ্রেসের মতাদর্শগত লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু কংগ্রেসের যারা ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধেও কংগ্রেসকে লড়তে হবে বলে আজ রাহুল গান্ধী পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের বার্তা দিলেন। দিল্লিতে প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের কর্মীদের উদ্দেশে রাহুল বার্তা দিয়েছেন, কংগ্রেস হাইকমান্ড কারও বিরুদ্ধে লড়াই করতে বারণ করেনি। হাইকমান্ডের বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে সংসদে কংগ্রেসের বোঝাপড়া হতে পারে। তার জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও বাধা নেই।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ও মল্লিকার্জুন খড়্গে তিন জনেই আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে পশ্চিমবঙ্গে যাবেন। বিধানসভা নির্বাচনকে নজরে রেখেই আজ দিল্লিতে রাহুল ও খড়্গে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছেন। বলেছেন, প্রদেশ কংগ্রেস কর্মসূচি তৈরি করুক। যখনই তাঁদের ডাকা হবে, তাঁরা যাবেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ নেতারা আজ রাহুল, খড়্গে ও প্রিয়ঙ্কাকে রাজ্যে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর জি করের ঘটনার নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গে তাঁদের দেখা করার বিষয়েও কথা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে রাহুল এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘আমাদের ফোকাস খুব স্পষ্ট। তৃণমূল স্তরে সংগঠন মজবুত করা ও মানুষের অধিকারের জন্য লড়া। কংগ্রেস বাংলার মানুষের প্রত্যাশার কণ্ঠ হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে।’
আজকের বৈঠকে প্রথমেই বলে দেওয়া হয়েছিল, জোট নিয়ে এখনই কোনও কথা হবে না। তা সে বামেদের সঙ্গে ফের জোটের প্রশ্ন হোক বা তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা। আগে কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করে, কী ভাবে কংগ্রেসকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকের পরে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মির বলেন, ‘‘জোটের কথা পরে হবে। আগে কংগ্রেসকে বাংলার ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে শক্তিশালী করতে হবে। কেন্দ্রের মোদী সরকার ও রাজ্যের ১৫ বছরের সরকারের যে সব খামতি রয়েছে, তা তুলে ধরতে হবে।’’
বৈঠকে প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি, অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রদীপ ভট্টাচার্য থেকে তরুণ নেতানেত্রীরাও হাজির ছিলেন। সকলের কথাই রাহুল ও খড়্গে ধৈর্য ধরে শোনেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যের রাজনীতি দ্বিমেরুর লড়াই হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে বেরিয়ে মানুষের মান উন্নয়ন, রাজ্যের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে হবে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বার্তা দিয়েছেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)