রাহুল গান্ধী। —ফাইল ছবি।
হরিয়ানায় অপ্রত্যাশিত ধাক্কার পরে আসন্ন মহারাষ্ট্র নির্বাচনেও যাতে মুখ না পোড়ে, সে জন্য নির্বাচনী কৌশল আঁটোসাঁটো করতে চাইছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর সেই লক্ষ্যে রণকৌশলের পর্যালোচনা করতে আজ মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, রাজধানীতে খড়্গের বাড়িতে এই বৈঠকে দলের এই দুই শীর্ষ নেতা মহারাষ্ট্রের নেতাদের সতর্ক করে দিতে চেয়ে বলেছেন, আত্মতুষ্টি এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কোনও জায়গা নেই মহারাষ্ট্রে। লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কা বিজেপি যে অনেকটাই সামলে নিয়েছে, তৃণমূল স্তরে তার প্রমাণ মিলছে। ফলে এক চুল জমিও যেন বিনাযুদ্ধে না ছাড়া হয়।
রাজ্যের মোট ২৮৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস একক ভাবে লড়তে চায় অন্তত ১১০টি আসনে। কিন্তু বিরোধী জোট মহাবিকাশ আগাড়ি-র শরদ পওয়ারপন্থী এনসিপি এবং উদ্ধবপন্থী শিবসেনা এ বার ঝাঁপাচ্ছে সর্বশক্তি দিয়ে। লোকসভা ভোটে শরদ পওয়ার এবং উদ্ধব ঠাকরের কাছ থেকে দল এবং প্রতীক ছিনিয়ে নেওয়ার আবেগ ছিল সর্বতো ভাবে। যার সুফলও পাওয়া গিয়েছিল ভোটে। সেই আবেগের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে বিধানসভা ভোটে তারা সহজেই কংগ্রেসকে তাদের প্রার্থিত আসন ছেড়ে দেবে, বিষয়টা এমন নয়। বিশেষ করে হরিয়ানা ভোটের পর ‘ইন্ডিয়া’-র শরিকরা (যার মধ্যে উদ্ধবপন্থী শিবসেনার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও রয়েছেন) বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে তাদের ব্যর্থতার দিকটি কংগ্রেসের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন। কংগ্রেস যে বিভিন্ন আঞ্চলিক দলকে ‘ক্রাচ’ হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের আসন বাড়িয়েছে, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে। ফলে এ বারে মহারাষ্ট্রে আসন নিয়ে বিরোধী অন্যান্য শরিক দলগুলির সঙ্গে দর কষাকষির বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই দীর্ঘ হবে। সবাই চাইবে বেশি আসনে লড়তে।
আসন নিয়ে অন্য শরিকদের সঙ্গে কিসের ভিত্তিতে দর কষাকষি করা হবে, তা নিয়ে কথা হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের নির্বাচনী কৌশল নিয়েও রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাহুল-খড়্গে। দলের ভোটকুশলী সুনীল কানুগলু রাজ্য নেতাদের সঙ্গে সেখানকার জাতপাতের সমীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। হরিয়ানায় জাঠ সম্প্রদায়ের উপরে অতিনির্ভরতা ডুবিয়েছে কংগ্রেসকে। দলের নির্বাচনী ইস্তাহার নিয়েও কথা হয়েছে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে। বিজেপি কী ভাবে জাতপাতের রাজনীতিতে রাজ্যে ভেদাভেদ তৈরি করছে এবং ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভ নিরসনে আগাড়ির বিরুদ্ধে নতুন ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাঁড় করানোর কথা ভাবছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন খড়্গেরা। প্রসঙ্গত, কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে গত কালই মহাবিকাশ আগাড়ির পক্ষ থেকে একটি বুকলেট প্রকাশ করা হয়েছে মুম্বইয়ে। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘গদ্দারাঞ্চা পঞ্চনামা’। সেখানে দেখানো হয়েছে একনাথ শিন্দে, অজিত পওয়ার ও বিজেপির মহায়ুতি সরকার কী ভাবে ‘মহারাষ্ট্রের ধর্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। রাজ্যে মহিলা নিপীড়নের উপরে বাড়তি জোর দেওয়ার ইঙ্গিতে স্পষ্ট, বিরোধীরা মহিলা ভোটের প্রতি এ বার বিশেষ ভাবে যত্নবান হবে। তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, এই সরকারের আমলে প্রতিদিন গড়ে মহারাষ্ট্রে ১০৯টি করে মহিলা নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষক আত্মহত্যা, জিএসটি-র চাপের মতো দিকগুলিতেও। সূত্রের খবর, মহাবিকাশ আগাড়ির সাধারণ ইস্তেহারের পাশাপাশি কংগ্রেসের নিজস্ব কিছু বিষয় থাকবে, যা দলীয় প্রার্থীরা তাঁদের নির্বাচনী ক্ষেত্রেপ্রচার করবেন।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাও। সোমবার রাতে মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়নকুলে, উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস-সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy