ফাইল চিত্র।
শুধু অগস্টেই কাজ খুইয়েছেন ১৫ লক্ষ জন। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বেকারত্বের বিবর্ণ ছবি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে নিশানা করলেন রাহুল গাঁধী।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই খবর টুইট করে শুক্রবার কংগ্রেস নেতার আক্রমণ, ‘‘মোদী সরকার কাজের সুযোগ তৈরির পক্ষে ক্ষতিকারক।’’ সঙ্গে কটাক্ষ, ‘‘এই সরকার ‘বন্ধু’ নয়, এ রকম কারও জন্য ব্যবসা বা কর্মসংস্থান বৃদ্ধির আশ্বাস দেয় না। উল্টে যাঁদের চাকরি আছে, তাঁদের থেকেও তা ছিনিয়ে নিতে চায়। দেশবাসীর জন্য শুধু অপেক্ষা করে থাকে আত্মনির্ভরতার ভড়ং।’’
সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অগস্টে দেশে বেকারত্বের হার ৮.৩২%। ঠিক আগের মাস জুলাইয়েও তা ছিল ৬.৯৬%। শুধু গত মাসেই নতুন করে কাজ হারিয়েছেন ১৫ লক্ষ জন। কাজ না-থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে সর্বত্র। শহরে বেকারত্বের হার ৮.৩২% থেকে বেড়ে হয়েছে ৯.৭৮%। আর গ্রামীণ এলাকায় ৬.৩৪% থেকে ৭.৩৪%।
এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাহুলের প্রশ্ন, বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির মসনদ দখল করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ফি বছরে সেই দু’কোটি কাজের কী হল?
এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ২০.১% হতেই মোদী সরকারের দাবি, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বলছেন, ২০২০ সালের এপ্রিল-জুনে দেশ জোড়া লকডাউনের কারণে ২৪% সঙ্কুচিত হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। তার সাপেক্ষ হিসেব হওয়ার কারণেই এ বার এত চড়া দেখাচ্ছে বৃদ্ধির হারকে। কিন্তু তাতে কেন্দ্র বা বিজেপির প্রচারের ঢক্কা-নিনাদ কমেনি। উপরন্তু তারা মনে করিয়েছে, অর্থনীতির পালে বাতাস লাগার ইঙ্গিত পেয়েই রকেট গতিতে দৌড়চ্ছে শেয়ার বাজার। গত এক সপ্তাহে সেনসেক্স বেড়েছে ২০০০ পয়েন্ট। সেই প্রচারকে
ভোঁতা করে দিতেও এ দিন আরও বেশি করে কাজের বাজারের রংচটা ছবি তুলে ধরেছেন রাহুল। কংগ্রেসের প্রশ্ন, বৃদ্ধির হার যদি এতই চড়া, অর্থনীতির হাল এতই ভাল, তা হলে কর্মসংস্থানের দশা এমন বেহাল কেন?
সাত বছর আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতি বছর ‘নিয়ম করে’ ৮%-১০% বৃদ্ধি এবং তার হাত ধরে ২ কোটি কাজের সুযোগ তৈরির স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন মোদী। অথচ তথ্য বলছে, তাঁর জমানায় বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ। পর্যাপ্ত সংখ্যায় নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হওয়া তো দূর, উল্টে নোটবন্দি থেকে লকডাউন পর্যন্ত বিভিন্ন ‘কড়া সরকারি পদক্ষেপে’ চাকরি গিয়েছে কয়েক কোটি। পাশাপাশি, নোটবন্দির জেরে বন্ধ হয়েছে বহু ছোট-মাঝারি ব্যবসা। ফলে সেখানেও কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। একই ছবি করোনা-কালে দেশ জোড়া লকডাউনে। সিএমআইই-র সমীক্ষাতেই জানানো হয়েছে, এপ্রিল থেকে অগস্টের মধ্যে ২ কোটিরও বেশি বেতনভোগী ভারতীয় কাজ হারিয়েছেন।
এ দিন এই তথ্যের পাশাপাশি টুইটে বেকারত্ব বা চাকরি হারানোর কারণে আত্মহত্যার একাধিক খবরও তুলে ধরেছেন রাহুল। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে দেশে সব থেকে বড় ও জ্বলন্ত সমস্যা বেকারত্ব। কাজের সুযোগ বাড়াতে কেন্দ্রকে তাঁর পরামর্শ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি না-করা, মাঝারি ও ছোট শিল্পকে আর্থিক সহায়তা করা ও শুধু ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের বদলে দেশের মানুষের কথা ভাবা। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, প্রথম দু’টি পরামর্শ মানলে, কাজের সুযোগ বাড়বে। আর শেষটিতে আদতে গত সাত বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সিংহ ভাগ ‘মোদী-ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতিদের হাতে তুলে দেওয়া এবং তাঁদের ফুলে-ফেঁপে ওঠার বন্দোবস্ত করা নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন রাহুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy