জেপি নড্ডা ও রাহুল গাঁধী।
করোনা, নোট বাতিল, জিএসটি— তিন ব্যর্থতা ভবিষ্যতে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের গবেষণার বিষয় হবে বলে রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হুল ফুটিয়েছিলেন। তার জবাবে বফর্স কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা প্রশ্ন তুললেন, রাহুল গাঁধী প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে গরহাজির থাকেন কেন?
রাহুলকে নিশানার জবাবে আজ কংগ্রেস পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, চিন ভারতের জমিতে অনুপ্রবেশ সত্ত্বেও গুজরাত-সহ গোটা দেশে চিনের লগ্নি আসছে কী ভাবে! কেন গত ২০ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কেন চিনের সংস্থাকে বরাত দিয়ে চলেছে!
গত সেপ্টেম্বরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠনের পর থেকে ১১টি বৈঠক হলেও রাহুল কেন একটি বৈঠকেও যোগ দেননি, উত্তর মেলেনি। কংগ্রেস বলছে, বিজেপি এই সব প্রশ্ন তুলে চিনা অনুপ্রবেশ থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে।
করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ভারত এখন গোটা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে। রাহুল গাঁধী আজ সকালেই মনে করিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, মহাভারতের যুদ্ধ যেমন ১৮ দিনে শেষ হয়েছিল, তেমনই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ২১ দিনে লড়া হবে। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী কখনও থালা-বাটি বাজাতে, কখনও প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালাতে বলেছিলেন বলেও মনে করিয়ে দেন রাহুল। কিন্তু বাস্তবে ১০৩ দিনের মাথায় ভারত রাশিয়াকে টপকে তৃতীয় স্থানে। রাহুল কটাক্ষ করেন, করোনা, নোট, বাতিল, জিএসটি রূপায়ণের তিন ব্যর্থতা হার্ভার্ডের ‘কেস স্টাডি’ হবে।
আরও পড়ুন: আসরে ডোভাল, প্রশ্ন তুলে দিল চিনের বিবৃতি
এর পরেই বিজেপি সভাপতি নড্ডা আসরে নেমে রাহুলকে নিশানা করেন। বলেন, “রাহুল গাঁধী প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি বৈঠকেও যোগ দেননি। কিন্তু দেশকে হতোদ্যম করা, সেনার বীরত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার কাজ করেন। তিনি সেগুলোই করেন, যেগুলো একজন দায়িত্বশীল বিরোধী নেতার করা উচিত নয়।” এর পরেই বফর্স কেলেঙ্কারির দিকে ইঙ্গিত করে নড্ডা বলেন, “রাহুল সেই পারিবারিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী, যেখানে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে কমিটি নয়, কমিশন গুরুত্ব পায়।” কংগ্রেসের মধ্যে গাঁধী পরিবারকে কোণঠাসা করার কৌশল চালিয়ে নিয়ে যেতে নড্ডা বলেন, কংগ্রেসের অনেক যোগ্য সদস্য রয়েছেন, যাঁরা সংসদীয় বিষয় বোঝেন। কিন্তু একটি পরিবার তাঁদের বাড়তে দেবে না।
এর পর কংগ্রেস দলের দুই মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা ও পবন খেরাকে মাঠে নামায়। সুরজেওয়ালা বলেন, নড্ডা বিজেপির মুখপাত্রদের মতো বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন। বিজেপি ও মোদী সরকার এত শক্তি চিনের বিরুদ্ধে ব্যয় করলে, চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে মিথ্যে বলতে হত না। তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, মোদী সরকার কি আদৌ সংসদীয় কমিটিকে গুরুত্ব দেয়? বিজেপির মুরলীমনোহর জোশীর নেতৃ্ত্বে এস্টিমেট কমিটি কি বলেনি যে মোদী জমানায় প্রতিরক্ষা খাতে ১৯৬২-র পর সব থেকে কম অর্থ ব্যয় হয়েছে? বিজেপিরই বি সি খাণ্ডুরির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটি কি বলেনি যে ৬৮ শতাংশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পুরনো? চিন সীমান্তে পরিকাঠামো তৈরির যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ হয়নি? তার জন্য কি প্রধামমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়নি? তার পরেও কেন পিএমও হাত গুটিয়ে বসে ছিল?
এর পর কংগ্রেসের পবন খেরা অভিযোগ তোলেন, “প্রধানমন্ত্রীর চিনের প্রতি বিশেষ প্রীতি রয়েছে, থাকতেই পারে। তাতে সমস্যা নেই। তিনি দু’দশক ধরে এই সম্পর্কে সময় দিয়েছেন। কিন্তু দেশের সীমান্ত, দেশের অর্থনীতি সুরক্ষিত থাকা দরকার।” খেরার অভিযোগ, এক দিকে চিনের সেনার সঙ্গে সেনা লাদাখে যুঝছে, অন্য দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি চিনের সংস্থাকে বরাত দিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাতে চিনা লগ্নি হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে গুজরাত সরকার চিনের সঙ্গে ৪৩ হাজার কোটি টাকার মউ সই করেছে। গত ২০ দিনেও এই প্রক্রিয়ায় কোনও দাঁড়ি, কমা পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy