Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Rahul Gandhi

এই জিএসটি সর্বনাশা, জেটলির ভিডিয়ো টুইট করে ফের তোপ রাহুলের

টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে এ দিনও কেন্দ্রের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।

জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ রাহুলের। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ রাহুলের। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৩৪
Share: Save:

দেশের অর্থনীতির খারাপ দশা এবং জিডিপি-র পতনের পিছনে জিএসটি-কেই অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করলেন রাহুল গাঁধী। আজ টুইট করে তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতির পতনের অন্যতম কারণ গব্বর সিংহ ট্যাক্স বা জিএসটি।” তাঁর দাবি, এই কর নীতির ফলে লক্ষাধিক গরিব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কোটি কোটি মানুষ কাজ খুইয়েছেন। রাজ্যগুলির অর্থনীতিতেও এই কর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে এ দিনও কেন্দ্রের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। ভিডিয়োটিতে রাহুলের বক্তব্য, জিএসটি হল অসংগঠিত শিল্প ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় ধাক্কা। দেশ জুড়ে কেবল একটি কর নীতি প্রণয়ন করতেই ইউপিএ আমলে জিএসটি-র পরিকল্পনা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল করকাঠামো সরল করা। কিন্তু এনডিএ সরকার শেষ পর্যন্ত যে জিএসটি চালু করেছে, তা আলাদা ও জটিল। এতে চার ধরনের করের ধাপ থাকায় কর প্রক্রিয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সর্বোচ্চ করের হার ২৮ শতাংশ করায় ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পক্ষে কর মেটাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জিএসটি-তে যে চারটি ধাপ রাখা হয়েছে, তা মূলত দেশের ধনী ব্যবসায়ী শ্রেণিকেই সাহায্য করেছে। রাহুলের কথায়, “কেন্দ্রের ওই কর নীতি দরিদ্র ভারতবাসীর উপরে খাঁড়ার ঘা হয়ে নেমে এসেছে। ছোট দোকানদার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ব্যবসা ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” এই ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি নীতির বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন রাহুল।

বিজেপি এর পাল্টা, রাহুলের খানিকটা ভিডিয়ো ক্লিপের সঙ্গে প্রয়াত অরুণ জেটলির সংসদে দেওয়া বক্তৃতার অংশ তুলে ধরেছে। রাহুলের বক্তব্যকে ‘প্রোপাগান্ডা’ ও জেটলির বক্তব্যকে ‘বাস্তব’ শিরোনাম দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে জেটলি বলছেন, বেবি ফুড বা হাওয়াই চপ্পলের সঙ্গে বিএমডব্লিউ-র উপরেও একই হারে কর চাপানো কখনওই যুক্তিসঙ্গত নয়। এটা করা হলে, তা হবে দমনমূলক নীতি।” সঙ্গে বিজেপি মন্তব্য করেছে, “রাহুল গাঁধী বিএমডব্লিউ আর গরিব মানুষ সাধারণ ভাবে যে সব পণ্য ব্যবহার করেন— সবেতেই এক হারে কর চালু করার পক্ষপাতী। কিন্তু এক মাপের জামা সকলের গায়ে হয় না।”

রাজ্যগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার পিছনেও জিএসটি নীতিকেই দায়ী করেছেন রাহুল। করোনা-কালে রাজ্যগুলির প্রায় ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি খাতে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়ে গিয়েছে। জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে কেন্দ্রের— এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে ছ’টি অ-বিজেপি রাজ্য। রাহুল এ দিন বলেন, “রাজ্য সরকারগুলি যে কর্মচারীদের বেতন মেটাতে পারছে না, তার জন্য কেন্দ্রই দায়ী। কেন্দ্র জিএসটি খাতে রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই রাজ্যের ভাঁড়ার খালি হয়ে গিয়েছে।” রাহুলের কথায়, “জিএসটির অর্থই হল আর্থিক সর্বনাশ। এর ফলে কোটি কোটি মানুষের চাকরি গিয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে যুব সমাজের ভবিষ্যৎ।”

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জনিয়েছেন, কেন্দ্রের হাতে টাকা নেই। রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে না। রাজ্যগুলি ধার নিক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-কেরলের মতো রাজ্যগুলি বলছে সংসদীয় বাধ্যবাধকতার কথা। তাদের দাবি, কেন্দ্রই ধার করুক ও রাজ্যগুলিকে বকেয়া মিটিয়ে দিক। একই পরামর্শ দিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমও। তাঁর বক্তব্য, চলতি আর্থিক সঙ্কটে থেকে বেরোতে সাধারণ মানুষের হাতে নগদের জোগান ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এতে বাজারে চাহিদা বাড়বে। সেটাই সঙ্কটমুক্তির পথ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy