—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধীদের সংসদের বাইরে আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে নিত্যনতুন কায়দায় বিক্ষোভ। জবাবে সংসদের মধ্যে বিজেপি নেতাদের গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ। শাসক এবং বিরোধী পক্ষের সম্মুখ সমরের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার থেকে সংবিধান গ্রহণের পঁচাত্তরতম বর্ষ নিয়ে দু’দিনের আলোচনা শুরু হবে। কিন্তু রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে যে ভাবে সরকার বনাম বিরোধীদের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়েছে, তাতে লোকসভায় আলোচনা সম্ভব হলেও আগামী সোমবার থেকে রাজ্যসভায় সংবিধান নিয়ে নির্ধারিত বিতর্ক আদৌ হতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
লোকসভায় সংবিধান নিয়ে বিতর্কে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা, গান্ধী পরিবারের দুই সদস্যই অংশ নেবেন। প্রিয়ঙ্কা প্রথম লোকসভায় বক্তৃতা করবেন। শনিবার বিতর্কের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তৃতা করবেন। তিনি জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করবেন। পাল্টা কৌশলে কংগ্রেস উপাসনাস্থল আইনের বিরুদ্ধে বিজেপির সক্রিয়তা ও সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে সরব হওয়ার কৌশল নেওয়ার কথা ভাবছে। আঞ্চলিক দলগুলি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের প্রসঙ্গ তুলবেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী কবে বুঝবেন, সংসদের অধিবেশন কক্ষ তাঁর মন কি বাতের নয়া সংস্করণ নয়!”
আজও লোকসভায় নিশিকান্ত দুবে, রাজ্যসভায় জে পি নড্ডা কংগ্রেসের সঙ্গে জর্জ সোরসের যোগাযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিমণি আদানি প্রসঙ্গ তুললেও তা সংসদের নথি থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদেরা সোরস প্রসঙ্গ তুললেও কেন রেকর্ডে থাকছে, তা নিয়ে কংগ্রেস সাংসদেরা হইচই করেছেন। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদের অচলাবস্থার জন্য বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়কেই দায়ী করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ওই দু’দলের জন্য তাঁরা বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলতে পারছেন না।
রাজ্যসভায় ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেন নড্ডা। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে অপমান করেছেন। রাহুল তাঁর নকল করেছেন। কংগ্রেস তাঁকে ‘চিয়ারলিডার’ বলেছে। কংগ্রেসই সংবিধান মানছে না। খড়্গে পাল্টা বিবৃতিতে দিয়ে ফের ধনখড়কে কোথায় সমস্যা, তার তালিকা তুলে ধরেছেন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান পরিস্থিতি সহজ করার জন্য দুপুরে বিভিন্ন দলের সাংসদদের কফি খেতে ডাকেন। কংগ্রেস, তৃণমূল ও অন্যরা না গেলেও ডিএমকে-র রাজ্যসভার নেতা তিরুচি শিবা গিয়েছিলেন। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার ও তাঁর স্ত্রী তথা সাংসদ সুনেত্রা, মিলিন্দ দেওরা, প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে শিবার বসে থাকার ছবি রাজ্যসভার সচিবালয়ের পক্ষে থেকেই প্রকাশ করা হয়েছে।
শিন্দের গোসা ভাঙাতে বাড়তি মন্ত্রকের ভাবনা
মুখ্যমন্ত্রিত্বের পরে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণেও কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্দে। সূত্রের মতে, শিন্দের মন রাখতে শিবসেনাকে বাড়তি একটি মন্ত্রক দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বিজেপি।
বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পরে সাত দিন কাটলেও জোটে জটিলতার জন্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ শুরু করা সম্ভব হয়নি। গত কাল দিল্লি আসেন দেবেন্দ্র ও শরিক নেতা তথা সরকারের আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। কিন্তু শিন্দে রয়ে যান মহারাষ্ট্রে। সূত্রের মতে, তাঁর ক্ষোভ যে যায়নি, সেই বার্তা দিতেই তিনি দিল্লি যাননি। গত কাল অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরে আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন দেবেন্দ্র। অজিত আজ দুপুরে সংসদে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। তবে এই সফরের সঙ্গে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের সম্পর্ক নেই এবং তাঁর ও অজিতের দিল্লি আসার কারণ পুরো আলাদা, দাবি দেবেন্দ্রের।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে আজ দেবেন্দ্র দাবি করেন, সম্প্রসারণ নিয়ে জটিলতা কেটেছে। কী সমীকরণে জট কাটল, তা অবশ্য বলতে চাননি তিনি। মহারাষ্ট্রের বিধানসভার যা শক্তি, তাতে সর্ব্বোচ্চ ৪৩ জন মন্ত্রী হতে পারেন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল বিজেপি থেকে ২২ জন ও শিবসেনা ও এনসিপি থেকে যথাক্রমে ১১ ও ১০ জন মন্ত্রী হবেন। সূত্রের মতে, শিন্দের মনোভাব দেখে তাঁদের জন্য আর একটি মন্ত্রক ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নে নীতিগত ভাবে রাজি হয়েছে বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy