দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের পরে নতুন করে বিচারপতি নিয়োগের বর্তমান ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু তার পরিবর্তে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে মোদী সরকার কী ভাবছে, তা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা।
আজ উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় রাজ্যসভার দলনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার আগে তিনি রাজ্যসভায় জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, “২০১৫ সালে সংসদে সর্বসম্মতিতে আইন তৈরি হয়েছিল। অর্ধেক রাজ্য সিলমোহর দিয়েছিল। এখন ফের সেই ঐতিহাসিক পথে হাঁটার উপযুক্ত সময়।” কিন্তু সেই বৈঠকে তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার নেতা জে পি নড্ডার কাছে— সুপ্রিম কোর্ট সেই বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে দিয়েছিল। তা হলে এখন শাসক পক্ষ কোন পথে এগোতে চাইছে? ফের কি একই রকম আইন পাশ করা হবে? সুপ্রিম কোর্ট ফের তা খারিজ করে দিলে তার ফল কী হবে? এ বিষয়ে সরকার কি কোনও প্রস্তাব আনছে? সরকার কি কোনও আইন আনবে? না কি দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতিকে পদ থেকে সরানো বা ইমপিচমেন্ট-এর প্রক্রিয়া শুরু হবে?
তৃণমূল শিবিরের প্রশ্ন, এ বিষয়ে কেন রাজ্যসভায় খোলাখুলি আলোচনা না করে চেয়ারম্যানের চেম্বারে বৈঠক হচ্ছে? তাই বৈঠকে যাননি রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সুখেন্দুশেখর ও নাদিমুল হককে পাঠানো হয়। সুখেন্দুশেখরের প্রশ্নে কেন্দ্রের রণকৌশল স্পষ্ট করেননি নড্ডা। শুধু জানান, এই বিষয়ে প্রতিটি দলের নেতাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলবেন।
মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন তৈরি করেছিল। কিন্তু সেই আইন কার্যকরের কয়েক মাসের মধ্যেই শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দেয়। আজ চেয়ারম্যান ধনখড় বিচারপতির বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “ওই আইন থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না।” রাজ্যসভাতেই চেয়ারম্যানের এই মত নিয়ে আপত্তি তোলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। বৈঠকে খড়্গে বলেন, বিচারপতি নিয়োগ ব্যবস্থায় রদবদল নিয়ে তাঁরা আলোচনায় রাজি। তবে আগে সরকার প্রস্তাব আনুক। বিচারপতি নিয়োগে যেমন স্বচ্ছতা প্রয়োজন, তেমনই বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও জরুরি। নড্ডা জানান, তিনি এনডিএ শরিকদের সঙ্গে কথা বলে ফের বিরোধীদের সঙ্গে বসবেন। তৃণমূলের কটাক্ষ, নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিল করে কালো টাকা মুছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তা হলে বিচারপতির বাড়ি থেকে বস্তা ভর্তি নগদ টাকা উদ্ধার হল কী ভাবে!
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)