প্রতীকী চিত্র।
আর মাত্র দিন কুড়ি? নভেম্বর মাসের পরে কি আর বিনামূল্যে ৫ কেজি করে রেশন দেওয়া হবে না? প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থ মন্ত্রক থেকে খাদ্য মন্ত্রক—এ বিষয়ে এখন চুলচেরা বিচার চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, সরকারের অন্দরমহলে বিভিন্ন মতামত উঠে এসেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
মার্চের শেষে লকডাউন ঘোষণার পরেই নরেন্দ্র মোদী সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-য় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা-র অন্তর্ভুক্ত ৮০ কোটি পরিবারের জন্য মাথা পিছু ৫ কেজি করে চাল বা গম ও পরিবার পিছু ১ কেজি করে ডাল বিনামূল্যে অতিরিক্ত রেশন দেওয়ার ঘোষণা করেছিল।
প্রথমে এপ্রিল থেকে জুন— তিন মাসের জন্য ঘোষণা হলেও ৩০ জুন জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নভেম্বর পর্যন্ত এই সুরাহা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দুর্গাপুজো থেকে দীপাবলি হয়ে ছটপুজো পর্যন্ত এই সুবিধা দেওয়া হবে। যা দেখে বিরোধীরা বলেছিলেন, বিহারের ভোটের দিকে তাকিয়েই ছটপুজো পর্যন্ত রেশন দেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পডুন: নীতীশ কুমার না তেজস্বী যাদব? বিহার ভোটের বুথ ফেরত সমীক্ষায় এগিয়ে তেজস্বী
এখন বিহারের ভোটও শেষ। আগামিকালই ভোটের ফল প্রকাশ হয়ে যাবে। লকডাউনও উঠে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নভেম্বরের পরে আর রেশন দেওয়ার দরকার রয়েছে কি না, তা নিয়ে সরকারের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, অর্থ মন্ত্রকের একাংশ নভেম্বরের পরেও এই প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে। কারণ একটাই— বিপুল খরচ। এপ্রিল থেকে নভেম্বর—এই আট মাসে বিনামূল্যে রেশন দিতে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে। এমনিতেই লকডাউনের জেরে সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে। বেড়েছে কোভিড মোকাবিলার খরচ। রাজকোষ ঘাটতি ৩.৫ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য ছিল। তা বেড়ে ৭ শতাংশের কাছে চলে যেতে পারে।
উল্টো দিকে, অর্থ মন্ত্রকেরই আর একটি অংশ বলছে, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তৃতীয় দফা দাওয়াই দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার অঙ্গ হিসেবেই নভেম্বরের পরেও মার্চ পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন ঘোষণা করা যেতে পারে। কারণ, গরিব মানুষের খাওয়ার খরচে সাশ্রয় হলে অন্যত্র খরচের জন্য হাতে নগদ টাকা থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, কেরল, ওড়িশা-সহ একাধিক রাজ্য কেন্দ্রকে অনুরোধ জানিয়েছে, মার্চ পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হোক। ফুড কর্পোরেশন বা খাদ্য নিগমের কর্তাদেরও এতে আপত্তি নেই। তাঁদের যুক্তি, গুদামে মজুত ক্ষমতার অতিরিক্ত খাদ্যশস্য রয়েছে। ফলে আরও বেশি দিন চাল-গম দেওয়া হলে গুদামে চাপ কমবে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, গুদামে চাল-গম থাকলেই হল না। তা রাজ্যে রাজ্যে পৌঁছে দেওয়ার খরচও যথেষ্ট।
এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পুরো খরচই কেন্দ্র বহন করছে। খাদ্য মন্ত্রক প্রস্তাব দিয়েছে, এমনিতেই খাদ্য সুরক্ষা আইনে মাথা পিছু পাঁচ কেজি করে চাল-গম অল্প দরে দেওয়া হয়। তার পরে আরও পাঁচ কেজি বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছিল। বিনামূল্যে রেশনের পরিমাণ নভেম্বরের পরে অর্ধেক করে আড়াই কেজি করে দেওয়া হোক। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, শুধু খরচ নয়। এর রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির দিকটি খতিয়ে দেখতে হবে। তাই সরকারের রাজনৈতিক স্তরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy