১০ বছরের পুত্রকে সঙ্গে আমেরিকার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন পঞ্জাবের লভপ্রীভ কউর। নতুন করে বাঁচার আশা নিয়ে এবং আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় সঞ্চয়ের বেশির ভাগটাই দিয়েছিলেন এজেন্টকে। প্রয়োজনীয় নথি বানানো, আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা দাবি করেছিলেন এজেন্ট। সেই টাকা জোগাড় করেন লভপ্রীতও। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন যে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে, তা কল্পনা করতে পারেননি পঞ্জাবের এই মহিলা। আমেরিকায় পৌঁছেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁকে দেশে ফিরতে হল অবৈধবাসী চিহ্নিত হয়ে।
গত বুধবার যে ১০৪ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে আমেরিকা, তাঁদের মধ্যে ছিলেন লভপ্রীত এবং তাঁর পুত্রও। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানালেন কী ভাবে আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। লভপ্রীতের দাবি, বৈধ ভাবে এবং সরাসরি আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এজেন্ট। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা কিন্তু হয়নি। কপূরথালা জেলার ভোলাটের এই মহিলা জানান, সোজা পথে তো নয়ই, ঘুরপথে আমেরিকায় তাঁদের যে ভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, সেই সফর ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ।
লভপ্রীত জানান, প্রথমে তাঁদের কলম্বিয়ার মেডেলিনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দু’সপ্তাহ কাটানোর পর বিমানে করে এল সালভাদরের রাজধানী সান সালভাদরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হেঁটে পৌঁছন গুয়াতেমালা। তার পর সেখান থেকে ট্যাক্সি করে মেক্সিকোর সীমান্তে। সেখানে দু’দিন অপেক্ষা করার পর গত ২৭ জানুয়ারি সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢোকেন। কিন্তু আমেরিকায় ঢুকতেই সীমান্তে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। লভপ্রীত বলেন, ‘‘কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হল, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। সেখান থেকে অন্য একটি শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ পরে তাঁদের জানানো হয়, অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এ কথা শোনার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন লভপ্রীত। তবে তাঁদের জানানো হয় দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। লভপ্রীতের কথায়, ‘‘জীবনের বেশির ভাগ সঞ্চয় খরচ করে আমেরিকায় নতুন আশা নিয়ে গিয়েছিলাম। সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল।’’