নতুন মন্ত্রিসভা গড়লেন পঞ্জাবের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। ছবি পিটিআই।
প্রত্যাশা মতোই পছন্দের লোকেদের নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গড়লেন পঞ্জাবের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। এর আগে সোমবার দুই উপমুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। রবিবার মন্ত্রী হলেন ১৫ জন। এর মধ্যে আগের ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ মন্ত্রিসভার কয়েক জনের যেমন ঠাঁই মিলেছে, বাদ গিয়েছেন আগের আমলের স্বাস্থ্য ও অর্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু দফতরের মন্ত্রী। এঁরা সকলেই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা। ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা ‘রাজনৈতিক হেনস্থা’ বলে মনে করছেন। কেন বাদ দেওয়া হল, তা নিয়ে সরবও হয়েছেন তাঁরা। আবার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ায় আগের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া এক জনকে নতুন মন্ত্রিসভায় নিয়ে চন্নী দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন, এই দাবি তুলে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেসের ৬ বিধায়ক। পঞ্জাবে দলে বিবাদ মেটানো যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্দেশ্য হয়, চন্নীর নতুন মন্ত্রিসভা গঠন সে কাজে কতটা সহায়ক হবে— সেই প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, প্রদেশ কংগ্রেসের চিড় আরও চওড়া হল পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুনদের অন্তর্ভুক্তিতে।
শনিবারই প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষে পরোক্ষে প্রকাশ করে দেওয়া হয়, চন্নীর নতুন মন্ত্রিসভায় কারা জায়গা পাচ্ছেন এবং আগের মন্ত্রিসভার কারা বাদ পড়তে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ও দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাজ্যপাল বানোয়ারিলাল পুরোহিত এ দিন যে ১৫ জন বিধায়ককে মন্ত্রী হিসাবে শপথবাক্য পাঠ করান, তার মধ্যে ৮ জন ক্যাপ্টেনের আমলেও মন্ত্রী ছিলেন। বাকি ৭ জন নতুন মুখ। পুরনোদের মধ্যে বিজয় ইন্দর সিঙ্গলা বা পঞ্জাবের প্রভাবশালী হিন্দু নেতা ব্রহ্ম মহিন্দ্রের মতো অমরেন্দ্র-ঘনিষ্ট নেতাকে মন্ত্রিত্বে রাখা হয়েছে। কিন্তু আর এক অমরেন্দ্র-ঘনিষ্ট বিধায়ক রানা গুরজিৎ সিংহকে ফের মন্ত্রী করায় দলে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। বিধায়কদের মধ্যে সব চেয়ে ধনী গুরজিৎকে অমরেন্দ্র মন্ত্রী করার পরে তিনি ও তাঁর পরিবার বালি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮-য় বাধ্য হয়ে তাঁকে ইস্তফা দিতে বলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই গুরজিৎকে ফের মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে কাল জানাজানি হওয়া মাত্র এক দল কংগ্রেস নেতা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হরিশ রাওয়ত এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোৎ সিংহ সিধুকে চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত পুনর্বিচারের দাবি জানান। এই নেতাদের মধ্যে অন্তত ৬ জন বিধায়ক রয়েছেন। তবে সেই পত্রাঘাতের পরেও গুরজিৎ রবিবার মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে এ জন্য দলকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে বলে দাবি করা হয়েছে চিঠিতে।
জঙ্গিদের হাতে নিহত পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহের পৌত্র গুরকিরাত সিংহ কোটলিকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী শিরোমণি অকালি দল এবং আম আদমি পার্টি। ১৯৯৪-এ তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ এবং এক ফরাসি পর্যটকের শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছিল। তবে ১৯৯৯-এ তাঁকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় আদালত। কোটলিকে মন্ত্রী করেছেন চন্নী। কিন্তু বাদ পড়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ক্যাপ্টেন মন্ত্রিসভার দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলবীর সিধু প্রশ্ন তুলেছেন, “কোন ভুলের জন্য আমাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে হল, হাই কমান্ডের কাছে জানতে চাই। কোভিড মোকাবিলায় আমি যে ভাবে কাজ করেছি, দেশে তো বটেই, কানাডার আইনসভাতেও এক এমপি তা নিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তার পরেও কেন বাদ পড়তে হল আমাকে?” বাদ পড়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন আগের আমলের অর্থমন্ত্রী গুরপ্রীত সিংহ কাঙ্গারও। এঁরা দল ছাড়লে কংগ্রেসের বিপদ বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy