হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
অসম সরকারের মুখপাত্র তথা নেডা জোটের চেয়ারম্যান হিমন্তবিশ্ব শর্মা মুখর হলেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে। তাঁর মতে, এই আন্দোলন হচ্ছে পুরো মিথ্যার ভিত্তিতে। হিমন্তের কথায়, ‘‘সবচেয়ে বেশি মিথ্যের ভিত্তিতে চলা এই আন্দোলনের কথা গিনেস রেকর্ড বইয়ে ওঠা উচিত।’’ অবশ্য আসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হিমন্ত বলেন, অসম চুক্তির খেলাপ হওয়ায় আসুর গণতান্ত্রিক আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। অসমকে ভালবেসে যাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন আমি মঞ্চ থেকেই তাঁদের প্রণাম করছি। রাগ, অভিমান আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। সিএএর পক্ষে সওয়াল করে বরপেটার জনসভায় হিমন্ত আজ দাবি করেন, বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশে হিন্দুদের গায়ে হাত দেওয়ার ক্ষমতা কারও হবে না। যে দিন থেকে মোদী ক্ষমতায় এসেছেন, নিশ্চিন্ত হয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। অনুপ্রবেশকারী দূরের কথা, একটা পিঁপড়েও সীমান্ত পার করে অসমে ঢুকতে পারেনি। আন্দোলনের জেরে হারা দূরের কথা, ২০২১ সালে বিজেপি অন্তত ১০০ আসন পাবে রাজ্যে।
বড়দিনে এক দিকে যখন গুয়াহাটির ছাত্র ও শিল্পী সমাজের উদ্যোগে লতাশিলের মাঠে গুলিতে হত আন্দোলনকারীদের মূর্তি গড়ে, প্রতিবাদী ছবি এঁকে বিক্ষোভ চলছে, বিভিন্ন গির্জায় সিএএ বাতিল করা ও সরকারের শুভবুদ্ধি উদয়ের কামনায় চলছে প্রার্থনা, তখন অটলবিহারী বাজপায়ীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হিমন্ত বলেন, ‘‘গুয়াহাটি তছনছ করা হল, কলাক্ষেত্রে ভাঙচুর হল, অসমের ঐতিহ্য পোড়ানো হল। অথচ কোনও শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী তার বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি!’’
কংগ্রেস ও প্রফুল্ল মহন্তর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে হিমন্তর অভিযোগ, যে কংগ্রেস ১৯৮৩ সালে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করেছিল, খুন হয়েছিলেন ৮৫৫ জন, যে প্রফুল্ল মহন্ত অসমে গুপ্তহত্যার ইতিহাসের রচয়িতা— তাঁরাই এখন অসমিয়দের বিপথে পরিচালিত করতে চাইছে। অসম চুক্তির পরে ১৯৮৭ সালে রাজীব গাঁধী ও প্রফুল্ল মহন্ত চুপিসাড়ে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেন। এমন ব্যবস্থা করেন যাতে বাংলাদেশ থেকে যত শরণার্থী আসবেন, তাঁদের বংশধরেরা অসমের নাগরিকত্ব পাবেন। ১৯৯২ সালে নরসিংহ রাওয়ের আমলে ফের সংশোধনী এনে বলা হয়, বাবা বা মায়ের একজন বাংলাদেশি হলেও তাঁর সন্তান ভারতীয় নাগরিক হবেন। অথচ সেই সময়ে কোনও আন্দোলন হয়নি। ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপায়ীর সময়ে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে আসা কারও ছেলেমেয়েকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘‘হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের যাঁরাই ঢুকে থাকুন, ১৯৭২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কংগ্রেস ও মহন্তর আমলেই এসেছেন। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে একটা পিঁপড়েও ঢুকতে পারেনি। সেই জন্যই বিজেপিকে আইন সংশোধন করতে হচ্ছে।’’ হিমন্তের দাবি, আইন সংশোধনের ফলে বড় জোর চার লক্ষ মানুষ আবেদন করবেন। অথচ প্রচার করা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে কোটি-কোটি মানুষ আসবে। বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার পৃথ্বী মাজির মতো লোকও চা-শ্রমিকদের ভুল বোঝাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy