Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Priyanka Gandhi

পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় রাহুল, ফের ‘প্রিয়ঙ্কা লাও কংগ্রেস বাঁচাও’ দাবি দলে

গত ২৫ মে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধী যেহেতু গাঁধী পরিবারের সদস্য নন এমন কাউকে ওই পদে বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রিয়ঙ্কার উপরই ভরসা কংগ্রেস কর্মীদের। —ফাইল চিত্র।

প্রিয়ঙ্কার উপরই ভরসা কংগ্রেস কর্মীদের। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৫:৩৪
Share: Save:

নির্বাচনী পরাজয়ের দায় নিয়ে সভাপতি পদ ছেড়ে দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। তবে তার পর দু’মাস কাটতে চললেও, এখনও পর্যন্ত বিকল্প খুঁজে বার করতে পারেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমন পরিস্থিতিতে একবার ফের দলের অন্দরে ‘প্রিয়ঙ্কা লাও কংগ্রেস বাঁচাও’ রব উঠতে শুরু করেছে।

এ বছরের শুরুতে, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে, দলের তরফে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের এআইসিসির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। বারাণসী হোক বা দিল্লি, দলের হয়ে প্রচারে সর্বত্র দেখা দিতে শুরু করেন তিনি। তাতে বিশেষ লাভ না হলেও, শেষ মেশ সেই প্রিয়ঙ্কার হাতেই জাতীয় কংগ্রেসের দায়ভার তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী অনেকে, দলীয় সূত্রে এমনটাই উঠে আসছে।

তবে গত ২৫ মে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গাঁধী যেহেতু গাঁধী পরিবারের সদস্য নন এমন কাউকে ওই পদে বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাই খোলাখুলি প্রিয়ঙ্কার নাম সুপারিশ করতে সাহস পাচ্ছেন না বলে খবর। মনমোহন সিংহের আমলে দেশের কয়লা মন্ত্রী ছিলেন শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘‘অনেকেই এই দাবি তুলতে শুরু করেছেন। আমি নিজেও প্রিয়ঙ্কাকে কংগ্রেস সভাপতি পদে বসানোর পক্ষপাতী। উনি গাঁধী পরিবারের সদস্য। চিন্তাভাবনা প্রগতিশীল। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ওঁর।’’

আরও পড়ুন: মেট্রোর দরজা বন্ধে বাধা দিলেই ৫০০ টাকা জরিমানা, পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের জেরে কঠোর হচ্ছে আইন​

তিন-তিন বার লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া ভক্তচরণ দাসের কথায়, ‘‘দলের নিচুস্তরের কর্মী থেকে শীর্ষস্থানীয় নেতা, লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস সদস্যকে একটাই দাবি, রাহুলের জায়গায় প্রিয়ঙ্কাকে আনা হোক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই এই দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। প্রত্যেকেই এমনটা চান। কিন্তু সমস্যা হল, দাবিটা সঠিক জায়গায় পৌঁছচ্ছে না। প্রিয়ঙ্কা তো রয়েইছেন, সেই সঙ্গে নির্ভরযোগ্য একটা টিম থাকতে হবে, আমাদের করে দেখাতেই হবে। আমার মনে হয়, রাহুল যদি নিজ সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন, পদত্যাগপত্র যদি ফিরিয়ে না নেন, তা হলে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত প্রিয়ঙ্কাজির। সরাসরি ওঁর নাম সুপারিশ করা উচিত দলের।’’

তবে দলের এত সংখ্যক কর্মী যখন এই দাবি তুলছেন এবং শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ যখন এ ব্যাপারে অবগত, তা হলে প্রিয়ঙ্কার নাম সুপারিশে আপত্তি কোথায়? এ নিয়েও কংগ্রেসের তরফে নানা মত উঠে আসছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, রাহুলের মতো দলের অন্দরে প্রিয়ঙ্কার গ্রহণযোগ্যতা এখনও পর্যন্ত সে ভাবে তৈরি হয়নি। আবার মে মাসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রিয়ঙ্কার কড়া মন্তব্য নিয়েও অনেকে তাঁর উপর চটে রয়েছেন বলে খবর। জানা গিয়েছে, বৈঠকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত পাল্টানো নিয়ে রাহুলকে জোরাজুরি করছিলেন শীর্ষ নেতাদের অনেকে, যা একেবারেই পছন্দ হয়নি প্রিয়ঙ্কার। তাই জানিয়ে দেন, ‘‘যাঁরা দলটাকে খুন করেছেন, তাঁরা তো এখানেই বসে রয়েছেন।’’ সেই কারণেই প্রিয়ঙ্কার নামে জোর দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

এ ব্যাপারে মতামত জানতে চাইলে শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল বলেন, ‘‘খুব শীঘ্র প্রিয়ঙ্কার নাম উঠে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। আমার মতে, ওঁকে আনা হলে ভালই হবে। রাহুলজি বলেছিলেন গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে আনার কথা। হতে পারে সেই জন্যই প্রকাশ্যে প্রিয়ঙ্কার নাম সুপারিশে ইতস্তত করছেন অনেকে।’’

আরও পড়ুন: জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান ১০ মিনিট! জ্বালানি শেষের মুখে জরুরি অবতরণ বিমানের, রক্ষা ১৫৩ জন যাত্রীর​

তবে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির পরবর্তী বৈঠক রাহুল গাঁধী ইস্তফা গৃহীত হলে, সেখানে পরবর্তী কংগ্রেস প্রধান নিয়ে আলোচনায় প্রিয়ঙ্কার নাম সুপারিশ করা হতে পারে বলে জল্পনা দলের অন্দরে। রাহুল গাঁধীর বিকল্প হিসাবে ইতিমধ্যেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং সচিন পাইলটকে নমিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কিন্তু অল্প বয়স এবং জনপ্রিয়তা, এই দুই দিক দেখলে, দৌড়ে এগিয়ে প্রিয়ঙ্কা। সেই সঙ্গে ইন্দিরা গাঁধীর নাতনিকে নিয়ে আবেগও রয়েছে সাধারণ মানুষের। সব দিক বিচার করে তাই প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে আশাবাদী অনেকে। ভক্তচরণ দাসের মতে, ‘‘কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাজি। দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন, তাই ওঁকে ঘিরে আশা তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। আমার মতে রাহুল গাঁধীর ইস্তফা দেওয়া উচিত হয়নি। কারণ ওঁর বিকল্প নেই আমাদের কাছে। রাজনীতির ময়দান থেকে গাঁধীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখাই আসল লক্ষ্য বিজেপির। কিন্তু মোদী ব্র্যান্ডকে উৎখাত করতে গাঁধী ব্র্যান্ডকেই দরকার।’’ তবে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব বা প্রিয়ঙ্কা নিজে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Priyanka Gandhi Rahul Gandhi Congress BJP Narendra Modi CWC Lok Sabha Election 2019 Uttar Pradesh Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy